• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

আইয়ামে বিজের রোজা

প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারি ২০২০  

প্রিয় উম্মতের জন্য মহানবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক আরবি মাসের মধ্যভাগে তিনদিন রোজা রাখার তাগিদ দিয়েছেন। আর তা হলো প্রতি চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ। এ রোজাকে বলা হয় আইয়ামে বিজের রোজা। যারা আইয়ামে বিজের রোজা রাখবে তাদেরকে প্রত্যেক আরবি মাসের ১২ তারিখ দিবাগত রাতে সেহরি খেতে হয়।

আইয়ামে বিজ আরবি দু’টি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। যেমন- 

(১) ‘আইয়াম’ আরবি শব্দ, এর অর্থ হলো-দিবসসমূহ, কাল, সময় ইত্যাদি। এটি বহুবচন, এর একবচন হলো ‘ইয়াওম’, অর্থ হলো দিন বা দিবস। 

(২) ‘বিজ’ বা ‘বিদ’ অর্থ শ্বেতবরণ, শুভ্রবর্ণ, ঔজ্জ্বল্য, সফেদ, সাদা রং ইত্যাদি। 

সওমে আদম:

এই রোজাকে সওমে আদম বা আদম (আ.) এর রোজা বলা হয়। হজরত আদম (আ.) ও মা হাওয়া (আ.) দুনিয়ায় আসার পর প্রথম এই তিনটি রোজা পালন করেন; যার বদৌলতে তারা আগের মতো জান্নাতি রূপ–লাবণ্য ও ঔজ্জ্বল্য ফিরে পান এবং এই দিনগুলোতে চাঁদ পূর্ণ শশীতে পরিণত হয়, রাতভর পূর্ণিমার জ্যোত্স্নালোক বিকিরণ করে বলে এই নামকরণ করা হয়েছে।

আইয়ামে বিজের রোজা সম্পর্কে হাদিস:

> আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমার প্রিয়তম বন্ধু আমাকে তিনটি ব্যাপারে বিশেষভাবে অসিয়ত করেছেন: ১. প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখা, ২. দুই রাকাত সালাতুত্ দুহা আদায় করা এবং ৩. রাতে ঘুমানোর আগেই যেন বিতর নামাজ আদায় করি (বুখারি)। 
 
> আইয়ামে বিজে রোজা রাখা সুন্নত। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখো।’ (বুখারি ও মুসলিম)। 

> আবদুল মালেক বিন কুদামাহ বিন মালহান (রা.) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে আইয়ামে বীজ তথা চন্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন’ (আবু দাউদ)। 

> ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন , ‘রাসূলুল্লাহ (সা.) সফর ও মুকিম অবস্থায় কখনো আইয়ামে বিজের রোজা ভঙ্গ করতেন না’ (নাসায়ী)। 

> রাসূল (সা.) বলেন, ‘কোনো মাসে তিনটি রোজা রাখলে ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ রাখবে’ (আহমদ)।

এসব হাদিস থেকে প্রমাণ হয়, রাসূল (সা.) তাঁর প্রিয় সাথীদের আইয়ামে বিজের রোজা রাখার জন্য বিশেষভাবে নির্দেশ দিতেন; কিন্তু এই নির্দেশ আবশ্যকতার ভঙ্গিতে ছিল না বরং তা ছিল নফল তথা অতিরিক্ত আমল হিসেবে। তিনি সাহাবিদের এই রোজা রাখতে বলতেন কিন্তু তাদের সবাই এ নির্দেশ পালন করতেন না, যা থেকে প্রমাণ হয়, তাঁর এ নির্দেশ নফল হিসেবে ছিল ওয়াজিব হিসেবে নয়।

উল্লেখ্য, রমজান মাসে যেহেতু পূর্ণ এক মাস রোজা ফরজ; তাই রমজানে আইয়ামে বিজের রোজা নেই। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা সব মুমিন মুসলমানকে আইয়ামে বিজের রোজাগুলো রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –