• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

ছাত্রদের না জানিয়ে মাদরাসায় ভর্তি, সমাধানের আশ্বাস ইউএনওর

প্রকাশিত: ১৫ ডিসেম্বর ২০২২  

ছাত্রদের না জানিয়ে মাদরাসায় ভর্তি, সমাধানের আশ্বাস ইউএনওর                   
পঞ্চগড়ে দাখিল পাস করা শিক্ষার্থীদের না জানিয়ে অনলাইনে তাদের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন করার অভিযোগ উঠেছে মাদরাসার অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে। এতে করে শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দমতো কলেজে ভর্তি হতে পারছে না। সোমবার (১২ ডিসেম্বর) ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এ ঘটনা জানা যায়। ঘটনাটি ঘটেছে পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আলিম মাদরাসায়।

তবে বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) জেলার সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাসুদুল হক শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আলিম মাদরাসা থেকে এবার ৩২ জন শিক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছে ২৯ শিক্ষার্থী। এদিকে গত ৮ ডিসেম্বর থেকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু হলে শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে গিয়ে জানতে পারে তাদের আবেদন হয়ে গেছে। অনলাইনে তাদের আবেদন পেমেন্ট দেখানো হচ্ছে। এটি দেখে চিন্তায় পড়ে যায় শিক্ষার্থীরা। পরে বুঝতে পারেন এটা তাদের মাদরাসা থেকেই করা হয়েছে। রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর জানা থাকায় তাদের না জানিয়ে অনলাইনে অত্র প্রতিষ্ঠানে ভর্তির আবেদন করে ফেলেছেন অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক। এ কারণে পছন্দের কলেজে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে শিক্ষার্থীরা। তারা ওই আবেদন বাতিল চেয়ে পুনরায় আবেদনের দাবি জানিয়েছে। শিক্ষার্থীরা বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করলে তাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন ওই অধ্যক্ষ। এমনকি মোয়াজ্জেম আলী নামের এক শিক্ষার্থীকে কক্ষ থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়।

আগামীকাল ১৫ ডিসেম্বর কলেজগুলোতে ভর্তি আবেদনের শেষ তারিখ। তারা শেষ পর্যন্ত অন্যত্র ভর্তি আবেদন করতে পারবে কিনা তা নিয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছে বলে জানিয়েছে। বারবার প্রশংসাপত্র ও মার্কশীট চাইতে মাদরাসায় গিয়ে সুপারের কাছে হেনস্থা হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থী মোয়াজ্জেম আলী, ইব্রাহিম ইমন ও ফরমান আলী জানায়, এ প্রতিষ্ঠান থেকে দাখিল পাশ করেছে তারা। অন্য কলেজে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন তাদের। গত সপ্তাহে প্রচার মাইকিংয়ে কলেজের ভর্তি আবেদনের কথা শুনে মাদরাসায় যায় মার্কশীট ও প্রশংসাপত্র আনতে। কিন্তু যেয়ে জানতে পারে সুপার স্যার তাদের অনলাইনে আবেদন করে দিয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানালে অধ্যক্ষ তাদের গালাগালি করে রুম থেকে বের করে দেন। এখন সুপারের জন্য অন্য কলেজে ভর্তি হতে পারছে না তারা।

এর আগে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাদরাসায় শিক্ষার্থীদের ধরে রাখতে এমনটি করেছেন অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তিনি।

বুধবার বিকেলে জেলার সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মাসুদুল হক বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই প্রতিষ্ঠানের মাদরাসার অধ্যক্ষকে ডাকা হয়েছিল। তিনি অনলাইন আবেদনের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। এ জন্য তার কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নেওয়া হয়েছে। যেসব উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী ওই মাদরাসায় ভর্তি হতে চাচ্ছে না, তারা আবেদন না মঞ্জুর করে দ্বিতীয় পর্যায়ে যেকোনো কলেজে ভর্তি হতে অনলাইনে আবেদন করতে পারবে।

এর আগে সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম প্রামাণিক জানান, বিষয়টি দু:খজনক। শিক্ষার্থীরা দাখিল বা এসএসসি পাশ করার পর তারা তাদের পছন্দমত কলেজ কিংবা মাদরাসায় ভর্তি হবে এটাই স্বাভাবিক। এটা তাদের অধিকার। এ বিষয়ে ওই মাদরাসার অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যাখ্যা দিতে বলেছি। আর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন আচরণ করার অধিকার কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানের নেই।

জেলা শিক্ষা অফিসার শাহিন আকতার বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –