• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় তেঁতুলিয়ায় চাষ হচ্ছে কোরিয়ান ‘পেরিলা’     

প্রকাশিত: ২৪ অক্টোবর ২০২১  

দক্ষিণ কোরিয়ান তেলবীজ ফসল পেরিলা থেকে সূর্যমূখী ও সরিষার মতো ভোজ্যতেল উৎপন্ন হয়। সেই পেরিলা এখন বাংলাদেশের তেঁতুলিয়ায় চাষ হচ্ছে। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের হারাদিঘী কাজী পাড়া গ্রামের প্রথম বারের মতো পরিক্ষামূলকভাবে ২ একর জমিতে পেরিলা চাষ করেছেন সৈয়দ রোকনুজ্জামান।

পেরিলার আদি নিবাস চীনে। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তৃতির কারণে বিশ্বে এটি কোরিয়ান পেরিলা নামে পরিচিত। দেশের এই পেরিলার ফসলের সাথে অধিকাংশ কৃষক এখনো তেমন অবগত না হলেও উৎপাদন গবেষণা সুফল মিলছে। ফসলটির পেরিলার বৈশিষ্ট্য হিসেবে রয়েছে উচ্চমাত্রা ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড (৫০-৬০%), অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড প্রায় ৯২%, ক্ষতিকর এসিড মুক্ত, জাতটি মিন্ট পরিবার ভুক্ত হওয়ায় তেলে সুগন্ধ রয়েছে। এটি বন্যামুক্ত যেকোনো ধরণের জমি বা মাটিতে আবাদ করা যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, তরতাজা পেরিলা গাছে ফুল এসেছে। প্রথমত সবুজ পেরিলা দেখতে মনে হয়েছিল সবুজের এক সমারোহ কিংবা কোন শাক-সবজির বাগান। দেখতে অনেকটা পান পাতার মতো এবং প্রতিটি পাতা সবুজ বর্ণের।

কৃষক সৈয়দ রোকনুজ্জামান জানান, কৃষি অফিস থেকেই আমাকে বীজ দেওয়া হয়। জমিটি পতিত থাকায় সিদ্ধান্ত নিলাম নতুন ফসল চাষ করে দেখি কি হয়। তেঁতুলিয়ায় এই প্রথম আমি পেরিলা চাষ করছি। ফলনও মোটামুটি ভালো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, পেরিলা ক্ষেতে মৌমাছির ব্যাপক আনাগোনা দেখা যায়। পেরিলা চাষের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে মধু চাষ করাও সম্ভব। ফলনে লাভ জনক হলে আগামীতে আরও অধিক জমিতে পেরিলা ও মধু চাষ করব।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, জুলাই থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত আউস আবাদের পর কৃষকের জমিগুলো পতিত পড়ে থাকে। এ সময়টাতে কেউ সরিষা আবাদ করে। যেহেতু এই ফসল আড়াই মাসে উঠে যায় তাই কৃষকদের জমি পতিত না রেখে পেরিলা আবাদ করলে ভালো একটি ফসল উঠে আসবে। ৭০- ৭৫ দিনের মধ্যে এই ফসল ঘরে তোলা সম্ভব। সেই দিক থেকে একই জমিতে একাধিক ফসল করা যায়।

কৃষি কর্মকর্তার মতে, পেরিলার পাতা সবজি ও বীজকে তেল উৎপাদনে কাজে লাগিয়ে দুইভাবে ব্যবহার করা যায়। পেরিলার ফুল এলে ক্ষেতে মৌমাছির ব্যাপক আনাগোনা থাকায় বাণিজ্যিকভাবে মধু চাষের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে পেরিলার চাষ ব্যাপকতা বাড়াতে পারলে দেশের অর্থনৈতিক সেক্টর আরও সমৃদ্ধ হবে। তাই জমির সর্বোচ্চ ব্যবহারের দিককে গুরুত্ব দিয়ে এই ফসল চাষ শুরু করা হয়েছে। অন্যদিকে মানব শরিরের জন্য অনেক উপকারী। পেরিলায় শতকরা ৬৫ ভাগই ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড থাকে যা বিশেষত হৃদযন্ত্র, মস্তিষ্ক, ত্বকসহ ডায়াবেটিস রোগ প্রতিরোধে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –