• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

একসঙ্গে এত মরদেহ দেখেনি পঞ্জগড়ের মানুষ 

প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২  

একসঙ্গে এত মরদেহ দেখেনি পঞ্জগড়ের মানুষ                          
‘চারপাশে শুধু কান্নার আওয়াজ। পুরো গ্রামজুড়ে কান্নার রোল পড়ে গেছে। মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি, বয়স ৭৩ বছর পার হয়েছে। জলে ডুবে একসঙ্গে এত মানুষের মৃত্যু কখনো দেখিনি। আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা এটি। ছোট বাচ্চা, নারী-পুরুষ অনেকে মারা গেছে।’ 

পঞ্জগড়ে করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় নিহতদের লাশ দেখতে এসে এসব কথা বলেন স্থানীয় বৃদ্ধ উন্মানাত বর্মণ।

নৌকাডুবিতে নিহত অনেকের লাশ রাখা হয়েছে বামনহাট ইউনিয়ন পরিষদে। সত্তোরোর্ধ উম্মানাত বর্মণের বাড়ি ওই ইউনিয়নে। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নৌকাডুবিতে মৃতদের মরদেহ দেখতে আসেন তিনি। এখানে এসে একসঙ্গে অনেক লাশ দেখে আবেগ-আপ্লুত হয়ে পড়েন এ বৃদ্ধ।

তিনি বলেন, একই পরিবারের চারজন, কোনো পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিসহ অনেক শিশু মারা গেছে। এগুলো আসলে মেনে নেওয়ার মতো নয়। আমার ৭৩ বছর বয়সে একসঙ্গে এত মরদেহ কখনো দেখিনি। এখন সৃষ্টিকর্তার কাছে ধৈর্য কামনা ছাড়া কিছু করার নেই। 

আরেক বৃদ্ধ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আলতাফুর রহমান বলেন, এত লাশ একসঙ্গে কখনো দেখিনি। আমাদের গ্রামে এর আগে এমন দিন কখনো আসেনি। আর যাতে এমন দিন কখনো না আসে। পুরো উপজেলাজুড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে মানুষ। চারদিকে শুধু হাহাকার। আল্লাহ আমাদের সহায় হোক। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রোববার দুপুরে মহালয়া দেখতে নৌকায় করে আউলিয়া ঘাট থেকে বদশ্বেরী ঘাটে যাচ্ছিলেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। নৌকাটি ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করে। এতে ১০০ জনেরও অধিক যাত্রী ছিল। যাত্রার শুরুতেই নৌকাটি দুলতে থাকে। দুলতে দুলতে নদীর মাঝে গিয়ে নৌকাটি ডুবে যায়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। আরও অনেকে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

নৌকাডুবির ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান ও পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপঙ্কর রায় বলেন, এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কয়েকজন বাদে বাকি সবার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গতকাল নিখোঁজ ছিল ৬৫ জন। আজ এখন পর্যন্ত (বিকেল ৪টা) ১৬ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। বাকিদের উদ্ধারে কাজ চলছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন নিয়ে তিনি বলেন, সে বিষয়ে কাজ চলছে। আগামীকাল প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। 

পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, এখনো উদ্ধার অভিযান চলমান রয়েছে। মৃতদের সৎকারে এবং আহতদের চিকিৎসায় সহায়তা দিচ্ছে জেলা প্রশাসন।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –