• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

পঞ্চগড়ে পাঁচ হাজার গাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা

প্রকাশিত: ১৩ আগস্ট ২০২২  

পঞ্চগড়ে এক প্রবাসীর চা বাগানের ভেতরের পেঁপে, সুপারি, নারিকেল ও মেহগনির প্রায় পাঁচ হাজার গাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এতে প্রায় ৫০-৬০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার রাতে সদর উপজেলার চাকলারহাট ইউপির দক্ষিণ ভাটিয়া পাড়া এলাকায় সিদ্দিকী টি স্টেটে ঘটনাটি ঘটে৷

শুক্রবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় ২২ একর চা বাগানে সেড ট্রি হিসেবে সারি সারি করে লাগানো হয়েছে সুপারি গাছ। চা বাগানের পাশের পেঁপে বাগান। এছাড়া পেঁয়ারা, মেহগনি, নারিকেল ও আমের গাছও রয়েছে। কিন্তু চা বাগান বাদ দিয়ে প্রায় সব গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। মাটিতে পড়ে আছে বিক্রিযোগ্য উচ্চ ফলনশীল জাতের থোকায় থোকায় পেঁপে।

এদিকে, খবর পেয়ে বিকেলে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী, জেলা পরিষদ প্রশাসক আনোয়ার সাদাত সম্রাট, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, সদর থানার ওসি আব্দুল লতিফ মিঞাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ক্ষতিগ্রস্ত বাগান পরিদর্শন করেন। 

বাগান মালিক মিজানুরের পরিবার জানান, চা বাগানটির বয়স প্রায় কুড়ি বছরের বেশি। প্রায় দুই বছর আগে সাথী ফসল হিসেবে ফলজ ও বনজ গাছের চারা লাগানো হয়। সেই সঙ্গে পরিচর্যার মাধ্যমে সাথী ফসলগুলোর চারা পরিপুর্ন করা হয়েছে। বর্তমানে ফলজ গাছগুলোতে ফল আসা শুরু হয়েছে। প্রতিদিনই ৩০-৪০ জন নারী পুরুষ বাগান পরিচর্যা করেন। প্রবাসে কাজ করে কষ্টের টাকায় বাগানটি। প্রতিদিনই বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে দর্শনার্থী ছুটে আসেন। শুক্রবার সকালে চা বাগানে পাতা তুলতে গিয়ে বাগানের এই গাছ কাটা দেখতে পান চা শ্রমিকরা। চা বাগানের সেড ট্রি হিসেবে ব্যবহৃত এক হাজারের বেশি গাছ এবং একটি পেঁপে বাগানের সব গাছ কেটে দেওয়া হয়েছে।

বাগানের ম্যানেজার আনিছুর রহমান আনিছ বলেন, সকালে বাগানে চা শ্রমিকরা কাজ করতে গেলে তারা পেঁপে, সুপারি ও মেহগনি বাগানের সব গাছ কাটা দেখতে পান৷ পরে আমরা বাগানে গিয়ে দেখি, সব গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। কে এমন করেছেন আমরা জানি না। জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচার দাবি করছি।

বাগান মালিক মিজানুর রহমান সিদ্দিকী মোবাইলে জানান, আমি বিদেশে থেকে যা আয় করেছি, তা দিয়ে তিলে তিলে বাগানটি গড়ে তুলেছি৷ আমার বাগানটাই একমাত্র সম্পদ ও স্বপ্ন। আমার হাতে গড়া বাগানের কয়েক হাজার গাছ রাতের আঁধারে কেটে ফেলা হয়েছে। আমি স্থানীয় প্রশাসনের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

জেলা পরিষদের প্রশাসক আনোয়ার সাদাত সম্রাট বলেন, একজন প্রবাসী বিদেশে থেকে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে গ্রামে একটি বাগান গড়ে তুলেছেন। হঠাৎ ওই প্রবাসীর বাগানের কয়েক হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক৷ 

সদর থানার ওসি আব্দুল লতিফ মিঞা বলেন, আমরা সরেজমিনে প্রবাসীর ওই বাগানটি পরিদর্শন করেছি। যারা বাগানের গাছ কেটেছেন, তারা একটি অমানবিক কাজ করেছেন৷ আমরা বিশেষভাবে খতিয়ে দেখছি। যারাই জড়িত থাকুক না কেনো, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –