• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

শেখ হাসিনা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে খুলনায়   

প্রকাশিত: ১৪ জুলাই ২০২০  

খুলনায় একটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য খুলনা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হবে। এছাড়া ৭ মার্চকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাবটি আরও সংশোধন করে উপস্থাপনের জন্য বলা হয়েছে। প্রস্তাবে ৭ মার্চ জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হলেও এদিন সরকারী ছুটি থাকবে না।

গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মন্ত্রিসভা ও রিপোর্ট অনুবিভাগ) মোঃ আব্দুল বারিক বলেন, সোমবার বেলা ১১টায় মন্ত্রিসভা বৈঠক শুরু হয়, এটি ভার্চুয়ালি হয়েছে। দেশে এই প্রথম এভাবে মন্ত্রিসভা বৈঠক হলো।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা, গবেষণা, সেবার মানোন্নয়ন এবং সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারণে সরকার যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী বিভাগীয় শহরে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে মর্মে সরকারের লক্ষ্য ও পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। সরকারের চলমান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে খুলনা জেলায় শেখ হাসিনা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন।

তিনি বলেন, চিকিৎসা শিক্ষায় উচ্চশিক্ষিত বিশেষজ্ঞ ও গবেষক তৈরি করার লক্ষ্যে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের চিকিৎসা শিক্ষা, গবেষণা এবং স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় মেডিক্যাল কলেজগুলোর শিক্ষার মান সংরক্ষণ ও উন্নয়নই প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মুখ্য উদ্দেশ্য।

প্রস্তবিত খসড়া আইনটি রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও সিলেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রণীত আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রণয়ন করা হয়েছে। আইনে মোট ৫৫টি ধারা রয়েছে। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণে বিধিমালা, প্রবিধানমালা ও সংবিধি প্রণয়নের বিধান রাখা হয়েছে।

খসড়া আইনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আইনের ৪ থেকে ৬ ধারায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, এখতিয়ার এবং ক্ষমতার বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে। ৯ ধারা ও ৪৩ ধারায় যথাক্রমে পরিদর্শন ও আর্থিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ভূমিকা উল্লেখ রয়েছে।

তিনি বলেন, ১০ ধারায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী এবং ১২ থেকে ১৮ ধারায় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও কর্মচারীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া, ক্ষমতা ও দায়িত্ব বর্ণনা করা হয়েছে। ‘১৯ ধারায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ এবং ২০ থেকে ৩৪ ধারায় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল অনুষদ বিভাগ প্রয়োজনীয় কমিটি ও শৃঙ্খলা বোর্ড গঠন এবং এদের ক্ষমতা ও দায়িত্ব বর্ণনা করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ২০ ধারায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে রাষ্ট্রপতি এবং স্পীকারের মনোনীত প্রতিনিধি সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন অংশীজন ও পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ সিন্ডিকেট গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। সিন্ডিকেটে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিদের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, খুলনা বিভাগের আওতাধীন সব সরকারী ও বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ, নার্সিং কলেজ ও ইনস্টিটিউট এবং চিকিৎসা শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মেডিক্যাল প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছে।

এই আইনের মাধ্যমে চিকিৎসা শাস্ত্রে উচ্চশিক্ষা, গবেষণা, সেবার মান এবং সুযোগ-সুবিধার সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন ঘটবে। প্রস্তাবিত মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে খুলনা বিভাগে উন্নত চিকিৎসা সেবা সম্প্রসারিত হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব (মন্ত্রিসভা অধিশাখা) মোঃ রাহাত আনোয়ার বলেন, ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়েছেন, এতে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস যুক্ত ছিলেন। সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছাড়াও সাতজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং সচিব যুক্ত ছিলেন।

সচিবালয় প্রান্তে কৃষিমন্ত্রী মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, রেলপথমন্ত্রী মোঃ নূরুল ইসলাম সুজন ও সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ভিডিও কনফারেন্সের মধ্যমে যুক্ত ছিলেন। এসব মন্ত্রণালয়ের সচিবরাও উপস্থিত ছিলেন বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানা গেছে।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –