• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস, আজ ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন। বন্যায় দুবাই এবং ওমানে বাংলাদেশীসহ ২১ জনের মৃত্যু। আন্তর্জাতিক বাজারে আবারও বাড়ল জ্বালানি তেল ও স্বর্ণের দাম। ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

মেডিকেল জয়ী চার দরিদ্র শিক্ষার্থীর পাশে পঞ্চগড়ের ডিসি

প্রকাশিত: ২৩ এপ্রিল ২০২২  

দরিদ্র হলেও আদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী সাকিব, শান্ত, নাঈম আর ক্ষিতিশ। তাদের কারো বাবা ভ্যানচালক, কারো বাবা অন্যের ক্ষেতে কাজ করা কৃষি শ্রমিক অথবা বর্গাচাষি। একজনের বাবা মসজিদে পাঁচ হাজার টাকা বেতনে ইমামতি করেন। কেউ আবার পারিবারিক অনটনে নিজেও কাজ করেছেন। তবে অভাব তাদের জীবন যুদ্ধে বাধা হতে পারেনি। কুড়েঘরে লেখাপড়া করে এরা এবার সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। মেধাবী এসব শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়িয়ছেন পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম।

তাদের মধ্যে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের রাজাগাঁও গ্রামের মো. শান্ত ও একই উপজেলার তড়িয়া ইউনিয়নের কাটালী গ্রামের মো. নাঈম এখলাস রাজশাহী মেডিকেল কলেজে, সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের জমাদার পাড়া গ্রামের মো. সাকিব হাসান সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজে আর দেবীগঞ্জ উপজেলার দেপ্রিগঞ্জ এলাকার ক্ষিতিশ চন্দ্র রায় বরিশাল শের-এ-বাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। চরম দারিদ্র্য, অভাব-অনটনে বেঁচে থাকার কঠিন সংগ্রামে জয়ী সাকিব-ক্ষিতিশদের জীবনের গল্প একই সুতোয় গাঁথা।

তাদের মধ্যে ক্ষিতিশ চন্দ্র রায় অষ্টম শ্রেণির পর থেকে লেখাপড়ার পাশাপশি ক্ষেতে কাজ করে। ১৩ বছর বয়সেই কৃষি শ্রমিক হিসেবে বাবার সঙ্গে নওগাঁ জেলায় যায় অন্যের ক্ষেতের ধান কাটতে।

ক্ষিতিশের বাবা সুবাস চন্দ্র রায় বলেন, আমার ছেলে ছোটকাল থেকেই কাজ করে। ধান কাটতে পারে বিঘার পর বিঘা। সে আমার সঙ্গে কৃষি শ্রমিক হিসেবে নওগাঁয় গিয়েছিল অন্যের জমিতে ধান কাটতে। এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে বাপ-বেটা মিলে নোয়াখালী গিয়েছিলাম অন্যের জমিতে ধান কাটতে।

নাঈম, শান্ত আর সাবিকের জীবনের গল্পও একই রকম। এদের তিন জনের পরিবারে অভাব-অনটন লেগেই থাকে। ভিটেমাটি ছাড়া তাদের পরিবারের কোনো জমিজমা নেই। রিকশাচালক বাবার আয় দিয়ে সংসার চলেছে। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষ করে জীবন চালান।

সেই সংসার থেকে লেখাপড়া করে মেডিকেল কলেজে লেখাপড়া করে চিকিৎসক হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু তাদের ভর্তিসহ মেডিকেল কলেজে খেলাপড়ার খরচ বহনে অক্ষম তাদের অভিভাবকরা।

তাদের জীবন সংগ্রামে সফল হওয়ার গল্প শুনে পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বুকে জড়িয়ে সাহস জুগিয়েছেন। ভর্তির জন্য প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে দিয়ে পড়ালেখার খরচেও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। একইসঙ্গে পরবর্তীতে এমন সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে জেলা প্রশাসক প্রত্যেককে তার ব্যক্তিগত নম্বরও দেন।

এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব দীপঙ্কর রায়, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদুল হক প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, পঞ্চগড় থেকে মোট ১৭ মেধাবী শিক্ষার্থী এবার দেশের বিভিন্ন এলাকার মেডিকেল কলেজে লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছে। তারা প্রত্যেকে আমাদের রত্ন। তারা দেশের হাজার হাজার শিক্ষার্থীর অনুপ্রেরণা।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –