• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্ত‌ক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক

বাজারে গুজব ছড়িয়ে দাম বৃদ্ধি করে অর্থ লুটছে অসাধু ব্যবসায়ীরা     

প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০২০  

‘কোভিড-১৯’ এই রোগকে প্যানডেমিক বা মহামারি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। আতঙ্কিত বিশ্বজনতা। আর এই আতঙ্ককে কাজে লাগিয়ে নানাভাবে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে অর্থ লুটছে মুনাফালোভী কিছু ব্যবসায়ী। 
এরই ফলে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজারের পর সুযোগ সন্ধ্যানীরা সপ্তাহ জুড়ে গুজব ছড়িয়েছে নিত্যপণ্যের বাজারে। বাড়িয়েছে চাল, ডাল, চিনি, মসলা, সবজি, মাছ, মাংসসহ বেশ কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। আর গুজবের পেছনে ছুটে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পণ্য কিনে বাড়িকে দোকান বানিয়ে বাজারে দাম বৃদ্ধির প্রভাব ফেলছে দুর্বল চিত্তের কিছু মানুষ।

রোববার রাজধানীর রায়ের বাজার, হাতিরপুল, কারওয়ান বাজার ও কচুক্ষেত বাজার ঘুরে এক সপ্তাহ আগের দামের সঙ্গে আজকের দামের পাওয়া পার্থক্যের চিত্র তুলে ধরা হলো।

৫০ টাকা কেজির মিনিকেট ৫৬ থেকে ৫৮টাকা কেজি, ৬০ টাকা কেজির নাজিরশাইল ৬৫ থেকে ৬৭ টাকা, ৩৬ টাকার আঠাশ চাল ৪২ থেকে ৪৪ টাকা, ৪০ টাকার পাইজাম ৪৫ টাকা, ৬৬ টাকার বাসমতি ৭০ টাকায় বিক্রি করছে খুচরা দোকানিরা। 

গত সপ্তাহের ১০০ টাকা কেজির দেশি মসুর ডাল বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকা, ৬৫ টাকা কেজির ইন্ডিয়ান মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়। ১২০ টাকা কেজির মুগ ডাল ১৩৫ টাকা কেজি বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এদিকে দীর্ঘদিন পেঁয়াজে উর্ধ্বগতি থাকলেও গত সপ্তাহে তা নেমে আসে ৩৫ টাকা কেজি। বর্তমানে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি। এছাড়া ৫০ টাকার আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। অপরদিকে ৬৫ টাকা কেজির দেশি রসুন এখন ১০০, ১৩০ টাকার চায়না রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়।

গত সপ্তাহে ১২০ টাকা কেজির চায়না আদা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা। অপরদিকে ১০০ টাকা কেজির দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। তবে ২০ টাকা কেজির আলু বাজার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২২ থেকে ২৫ টাকায়।

গত সপ্তাহের ১৩০ টাকা কেজির তেলাপিয়া ১৭০ টাকায়, ৪০০ টাকার পাবদা ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ২৪০ টাকা কেজির বড় নওলা ২৮০ টাকা, কৈ মাছ ১৬০ টাকা থেকে দাম বেড়ে কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়, আকার ভেদে পাঙ্গাশ ১৪০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি ছিল আজ তা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা কেজি, ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজির চিংড়ি আজ ৫৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, ৪০০ টাকার শিং ৫০০ টাকা কেজি, ৩০০ টাকার মলা ৪০০ টাকা কেজি, ৪০০ টাকার রুইয়ের কেজি ৪৫০ টাকা।

করোনা গুজবে গত সপ্তাহের ফার্মের মুরগির ৯০ টাকা ডজন এখন ১১০, অন্যদিকে পাকিস্তানি ছোট ডিম ১২০ ডজন।

গত সপ্তাহের ৫২০ টাকা কেজি গরুর মাংস এখন ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১০৫ টাকার ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৩০, ২৪০ গ্রাম ওজনের ৫৫০ টাকা হালি পাকিস্তানি মুরগি ৭৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখো গেছে। ৭০০ গ্রাম ওজনের ৮৫০ টাকা হালির পাকিস্তানি মুরগি এখন ১০০০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে।

আগের ২০ টাকা কেজির টমেটো এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা, ৪০ টাকা কেজির পটল ৫০ টাকা, ৪০ টাকা কেজির ঢেঁড়শ ৫০ টাকা, ৪০ টাকা কেজির করোলা ৫০ টাকা, ৩৫ টাকা কেজির বরবটি ৪০, ৫০ টাকা কেজির কাঁচামরিচ ৬০ টাকা, ২৫ টাকার পেঁপে ৩০ টাকা, ৫ টাকা বাড়তিতে লাউ আকার ভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ৩৫ টাকা কেজির চিচিংগা ৪০ টাকা, ২০ টাকা ফালির মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা বিক্রি করতে দেখা গেছে।

মাসুদ জেনারেল স্টোরের মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অসাধু কর্মকর্তারা দেশি লাল চিনির মজুদ থাকতেও বাজারে সরবরাহ করে না। যার কারণে দেশি চিনির দাম বেড়ে কেজি হয়েছে ৮০ টাকা। তাছাড়া বাজারো কোনো পণ্যের দাম বাড়ানোর কারণ নেই। যা বেড়েছে এটা ক্রেতারা নিজেরাই গুজব ছড়িয়ে বাড়িয়েছে।

কামাল রাইস এজেন্সির মালিক মো. কামাল হোসেন বলেন, গত শুক্রবারেই আমার আড়ত ফাঁকা। চাল আনতে মিলে ফোন দিতেই মালিকরা বলছে চাল নেই। যা আছে দাম বেশি। আর ক্রেতারাও যে এতো দিন ৫ কেজি কিনতো সে কিনছে ১ বস্তা। মূলত ক্রেতারাই আতঙ্ক ছড়িয়ে দাম বাড়িয়েছে।

এদিকে বাজার ঘুরে দেখা যায় অনেকে বড় বড় কার্টন ভরে পণ্য কিনে বাসায় ফিরছেন। কেউ আবার বস্তা ভরে পেঁয়াজ, আলু, রসুন কিনেছেন। একাধিক বস্তা চাল গাড়ির ডালার নিচে ঢুকাচ্ছেন।

সাইকেলের পেছনে আলু-পেঁয়াজ মিলিয়ে এক বস্তা নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন মুরাদ হোসেন, এতো পণ্য এক সঙ্গে কেনো কিনছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভাই দাম যে হারে বাড়তাছে আবার হুনি বাজার বন্ধ ওবো তাই কিনে রাখলাম।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –