• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

পাথর লোড-আনলোডে নতুন মজুরি নির্ধারণ

প্রকাশিত: ৩১ আগস্ট ২০২২  

পাথর লোড-আনলোডে নতুন মজুরি নির্ধারণ                       
পঞ্চগড়ে পাথর লোড-আনলোডে নতুন মজুরি ৩ টাকা ৯০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। সোমবার (২৯ আগস্ট) রাতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদ হলরুমে শ্রমিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। ফলে তিন দিন বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার রাত ১২টার সচল হয়েছে পাথর-বালু লোড-আনলোডের সকল কার্যক্রম।

জানা গেছে, বৈঠকে শ্রমিক নেতারা লোড-আনলোডে সাড়ে ৫ টাকা দাবি জানালে ব্যবসায়ীরা ৩ টাকা ৯০ পয়সা দিতে সম্মত হন। বালু লোড হিসেবে পূর্বের রেটের সঙ্গে ১০০ টাকা যুক্ত করে ১৮০০ টাকা করা হয়। বালু লোডে পূর্বের রেট ছিল ১৭০০ টাকা। মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) থেকে আগামী তিন বছরের জন্য নতুন এ চুক্তি বলবৎ থাকবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জেলা পরিষদ প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট, তেঁতুলিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদুর রহমান ডাবলু, আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন আলী মন্ডল, জেলা পাথর-বালু যৌথ ফেডারেশনের সভাপতি হাসিবুল হক প্রধান, ২৬৪’র শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি আব্দুল লতিফ, সাধারণ সম্পাদক আকবর আলী, ২০০০’র শ্রমিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দীন, তেঁতুলিয়া উপজেলা পাথর-বালু ব্যবসায়ী ও শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মজিবর রহমান (মাস্টার), সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর রশিদ লিটন, বাংলাবান্ধা লোড ইউনিয়নের শ্রমিক নেতা নাজিরুল ইসলাম, তিরনইহাটের মানিক মিয়া, তেঁতুলিয়ার রঞ্জু মাসুদসহ সংশ্লিষ্ঠ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।  

জেলা পরিষদ প্রশাসক আনোয়ার সাদাত সম্রাট বলেন, জেলার পাথর-বালু লোড-আনলোড শ্রমিকরা মজুরি বৃদ্ধির দাবি করলে ব্যবসায়ীরা তা না মানলে উভয়ের মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি হয়। ব্যবসায়ীরা পাথর-বালু বেচাকেনা বন্ধ করে দিলে বেকার হয়ে পড়েন শ্রমিকরা। উভয়ের মধ্যকার সমস্যা নিরসনে আজকের আলোচনা সভা। এতে ব্যবসায়ীরা প্রতি সিএফটি পাথর লোড-আনলোডে ৩ টাকা ৯০ পয়সা দিতে সম্মত হওয়ায় আমরা সমস্যা নিরসন করতে পেরেছি। বালু লোড-আনলোডে পূর্বের ১৭০০ টাকার সঙ্গে ১০০ টাকা যুক্ত করে ১৮০০ টাকা করা হয়েছে। আর পূর্বের নিয়মনীতি বহাল থাকবে। মঙ্গলবার থেকে এটা কার্যকর হবে।

এর আগে শ্রমিকরা পাথর লোড-আনলোডে মজুরি ২ টাকা ৮০ পয়সা থেকে সাড়ে ৫ টাকা দাবি করলে জেলার পাথর-বালু ব্যবসায়ী যৌথ ফেডারেশন হঠাৎ সিদ্ধান্তে অনির্দিষ্টকালের জন্য পাথর-বালু বেচাকেনা বন্ধ করে দেয়। এতে বেকার হয়ে পড়ে জেলার ১০ হাজারেরও বেশি শ্রমিক। অন্যদিকে স্থবির হয়ে পড়ে জেলার পাথর-বালু বেচাকেনা।

শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছিলেন, পঞ্চগড়ে মাটির ভূ-গর্ভস্থ ও নদীর পাথর-বালু দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হয়ে থাকে। এ পাথর-বালু লোড-আনলোড কাজের সঙ্গে জড়িত রয়েছে জেলার ১০ হাজারেরও বেশি শ্রমিক। তারা দীর্ঘ দিন ধরে প্রতি ঘনফুট (সিএফটি) পাথর ২ টাকা ৮০ পয়সায় লোড-আনলোড করে আসছিলেন তারা। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে জেলা ট্রাক, ট্রাক্টর, ট্যাংক-লরি ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন ও জেলা মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নসহ সংগঠনগুলো তাদের শ্রমিকদের সামান্য মজুরি বাড়িয়ে দেয়।

সিএফটি প্রতি ২ টাকা ৮০ পয়সায় লোড-আনলোড করলে বর্তমানে ৩৫০-৫০০ টাকায় শ্রমিকদের সংসার চলছে না। এজন্য তারা পাথর-বালু ব্যবসায়ীদের কাছে সিএফটিতে সাড়ে ৫ টাকা বৃদ্ধির জন্য দুই মাস আগে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি আবেদন করেন। কিন্তু প্রশাসন থেকে কোনো পদক্ষেপ না আসায় গত ২৫ আগস্ট শ্রমিক সংগঠনগুলো লোড-আনলোডে সিএফটি প্রতি ৪ টাকা করার দাবি জানালে ব্যবসায়ীরা তা আমলে না নিয়ে হঠাৎ শনিবার থেকে পাথর-বালু কেনাবেচা বন্ধ করে দেন। এতে করে হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ে।

জেলা পাথর-বালু যৌথ ফেডারেশনের সভাপতি হাসিবুল হক প্রধান বলেন, আমাদের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা না বলে শ্রমিকরা প্রতি সিএফটি ৪ টাকা ঘোষণা করেছে। তারই প্রতিবাদে ব্যবসায়ীদের সর্বসম্মতিক্রমে অনির্দিষ্টকালের জন্য পাথর-বালু বেচাকেনা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –