• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

জরিমানার পরিবর্তে আম কিনে বিলিয়ে দিলেন ইউএনও

প্রকাশিত: ১৪ জুলাই ২০২১  

সরকার ঘোষিত লকডাউনে বাজার মনিটরিং ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে এক আম বিক্রেতাকে জরিমানার পরিবর্তে তার দোকানের সব আম কিনে নেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহাগ চন্দ্র সাহা। পরবর্তীতে এসব আম এলাকার গরিব, অসহায় ও দুস্থ মানুষের মধ্যে বিতরণ করেন তিনি। 

আমের দোকানদারের নাম আলাল উদ্দিন। তিনি উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের বোয়ালমারী গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে। পেশায় একজন ক্ষুদ্র মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী। ফলের দোকান করে কোনোরকম সংসার চলে তার।

জানা যায়, মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যায় বাজার মনিটরিংয়ে বের হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ চন্দ্র সাহা। এ সময় আজিজনগর বাজারে সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে অনেক ব্যবসায়ীকে দোকান খোলা রাখতে দেখে অভিযান পরিচালনা করেন তিনি। হাইওয়ে সড়কের পাশে আলাল উদ্দিন নামে ওই আমের দোকানদারকে অন্ধকারে আম নিয়ে বসে থাকতে দেখেন ইউএনও সোহাগ চন্দ্র সাহা। এ সময় তিনি আলাল উদ্দিনের কাছে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে দোকান খোলা রাখার কারণ জানতে চান। আলাল উদ্দিন জানান, লকডাউনের কারণে আম বিক্রি করতে পারেননি। তাই তার অনেক আম এরই মধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে। উপায় না দেখে বিক্রির আশায় বস আছেন তিনি। পরে ইউএনও সোহাগ চন্দ্র সাহা আলাল উদ্দিনের দোকানে থাকা ৩৪ কেজি আম কিনে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বসবাস করার গরিব মানুষের মাঝে বিতরণ করেন।

এ বিষয়ে আলাল উদ্দিন বলেন, আমি গরিব মানুষ। রাস্তার পাশে ছোট ভাসমান দোকানে বিভিন্ন মৌসুমি ফল বিক্রি করে সংসার চালাই। লকডাউন থাকায় বাজারে তেমন লোকজন আসে না। তাই আমও বিক্রি করতে পারিনি। সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্রেতার অপেক্ষায় ছিলাম। কারণ আম বিক্রির পর মহাজনকে টাকা দেওয়ার পর যে লাভ থাকবে তাই দিয়ে সংসারের খরচ করতে হবে। এ সময় ইউএনও স্যার এসে দোকান খোলা রাখার কারণ জানতে চাইলে আমি তাকে পুরো বিষয়টি বলি। পরে তিনি আমাকে জরিমানা না করে দোকানের সব আম কিনে নেন।

তেঁতুলিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, আমি সন্ধ্যা ৭টার দিকে আজিজনগর বাজারে মনিটরিংয়ে গেলে হঠাৎ আলাল উদ্দিন নামে ওই আমের দোকানদারকে অন্ধকারের মধ্যে আম নিয়ে বসে থাকতে দেখি। পরে তার দোকানে গিয়ে সন্ধ্যায় দোকান খোলার রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আম পচে যাওয়ার কথা জানান। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাকে জরিমানা করিনি। তার কাছ থেকে আম কিনে নিয়ে গরিব মানুষদের মাঝে বিতরণের ব্যবস্থা করি।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –