• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্ত‌ক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক

সীমান্তে জনবল বাড়ানো হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২  

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানিয়েছেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতির কারণে সীমান্তে বিজিবি সদস্য বাড়ানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়ায় বিজিবির ৯৮তম রিক্রুট ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। একই কথা জানান বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ।  

মিয়ানমারের বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ও অত্যাধুনিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

সরকারের সাহসী পদক্ষেপে 'বর্ডার রিং রোড প্রকল্পে'র কাজ অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে এগিয়ে চলছে।

তিনি বলেন, বিজিবির সাংগঠনিক কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন আনায় বিজিবি আজ একটি ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে জল, স্থল ও আকাশপথে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হয়েছে। এ ছাড়া স্মার্ট বর্ডার ম্যানেজমেন্টের অংশ হিসেবে সীমান্তে নতুন বিওপি, বিএসপি নির্মাণসহ অত্যাধুনিক সার্ভেইলেন্স ইকুইপমেন্ট স্থাপন, আধুনিক অ্যান্টি ট্যাংক গাইডেড উইপন, এটিভি ও অত্যাধুনিক এপিসি, ভেহিকল স্ক্যানার ও দ্রুতগামী জলযান সংযোজন করা হয়েছে। বিজিবির এই অগ্রযাত্রায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সব সময় আপনাদের পাশে আছে এবং থাকবে।  

নবীন সৈনিকদের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শৃঙ্খলা হচ্ছে সৈনিকের মূল পরিচিতি। আদেশ ও কর্তব্য পালনে যে কখনো পিছপা হয় না সে-ই প্রকৃত সৈনিক। সততা, বুদ্ধিমত্তা, নির্ভরযোগ্যতা, আনুগত্য, তেজ ও উদ্দীপনা একটি বাহিনীর শৃঙ্খলা ও পেশাগত দক্ষতার মাপকাঠি। নবীন সৈনিকরা এসব গুণাবলির প্রতিফলন ঘটিয়ে বাহিনীর ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।  

তিনি বিজিবির চারটি মূলনীতি- ‘মনোবল, ভ্রাতৃত্ববোধ, শৃঙ্খলা ও দক্ষতা’য় উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত হয়ে বিজিবির ওপর অর্পিত যেকোনো দায়িত্ব সুশৃঙ্খল ও সুচারুরূপে পালন করে দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষার সুমহান দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।  
   
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ১৯৭৪ সালের ৫ ডিসেম্বর তৎকালীন বিডিআরের তৃতীয় ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রদত্ত চোরাচালানবিরোধী ও প্রেষণামূলক বক্তব্যের কথা স্মরণ করে চোরাচালান রোধে নবীন সৈনিকদেরকে পেশাগত দক্ষতা অর্জনসহ ব্যক্তিগতভাবে সুদৃঢ়, সুশৃঙ্খল, নির্ভীক ও নির্লোভ চরিত্রের অধিকারী হয়ে নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে সবর্দা সচেষ্ট থাকার আহ্বান জানান।  

তিনি বিজিবির নবীন সৈনিকদের প্রদর্শিত তেজোদীপ্ত কুচকাওয়াজের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন এবং নবীন সৈনিকদের নতুন জীবনে পদার্পণের শুভলগ্নে তাদের স্বাগত জানান।
   
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, কিংবদন্তি মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া এই বাহিনী তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী দিকনির্দেশনায় আজ একটি সুসংগঠিত, চৌকস, সুশৃঙ্খল ও পেশাদার বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিজিবিকে একটি অত্যাধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

'মাদক পাচারকারীদের কোনো জাত নেই, ধর্ম নেই, তারা মানুষ নামের নরপশু। তারা এ দেশের সম্পদকে বিদেশে চালান দেয় সামান্য অর্থের লোভে। ' জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মূল্যবান এ বক্তব্যের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সীমান্তে চোরাচালান রোধে আপনাদের অর্জন করতে হবে পেশাগত দক্ষতা এবং ব্যক্তিগতভাবে হতে হবে সুশৃঙ্খল, যা বিভিন্ন প্রতিকূলতার মাঝেও থাকতে হবে সুদৃঢ়, নির্লোভ ও নির্ভীক। লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে থেকে নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে সর্বদা সচেষ্ট থাকবে।

তিনি বলেন, প্রিয় নারী সৈনিকরা, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার মহান দায়িত্ব পালনে পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও সমান ভূমিকা রাখতে হবে। মনে রাখবেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে মহীয়সী নারীদের অংশগ্রহণ, অবদান ও আত্মত্যাগ অবিস্মরণীয়। আজ নারীরা বিভিন্ন অঙ্গনে যথাযথ যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতার স্বাক্ষর রাখছেন। আজ আপনারা দেশমাতৃকার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃপ্ত শপথ নিয়ে সৈনিকজীবনে প্রবেশ করতে যাচ্ছেন। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনারা বিজিবির সার্বিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় আরো গতিশীল ভূমিকা রাখাসহ বাহিনীর সুনাম-সুখ্যাতি বৃদ্ধিতে সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে নিরলসভাবে কাজ করবেন।

আসাদুজ্জামান খান কামাল আরো বলেন, ৯৮তম রিক্রুট ব্যাচের সদস্যদের সফলভাবে তাদের প্রশিক্ষণ শেষ করার জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছি। বিশেষ করে সর্ববিষয়ে সেরা নবীন সৈনিক হিসেবে রিক্রুট বক্ষ নম্বর ৩২০ মো. আনোয়ার হোসেন প্রথম স্থান অর্জন করায় তাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। এ ছাড়া চুয়াডাঙ্গা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পরিচালিত রিক্রুট প্রশিক্ষণে সর্ববিষয়ে সেরা নবীন সৈনিক রিক্রুট বক্ষ নম্বর ৮৫৫ মো. মাসুদ রানা প্রথম স্থান অর্জন করায় তাকেও আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।  

৯৮তম রিক্রুট ব্যাচের মৌলিক প্রশিক্ষণ গত ১৭ এপ্রিল ২০২২ তারিখে বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজ (বিজিটিসিঅ্যান্ডসি) ও চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি)-তে শুরু হয়। উভয় প্রশিক্ষণ ভেন্যুতে মোট ৮৪৯ জন রিক্রুটের মধ্যে ৮০৩ জন পুরুষ এবং ৪৬ জন নারী রিক্রুট মৌলিক প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছে। দীর্ঘ ২৪ সপ্তাহের অত্যন্ত কঠোর ও কষ্টসাধ্য এ প্রশিক্ষণ সফলভাবে শেষ করে আজ আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণ ও সমাপনী কুচকাওয়াজের মাধ্যমে তাদের সৈনিকজীবনের শুভ সূচনা হলো।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –