• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস, আজ ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন। বন্যায় দুবাই এবং ওমানে বাংলাদেশীসহ ২১ জনের মৃত্যু। আন্তর্জাতিক বাজারে আবারও বাড়ল জ্বালানি তেল ও স্বর্ণের দাম। ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

পালানোর জন্য মরিয়া আফগান দোভাষীরা

প্রকাশিত: ২ আগস্ট ২০২১  

আমেরিকান সৈন্যদের সাহায্য করার জন্য তালেবানের হাতে জীবন বিপন্ন হতে পারে এমন বেশ কিছু আফগান দোভাষী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ রকম ২২১ জনের একটি দল কাবুল থেকে একটি ভাড়া করা বিমানে শুক্রবার ভোরে ওয়াশিংটনের ডালেস বিমানবন্দরে এসে নামে। সাথে সাথে তাদের সেখান থেকে বাসে করে নিয়ে যাওয়া হয় ১৩০ মাইল দূরে ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে ফোর্ট লি সেনা ঘাঁটিতে। বাসস্থানের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত সেখানেই একটি হোটেলে আপাতত কড়া নিরাপত্তার ভেতরে থাকবে তারা।

আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর দোভাষী হিসাবে বা অন্যান্য সহকারীর ভূমিকায় যারা কাজ করতো, তাদের এবং তাদের পরিবারের সদস্য মিলিয়ে ২৫০০ জনকে জরুরী ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রে উড়িয়ে এনে আশ্রয় দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুক্রবার ওয়াশিংটনে এসে নামা ওই ২২১ জন তাদেরই প্রথম দল। এই দলে রয়েছে ৫৭ টি শিশু এবং ১৫টি অল্প বয়সী বাচ্চা।

জানা গেছে, বাকিদের আনতে প্রতি তিন-চার দিন অন্তর অন্তর কাবুল থেকে একটি করে বিমান আসবে। এবং এই আড়াই হাজার জনের অস্থায়ী জায়গা হবে ফোর্ট লির সেনা ঘাঁটি। নির্ভরযোগ্য সরকারি সূত্র উদ্ধৃত করে মার্কিন দৈনিক নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, বিপন্ন এমন আরো চার হাজার আফগানকে আশ্রয় দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে, কিন্তু তাদেরকে আপাতত অন্য কয়েকটি দেশে রাখা হতে পারে।

জানা গেছে কাতার এবং কুয়েতে মার্কিন সেনা ঘাঁটিতে কয়েক হাজার আফগানকে কয়েক মাসের জন্য অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দেওয়া নিয়ে ওই দুই দেশের সরকারের সাথে দেন-দরবার করা হচ্ছে। জানা গেছে আমেরিকান কূটনীতিকরা কাজাখস্তান এবং কসোভোর সাথেও কথা বলছেন। তবে তৃতীয় দেশে আশ্রয়ের বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়।

কাবুলে আমেরিকান দূতাবাসের কর্মকর্তারা কদিন আগেই বলছেন দোভাষী বা মার্কিন সেনাবাহিনীর জন্য অন্যান্য নানা সময় কাজ করেছেন এমন ২০ হাজারের বেশি আফগান আমেরিকায় আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু তাদের অর্ধেকেরই ভিসার কাগজপত্র এখনও ধরাই হয়নি। কতজনকে শেষ পর্যন্ত ভিসা দেওয়া হবে, কতদিনে দেওয়া হবে তা অনিশ্চিত। 

সেই সাথে, পশ্চিমা বিভিন্ন এনজিও এবং মিডিয়ার প্রতিনিধি হিসাবে যারা কাজ করছেন তারাও দেশ ছাড়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। ওয়াশিংটন পোস্ট এবং নিউইয়র্ক টাইমস সহ বেশ কয়েকটি শীর্ষ সারির আমেরিকান মিডিয়ার পক্ষ থেকে সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে লেখা এক চিঠিতে আফগান ওই সাংবাদিকদের যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

তালেবান যেভাবে নতুন নতুন জায়গা তাদের নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছে, তাতে ভয়ে সিটকে রয়েছেন তারা। বিভিন্ন মিডিয়ার খবরে বলা হচ্ছে, তাদের অনেকে পরিবার নিয়ে লুকিয়ে থাকছেন। 

যুক্তরাষ্ট্র সরকার বলছে, জীবন বাজি রেখে যারা তাদের জন্য কাজ করেছে তাদের প্রতি আমেরিকার দায়িত্ব রয়েছে। মার্কিন বাহিনীর দোভাষী এবং অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে এসে আশ্রয় ও পুনর্বাসনের জন্য বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের সেনেট ১০০ কোটি ডলারের একটি জরুরি তহবিল অনুমোদন করেছে। অতিরিক্ত ৮ হাজার আফগান যেন চলে আসতে পারে তার জন্য ভিসার শর্ত শিথিল করার কথা বলা হয়েছে বিলে।

কিন্তু তারপরও ২০ হাজার আবেদনকারীর কতজনকে বিবেচনা করা হবে তা নিয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলা হচ্ছে না। কারণ তাদের সবার আবেদন গৃহীত হলে, পরিবারের সদস্য সহ এক লাখের মত আফগানকে হয়তো যুক্তরাষ্ট্রে জায়গা দিতে হবে।

তাছাড়া যে ২০ হাজারের মত আফগান আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন তাদের অনেকে বেশ আগেই হয় কাজ ছেড়ে দিয়েছিলেন, না হয় বিভিন্ন অভিযোগে চাকরি হারিয়েছেন। তাদের নিয়ে মার্কিন প্রশাসনের মধ্যে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। 

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –