• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

প্রধানমন্ত্রীর উপহারে বদলে গেছে পঞ্চগড়ের ভূমিহীনদের জীবনমান     

প্রকাশিত: ৪ আগস্ট ২০২১  

দেশের একজন মানুষও ভূমিহীন ও গৃহহীন হয়ে থাকবেনা, প্রত্যেক ভূমিহীন,গৃহহীন পরিবার পাবে পাকা ঘর। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর এমন ঘোষণা বাস্তবায়নে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসন।

কেবল শুধু গৃহহীন-ভুমিহীনই নয়,সরকারের এসকল সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্টি ও বিলুপ্ত সিটমহল বাসিরাও। এক সময়ের সুবিধা বঞ্চিত,অবহেলিত,এই অসহায় মানুষগুলোর ছিলোনা নিজস্ব কোন স্থায়ী ঠিকানা। খাস জমি কিংবা অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়ে ভাঙ্গা ঘরে থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে দিনাতিপাত করতে হতো তাদের। কিন্তু বর্তমান সরকারে বিশেষ উদ্দ্যোগ গ্রহনে বাসস্থানসহ নানা উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে এসব মানুষের জীবনমান।

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে পঞ্চগড় জেলার পাঁচ উপজেলায় ভ’মিহীন গৃহহীন. মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রীর বিষেশ উপহার আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় ২০২০-২১ অর্থ বছরে জেলায় মোট ২৪১৬টি পরিবারের জন্য প্রত্যেকটি ঘর ১লক্ষ ৭১ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মান করা হয়ছে। তবে এর মধ্যে বাদ পড়েনি ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী ও সাবেক সিটমহল বাসিসহ অসহায় ভিক্ষুকরাও। এক সময় এই অসহায় মানুষগুলোর ছিলোনা কোন মাথা গুজার ঠাই, পরিবার পরিজন নিয়ে অনেক কষ্টে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ আর ভাঙ্গা কুটিরে শীত,বৃস্টিকে সঙ্গি করে টানা-হেঁচরার মধ্যে জীবন যাপন করতে হতো তাদের। কষ্ট লালিত সে সকল সুবিধা বঞ্চিত মানুষের ভাগ্য উন্ন্য়নে বিষেশ ভুমিকা রাখছে সরকার। তাদের অসহায়ত্ত্ব জীবন থেকে পরিত্রান পেতে এক এর পর এক নেয়া হচ্ছে নানা উদ্দ্যেগ। শিশু সন্তান নিয়ে ভাঙ্গা ঘরে থাকা কষ্টের পরিবর্তনে দেয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বিষেশ উপহারের নতুন পাকা ঘর। 

নির্মানকৃত ২৪১৬ টি ঘরের মধ্যে বিলুপ্ত সিটমহল বাসিরা পেয়েছে প্রায় ১৩০টি,ক্ষুদ্র-নৃগোষ্টি পরিবার পেয়েছে প্রায় ১২০টি, অবশিষ্ঠ ঘর পেয়েছে ভূমিহীন,গৃহহীন অসহায় পরিবারগুলো। প্রধানমন্ত্রীর বিষেশ উপহারের ঘর এখন তাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে,। ছিন্নমূল আশ্রয়হীন কষ্ট সহ্য করা মানুষগুলোর স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রতিফলন ঘটে, এখন খুশি নিরাপদ টেকসই মজবুত পাকা স্থায়ী ঘর পেয়ে। যা আশাতীত ভাবে নতুন উদ্দিপনার সঞ্চার করছে ঘর পাওয়া দরিদ্র মানুষগুলোর।

ভূমিহীন,গৃহহীন,ক্ষুদ্র-নৃগোষ্টি আদিবাসি ও সিটমহল বাসিদের মানবতার জীবনমান থেকে মুক্তি পেয়ে এখন তারা অনেক সুখে,আনন্দে স্বাচ্ছন্দে পরিবার পরিজন নিয়ে জীবন যাবন করছে এমনটি জানায় উপকার ভোগিরা। 

বোদা উপজেলার ক্ষুদ্র-নৃগোষ্টি ঘর পাওয়া উপকার ভোগি লক্ষিরাম হাসদা (৫০) জানায়, আগে আমরা ছোট ভাঙ্গা ঘরে থেকে শিশু সন্তান নিয়ে শীত-বৃষ্টি মৌসুমে লড়াই করে অনেক কষ্টে জীবন যাপন করতাম,সরকার আমাদের নতুন ঘর দেয়ায় এখন আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে নিশ্চিন্তায় ঘুমাতে পারছি। আগের মত কষ্ট আর নেই।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার (বিলুপ্ত গাড়াতি সিটমহলের) বর্তমান রজমহলের বাসিন্দা আবু ইব্রাহীম(৭০) জানান, ৬৮ বছরের বন্দি জীবন থেকে মুক্তি পেয়ে এখন আমরা সরকারের সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করছি, সুবিধা বঞ্চিত অসহায় এই মানুষ গুলো প্রধানমন্ত্রীর দেয়া নতুন ঘর পেয়ে ঘরের কষ্ট দূর হয়েছে। শেষ বয়সে সরকারের দেয়া অনেক সহযোগিতা পেয়ে এখন আমরা অনেক সুখে আছি।

আটোয়ারী উপজেলার নির্বাহী অফিসার আবু তাহের মোঃ সামসুজ্জামান জানান, আটোয়ারীতে বসবাসরত ৭৮টি ক্ষুদ্র-নৃগোষ্টি পরিবাররে মধ্যে প্রায় ৭০টি পরিবারকে ঘর দেয়া হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর এখন তাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। এখন তারা খুশি নিরাপদ টেকসই মজবুত পাকা স্থায়ী ঘর পেয়ে।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার আরিফ হোসেন জানান, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের এসব ঘর প্রদানে সরজমিনে গিয়ে প্রকৃত ও প্রাপ্প ব্যক্তিদের তালিকা করে নির্ধারিত কমিটির মাধ্যমে যাচাই বাছাই এর পর মনোনীত করে ঘর দেয়া হয়েছে। আর যারা বাদ পরেছে পরবর্তিতে তাদের দেয়া হবে বলেও জানান তিনি। 

জেলা প্রশাসক মোঃ জহুরুল ইসলাম বলেন, ভূমিহীন,গৃহহীন, ক্ষুদ্র-নৃগোষ্টিসহ সাবেক সিটমহলের পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহারের ঘর স্ব-স্ব উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে ২৪১৬টি উপকার ভোগি পরিবারকে ঘরের চাবি আনুষ্ঠানিক ভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছারাও ভিক্ষুকদেরও পুণর্বাসনের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে। ইতি মধ্যে যারা ঘর পেয়েছেন তারা আনন্দে স্বাচ্ছন্দে পরিবার পরিজন নিয়ে জীবন যাবন করছেন, এছারাও করোনাকালে এসকল দরিদ্র মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার খাদ্য সামগ্রী দেয়া হচ্ছে। তাই তারা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তবে কোন ভূমিহীন,গৃহহীন পরিবার যেন প্রধানমন্ত্রীর উপহার থেকে বঞ্চিত না হয় সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। 

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –