• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

সেহরি-ইফতারে খেতে পারেন যেসব খাবার

প্রকাশিত: ২৮ মার্চ ২০২৩  

চলছে পবিত্র রমজান মাস। মাসটি পরিশুদ্ধি কেবল ধর্মপালনেই নয়, বরং জীবনাচরণেও। আর তাই আত্নশুদ্ধির এ মাসটিতে সেহরি ও ইফতারে বেশকিছু খাবার এড়িয়ে চলা উত্তম। আবার কিছু খাবার খাদ্য তালিকায় রাখলে প্রায় ১৫ ঘণ্টা ধরে রোজা রাখার সময়টা কিছুটা হলেও সহজ হবে বলে আশা করা যায়।

রমজান মাসের সেহরি ও ইফতারে আপনি যেসব খাবার খেতে পারেন-

> খেজুর: ইফতারে অবশ্যই খেজুর বা খোরমা খাবেন। এতে আছে শর্করা, চিনি, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, কপার, সালফার, ম্যাঙ্গানিজ, সিলিকন ও ক্লোরিন ফাইবার। যা সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারে খুবই দরকারি। সেহরিতেও একটি হলেও খেজুর খেতে পারেন। পাহাড়ে কিংবা ভ্রমণে দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করতে এটি আবশ্যকীয় উপাদান হিসেবেই জানেন সবাই। প্রতিটি খেজুরে থাকে ৬৬ ক্যালরি শক্তি। সাহরিতে খাবারের পর দুটি খেঁজুর খেয়ে নিলে সারাদিনে অনেকটা সাপোর্ট পেয়ে যাবেন।

> দই: ইফতারিতে দই বা দই চিড়া খেতে পারেন। এতে সারাদিন অভুক্ত পেটে ঠাণ্ডা কিছু হজমক্রিয়া সচল রাখবে। এছাড়া অ্যাসিডিটি নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করবে। প্রতি ১০০ গ্রাম দইয়ে শক্তি থাকে ২৫৭ ক্যালরি। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে জুস কিংবা দুধের সঙ্গে ইসুবগুল খেতে পারেন।

> পর্যাপ্ত পানি বা ডাব: ইফতারের সময় একসঙ্গে অনেক বেশি পানি পান করেন অনেকে। এতে খাবার ও পানি মিলে ভেতরে এক ধরনের অস্বস্তি তৈরি করে। এতে ইফতারের পর ইবাদতে, কাজে ক্লান্তি আসে। এটা না করে ইফতারের পর থেকে সাহরীর আগ পর্যন্ত একটু পর পর ৮-১০ গ্লাস পানি খাওয়া উচিত।

> গ্লুকোজ বা স্যালাইন: বেশি দুর্বল লাগলে যাদের উচ্চ রক্তচাপ কিংবা বহুমূত্রসহ, নানাবিধ জটিল রোগের সমস্যা নেই, তারা এক গ্লাস গ্লুকোজ বা স্যালাইন খেয়ে নিতে পারেন ইফতারের পর।

> পর্যাপ্ত এবং সুষম খাবার: খাদ্য তালিকায় সব গ্রুপের খাবার থাকতে হবে। আমিষ, শর্করা, ফ্যাট, ভিটামিন, দুধ, দই, মিনারেলস, ফাইবার ইত্যাদি। অর্থাৎ সুষম খাবার খেতে হবে।

> ফাইবার-সমৃদ্ধ খাবার: পপকর্ন, কাঠবাদাম, ওটস, মসুরডাল, ছোলা, মটরশুঁটি, অ্যাভোক্যাডো, লাল আটা প্রভৃতি খাবারে ক্যালরি খুব কম থাকে এবং হজম হয় ধীরে ধীরে। তাই অনেক সময় পর ক্ষুধা লাগে। রক্তে চিনির পরিমাণও তাড়াতাড়ি বাড়ে না। সেহরিতে অনেকেই সারাদিন খাওয়া হবে না ভেবে অনেক বেশি খেয়ে ফেলেন। সেক্ষেত্রে বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী ক্যালরি গ্রহণের মাত্রা অতিক্রম করে ফেলেন। এতে রোজা শেষে দেখা যায়, পবিত্র মাহে রমজানের সময়টায় ওজন বাড়িয়ে ফেলছেন অনেকেই। সারাদিন খেতে পারবেন না বলে ইচ্ছামতো উদরপূর্তি করে খাবেন না। পেটের এক-চতুর্থাংশ খালি রাখবেন।

> কাঁচা ছোলা: ইফতারে ভাজা-পোড়া না রেখে রাখতে পারেন কাঁচা ছোলা। কারণ ২৫-৩০ গ্রাম ছোলায় প্রায় ১০০ ক্যালরি থাকে, কিন্তু ফ্যাট থাকে মাত্র পাঁচ গ্রাম, যা কি না রক্তের চর্বি কমায়। তাই সামান্য পরিমাণ খেয়ে নিলেই অনেক শক্তি পাওয়া যায়। আবার কাঁচা ছোলা পেঁয়াজ, কাচামরিচ, শসা, টমেটো আর অল্প সরষের তেল দিয়েও মাখিয়ে নিতে পারেন। দারুণ সুস্বাদু এই খাবারটি আপনাকে মুহূর্তেই সতেজ করে তুলবে।

> ফল: ইফতারে সহজলভ্যতা অনুযায়ী তিন থেকে চার রকমের ফল, যেমন পেয়ারা, আপেল, তরমুজ থাকা উচিত। প্রতি ১০০ গ্রাম হিসেবে এদের রয়েছে যথাক্রমে ৬৮, ৪৫ ও ৩০ ক্যালরি। শাকসবজির ক্ষেত্রেও রান্না ও সেদ্ধ মিলিয়ে খাওয়া উচিত।

এ ছাড়া শাকসবজি আর ফল মিলিয়ে পছন্দের কোনো সালাদ তৈরি করে নিতে পারেন স্বাদ অনুযায়ী। রঙিন ফলগুলো ইফতার আয়োজনে ফলের প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি বিভিন্ন রং মানুষের ক্ষুধা, আকষর্ণ ও মনকেও ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে। তবে ফল এভাবে খাওয়ার সুযোগ না থাকলে জুস করেও খেতে পারেন। বিশেষ করে, কলা, বাঙ্গি, পেঁপে, কিংবা আনারস।

> আমিষ: খাবারে যাতে প্রোটিনের ঘাটতি না হয়, সেজন্য ইফতার বা সাহরিতে চর্বিযুক্ত মাছ, চামড়াসহ মুরগির তরকারিও খেতে পারেন। যাদের গরুর মাংসে বিধিনিষেধ নেই তারা চর্বিযুক্ত গরুর মাংস খেতে পারেন। তবে প্রতিবেলা মাংস না খেয়ে এক বেলা মাছ খেতে চেষ্টা করুন।

ধর্ম পালনের পাশাপাশি সেহরি ও ইফতারের খাওয়া দাওয়ায় একটু সচেতন হলেই মাহে রমজানের পুরো মাসটাই সহজ ও সুন্দর হবে বলে আশা করা যায়।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –