• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

রাজস্ব আয় বাড়াতে রংপুরে শিল্পকারখানা স্থাপন জরুরি: রসিক মেয়র     

প্রকাশিত: ২ সেপ্টেম্বর ২০২০  

রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) এলাকায় রাজস্ব আয় বাড়াতে ছোট-বড়-মাঝারি শিল্প কলকারখানা স্থাপনে সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা চান মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।

তিনি বলেন, বিভিন্ন ধরনের শিল্প কলকারখানা না থাকায় দেশের অন্যান্য সিটির সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যাবে, রংপুর সিটিতে রাজস্ব আদায় সবচেয়ে কম। এখানে মাত্র শতকরা ৩৭ ভাগ লোক হোল্ডিং ট্যাক্স দিচ্ছেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে রসিক মেয়র এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি নগরীর বিভিন্ন সমস্যা-সংকট-সম্ভাবনা ও তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।

মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার দায়িত্ব গ্রহণের ২ বছর ৮ মাস চলছে। এ সময়ের মধ্যে তিনি অসংখ্য ড্রেন, রাস্তাঘাট পাকা ও প্রশস্ত করেছেন। এখনো সড়ক পাকা ও প্রশস্তকরণের কাজ চলছে। পূর্ববর্তী মেয়রের আমলে রাস্তাঘাট ছিল ধুলাবালুতে ভরপুর। এখন তা নেই বললেই চলে। দখলমুক্ত হয়েছে কারমাইকেল কলেজ প্রবেশদ্বার সংলগ্ন লালবাগ গোল চত্বর, মেডিকেল মোড় ও সিটি বাজারের সামনের রাস্তাসহ বিভিন্ন রাস্তাঘাট।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য সেবায় দেশের এক নম্বরে আছে রংপুর সিটি। তবে যানজটের তীব্রতা কমাতে বিভিন্ন ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলেও তাতে তেমন একটা সফল হতে পারেননি।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রংপুর সিটিতে ১০ লাখ লোকের বসবাস। মেয়র হিসেবে তাদের নাগরিক অধিকার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, বিদু্যৎ সুবিধা, পর্যাপ্ত রাস্তাঘাটের সুযোগ-সুবিধা দিতে কাজ করছি। ইতোমধ্যে পুরানো ওয়ার্ডে শতকরা ৭৫ ভাগ রাস্তাঘাট ও ড্রেনের কাজ শেষ হয়েছে। এসব কাজ প্রধানমন্ত্রীর অর্থায়নে ২১০ কোটি, জাইকার অর্থায়নে ১৬০ কোটি এবং ভারতের ২৫ কোটি টাকা অর্থায়নে হচ্ছে। নতুন ওয়ার্ডে ৭০০ লিংক রোড করা বাকি আছে। সেগুলোর কাজ চলছে।

এসব কাজ করতে গিয়ে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে জানিয়ে রংপুরের মেয়র বলেন, বিশেষ করে রাস্তাঘাট দখলমুক্ত করতে গিয়ে এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। এর পাশাপাশি জনবল ও ম্যাজিস্ট্রেট সংকটের কারণে কাজের ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতায় পড়তে হচ্ছে বলেও তিনি জানান। এসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা করা হলেও সেগুলো নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে কখনো কখনো।

আধুনিক নগরায়ণ ও নাগরিক সুবিধা বাড়াতে নানা পরিকল্পনার কথা জানিয়ে মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, যানজট কমাতে নগরীর মডার্ন মোড় থেকে পাগলাপীর পর্যন্ত এবং দমদমা থেকে মাহিগঞ্জ পূর্ব রোড দিয়ে আর কে রোড পর্যন্ত দুটি বাইপাস সড়ক করা হবে। লালবাগ ও সাতমাথায় দুটি ওভারব্রিজ, ও শ্যামাসুন্দরী খালের উপর ৮ দশমিক ২ কিলোমিটার ফ্লাইওভার রাস্তা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

মেয়র বলেন, কুকরুল ও চানকুঠি হেলিপ্যাডে দুটি খেলার মাঠ করার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ৬০ ভাগ মাটি ভরাটের কাজ হয়েছে। নগরীর প্রাণকেন্দ্র জাহাজ কোম্পানি মোড় ও সুপার মার্কেটের সামনে দুটি অটো ট্রাফিক সিগন্যাল বসানো হবে। তিনি বলেন, শ্যামাসুন্দরী খালটি নগরবাসীর অভিশাপ। এই অভিশাপ থেকে নগরবাসীকে মুক্ত করতে শ্যামাসুন্দরী খাল সংস্কারে ৩ থেকে ৪ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২৮ জুন ৩৩টি ওয়ার্ড নিয়ে রংপুর সিটি করপোরেশন গঠিত হয়। এর আয়তন ২০৫ বর্গকিলোমিটার। ৩৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে নতুন ১৮টি এখনো গ্রামীণ জনপদ হিসেবে পরিচিত। বিলুপ্ত পৌরসভায় ছিল ১৫টি ওয়ার্ড। পুরানো ১৫টি ওয়ার্ডকে ঘিরে অধিকাংশ অফিস আদালত, ব্যাংক, বিমা, স্কুল-কলেজ, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, খেলার মাঠসহ বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। রয়েছে পাকা রাস্তাঘাট ও ড্রেন। পুরানো ওয়ার্ডবাসী মোটামুটিভাবে নাগরিক সুবিধা ভোগ করলেও নতুনরা সে সুবিধাবঞ্চিত। ২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রম্নয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র পদে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। এর আগে প্রথম মেয়াদে রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –