• মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম

প্রকাশিত: ১২ ডিসেম্বর ২০১৮  

বজলুর রশীদ জলঢাকা নিউজ :উপজেলাকে একটা শহর বলা যায় কিনা আমি জানি না। তবে বর্তমানে এই উপজেলাটি দেখলে যে কেউ শহর ভেবে বসবে অনায়াসে। মাত্র ক ’ বছর আগেও গ্রামের আবেশে গড়ে ওঠা এই উপজেলায় আজ সারিবদ্ধ ভবন, শপিংসেন্টার, দামী দামী সব খাবারের দোকান। ভাবতেই কেমন যেন লাগে ! খুব দ্রুত বদলে গেছে আমার সেই ছোট্ট শহরমুখী গ্রামটি। 

চারদিকে যেভাবে নগরায়ন হচ্ছে তার বিন্দুমাত্র ছিটেফোঁটা যদি এই শহরে না পড়ত তখন মন খারাপ হওয়াটাও অস্বাভাবিক ছিল না। আবার এমন পরিবর্তনটাও মন মেনে নিতে পারছে না আজ। মনটা কি গ্রামের প্রেমে সঙ্কীর্ণ হয়ে গেল ? নীলফামারীর একটি থানা , উপজেলা - পৌরসভা জলঢাকা। পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কৃত্রিম নদী নীলসাগর। এত সুন্দর যে একটা কৃত্রিম নদী হতে পারে তা না দেখলে বোঝা যেত না। বসন্তের বাতাসে নিলসাগরের পাড়ে বসলে মনের মাঝে লুকিয়ে থাকা বিষন্নতা কোথায় হারিয়ে যেত আর শীতের কুয়াশা মোড়ানো নিলসাগরের যেন হয়ে উঠত কোন অপ্সরী। 

আর জলঢাকার উপজেলা পুকুরের কথা তো বলাই হলো না, অনির্বান স্কুল এর মাঠে খেলাধুলা করে এসে দিতাম ঝাপ উপজেলার পুকুরে, কিছুটা প্রশান্তির জন্য। তারপর স্কুল কামাই করে রামায়ণ দেখতাম ইউনিয়ন পরিষদের কাঠের একটি বড় টিভিতে। তারপর স্কুল ছুটির দিন মাছ ধরতে যেতাম আওলিয়াখানার বিলে, তখন আওলিয়াখানার মাঝখান দিয়ে একটি ছোট ক্যানেল মতো ছিল। অধিকাংশ সময় কেটেছে জলঢাকার উপজেলা পরিষদের ভিতরে। আম গাছের আম চুরি ,লিচু চুরি,এইসব এখন শুধু স্মৃতি । 

রাতে মায়ের কাছে গল্প শুনে যে মজা পেতাম , ভিডিও গল্প দেখে তা মজা পাই না। আর এখন সবটাতেই ফরমালিন , ভেজাল ছাড়া কোন কিছুই খুঁজে পাওয়া যায় না । জলঢাকার ছোট্ট শহরে ছোট ছোট টিন কাঠের ঘর, ছোট্ট দোকান , ছোট্ট বাজার। জলঢাকার আশপাশের এলাকা থেকে আসত তাজা সবজি , আর নদী থেকে আসত জেলেদের জালে ধরা মাছ। বাজারের ফলও আসত কোন গৃহস্থের গাছ বা বাগান থেকে। বিদেশী কোন ফলের স্থান ছিল না এখানে। বাড়ির বউরা সবজি চাষ করত , পশুপাখি পালন করত , কাঁথা সেলাই করত , কাপড়ে ফুল তুলত , পাটি বুনত। 

প্রবাদ আর শ্লোক ছিল তাদের আড্ডার বিষয়বস্তু। বিটিভিতে সপ্তাহে একটা সিনেমা দেখা আর রাতে একটা নাটক দেখেই তারা সন্তুষ্ট থাকত। বিকেলের নাস্তায় থাকত খই , মুড়ি , পিঠা, নাড়ু , পায়েশ। এসবই আজ পর্দার ওপারের ( অতীত) গল্প

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –