উত্তরে চা চাষে খুলেছে নতুন দুয়ার
প্রকাশিত: ৪ জুন ২০২১
সবুজ চায়ের সমাহার নামে খ্যাত উত্তরের প্রবেশদার জেলা পঞ্চগড়। চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের পর চায়ের জেলা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে এই জেলা। গত দুই দশকে পঞ্চগড়ের সমতল ভূমির চা-শিল্পে এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। যেসব উঁচু জমিতে কোনো ফসল হতো না, পতিত অবস্থায় পড়ে থাকত, সেসব জমিতে চা চাষ করে এ জেলার আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে চা-চাষি ও শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টদের।
চা চায়ের চাষাবাদ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতোমধ্যে তৃতীয় চা অঞ্চল হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে পঞ্চগড়। পাশাপাশি পঞ্চগড়কে অনুসরণ করে ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও নীলফামারীও ব্যাপক অগ্রসর হচ্ছে চা শিল্পে। তবে পঞ্চগড়ে প্রায় ৪০ হাজার একর জমি চা চাষের উপযুক্ত বলে বলছে বাংলাদেশ চা বোর্ড।
চা চাষ করে স্থানীয় কৃষকরা যেমন ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন, তেমনি এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত চা-শ্রমিকদের জীবনও বদলে গেছে। চায়ের ওপর নির্ভর করছে তাদের জীবন-জীবিকা।
চা-চাষিরা জানান, মার্চের শুরু থেকে মৌসুমে প্রথম চা কাটা ও সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু হয়। বাগান থেকে চাষিরা তাদের চা-পাতা কাটার পর স্থানীয় কারখানায় বিক্রি করেন। আর এভাবে চায়ের চাষ বদলে গেছে অনেকে জীবন। চায়ের দাম ভালো পাওয়ায় চা-চাষিরা স্বাবলম্বী হলেও দুই বছর ধরে চা পাতার দাম ওঠা-নামা করায় চায়ের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না চাষিরা। একেক দিন একেক রকম চায়ের মূল্য থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাষিরা। পাশাপাশি চাষিদের পাতা থেকে ২০-৪০ শতাংশ পর্যন্ত কর্তন করায় চরম বিপাকে পড়েছেন তারা ৷ তবে আগের মতো দাম ও পাতার কর্তন না করলে আরও বেশি এগিয়ে যেতে পারবেন বলে আশাবাদি চাষিরা।
বাগান-মালিকরা জানান, ১৯৯৬ সালে পঞ্চগড়ের চা চাষের গোড়াপত্তন হয়। পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম দিকে টবে, মাঠে, পতিত জমিতে চা চাষ করা হয়। এরপর ২০০০ সাল থেকে তেঁতুলিয়া টি কোম্পানি এবং পরে কাজী অ্যান্ড কাজী টি স্টেটসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানি চা চাষ শুরু করে। শুরু হয় বাণিজ্যিকভাবে চায়ের চাষ। জেলার সমতল ভূমিতে চা চাষ শুরুর পর ২০০৭ সালে ঠাকুরগাঁও ও লালমনিরহাট এবং ২০১৪ সালে দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলায় চা চাষ শুরু হয়। ৫টি জেলায় ১ হাজার ৫১০টি নিবন্ধিত ও ৫ হাজার ৮০০টি অনিবন্ধিত ক্ষুদ্রায়তন চা-বাগানে (২৫ একর পর্যন্ত) রয়েছে। এ পর্যন্ত ১০ হাজার ১৭০ দশমিক ৫৭ একর জমিতে চা চাষ সম্প্রসারণ করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের পাঁচটি উপজেলায় কমবেশি চা-বাগান গড়ে উঠলেও সবচেয়ে বেশি চা-বাগান রয়েছে তেঁতুলিয়া উপজেলায়। সড়কের পাশে বা উঁচু পতিত জমিতে কিংবা পুকুর পাড়ে এমনকি বাড়ির আঙিনায় রয়েছে চায়ের বাগান। আবার কেউ কেউ সুপার, আম, তেজপাতা বাগানের সাথি ফসল হিসেবে করেছেন চায়ের চাষ।
জেলাজুড়ে গড়ে উঠেছে ছোট বড় হাজারো চা-বাগান। সমতলের চা চাষ বদলে দিয়েছে হাজার কৃষক শ্রমিক ও বেকারের ভাগ্য। চা বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী, উত্তরাঞ্চলে চা-বাগান, প্রক্রিয়াকরণ কারখানা ও প্যাকেটজাতকরণ ছোট কারখানাগুলোতে প্রায় ২৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। তাদের প্রায় অর্ধেকই নারী। চা-বাগান ও কারখানাগুলোতে কাজ করে এখন অনেকেরই জীবনমানের পরিবর্তন হয়েছে। এদিকে চা-শিল্প থেকে প্রতিবছর সরকারের মোটা অঙ্কের রাজস্ব আদায় হচ্ছে।
২০২০ সালে চা উৎপাদনের পার্বত্য জেলা চট্টগ্রামে ছাড়িয়ে গেছে পঞ্চগড়। গত বছর এক কোটি কেজি ছাড়িয়ে গেলেও চা-চাষিদের উৎপাদিত কাঁচা চা-পাতার ন্যায্যমূল্য ও সমস্যা দূরীকরণে তেমন একটা পরিবর্তন দেখা যায়নি। অকশন মার্কেট না থাকায় চা-পাতার দাম নিয়ে হয়রানির শিকার হতে হয় চাষিদের। এ ছাড়া কারখানার মালিকদের সিন্ডিকেটের কারণে চা-পাতার মূল্য ওঠানামা করে। অন্যদিকে পাতার ২০ থেকে ৪০ শতাংশ কর্তনের ফলে কৃষকদের পড়তে হচ্ছে লোকসান ও দুশ্চিন্তায়। কারখানা কর্তৃপক্ষের এমন সিন্ডিকেটে বিভিন্ন সময় ভোগান্তিতে পড়তে হয় চাষিদের।
চা বোর্ডের দেওয়া তথ্যমতে, বর্তমানে পঞ্চগড় জেলায় ১৬ হাজার একর জমি, চা চাষের উপযোগী রয়েছে। তার মধ্যে জেলা ৮ হাজার ৬৪২ একর জমিতে চাষ সম্প্রসারণ হয়েছে। চা চাষ সম্প্রসারণ হওয়ায় বর্তমান জেলায় ১৭টি চা কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব চা কারখানা গত বছরে তৈরি চা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল এক কোটি কেজি। কিন্তু উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে অতিরিক্ত উৎপাদন হয়েছে প্রায় তিন লাখ কেজি। জেলায় বর্তমানে ৯টি নিবন্ধিত চা বাগান (টি এস্টেট), ১৬টি অনিবন্ধিত চা বাগান, ৯৯৮টি নিবন্ধিত ক্ষুদ্রায়তন চা-বাগান এবং ৫ হাজার ৫০০ অনিবন্ধিত ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান রয়েছে। চলতি বছরের ৪ জুন প্রথম জাতীয় চা দিবস হিসেবে পালন করতে যাচ্ছে সরকার।
চা-চাষিদের অভিযোগ, কারাখানায় চা-পাতার দাম ওঠানামা আর পাতা কর্তন করে নেওয়ায় ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তারা। দীর্ঘদিন ধরে এ সমস্যাগুলো দেখা দিলেও সমস্যা সমাধান কিংবা তদারক করছে না প্রশাসন বা চা বোর্ড।
তেঁতুলিয়া উপজেলার আজিজনগর এলাকার চা-চাষি আলমগীর হোসেন বলেন, আমার উঁচু জমিতে কোনো ফসল না হওয়ায় জমিগুলোতে চা চাষ করে আমি অনেক লাভবান হয়েছি। নতুন করে বাগান লাগিয়েছি চায়ের। কিন্তু হঠাৎ চা-পাতার দাম ৩৮ টাকা থেকে ১৪ টাকা দরে নেমে আসায় তেমন আর লাভ হচ্ছে না। একেক দিন একেক দামে চা-পাতা কেনে কারখানগুলো। এ ছাড়া কারাখানয় চা-পাতা নেওয়ার পর তারা বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে চা-পাতা ২০-৪০ শতাংশ কেটে নেয়। এতে আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয় আমাদের।
গ্রিন কেয়ার চা কারখানার ম্যানেজার মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু জানান, চা চাষে কৃষকদের পাশাপাশি শ্রমিক ও বেকারদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। চা-চাষিদের অভিযোগ, তারা ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না, এটা সত্য নয়। চা-পাতার দাম অকশন বাজারের ওপর নির্ভর করে। এক কেজি চায়ের অর্ধেক পাবেন কৃষক, অর্ধেক পাবেন কারখানা। আর সেই অনুযায়ী চায়ের দাম নির্ধারণ করা হয়।
পঞ্চগড় সরকারি মহিলা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান হাসনুর রশিদ বাবু জানান, সমতল ভূমির চা দার্জিলিংয়ের চা-কেও হার মানায়। সমতল ভূমিতে চা চাষ করে চাষিরা যেমন লাভবান হচ্ছেন, বেকার ও শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন হচ্ছে। তবে অকশন বাজার দূরে হওয়ায় কৃষকরা চা-পাতার দাম তেমন পান না। পঞ্চগড়ে যদি একটি চায়ের অকশন বাজার স্থাপন করা হয়, তাহলে চাষিরা লাভবান হবেন।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ চন্দ্র সাহা জানান, চায়ের বাজার স্থিতিশীল থাকলে পঞ্চগড়ের চা শিল্প দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ইতিমধ্যে চা চাষ করে অনেক মানুষ স্বাবলম্বী হয়েছে। বেকার ও শ্রমিকদেরদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
নর্দান বাংলাদেশ, চা বোর্ড, পঞ্চগড়ের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রকল্প পরিচালক ডা. মোহাম্মদ শামীম আল মামুন জানান, পঞ্চগড়ের চা বিভিন্ন জেলাসহ বিদেশেও রফতানি হয়ে থাকে। সমতলে চা চাষ করে মানুষ তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন। চা-চাষিদের আমরা সব ধরনের সেবা ও পরামর্শ দিয়ে। ইতোমধ্যে পঞ্চগড়ে যেন একটি অকশন বাজার স্থাপন করা হয়, তার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –- ৭ বছর ধরে নিজ বাড়িতে শিকলে বন্দী নুর
- সারাদিন না খেয়ে থাকায় মুখে দুর্গন্ধ হচ্ছে, সমাধানে করণীয়
- জলবায়ু সহনশীল দেশ গড়তে নারীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ
- বাংলা নববর্ষ উদযাপনে মানতে হবে ১৩ নির্দেশনা
- দায়িত্বহীনতার কারণে ঈশ্বরদীতে ট্রেন দুর্ঘটনা: রেলমন্ত্রী
- ‘সোনার বাংলা বিনির্মাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে’
- শিশুরাই হবে স্মার্ট বাংলাদেশের মূল কারিগর
- বিক্ষোভরত ইসরায়েলি জিম্মিদের স্বজনদের আটক করেছে পুলিশ
- বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত অস্ট্রেলিয়া
- জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে: পরিবেশমন্ত্রী
- ঈদ: সাড়ে ৮ ঘণ্টায় ট্রেনের ৩৫ হাজার টিকিট বিক্রি
- ‘বিএনপি ইসরায়েলের বিপক্ষে একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি’
- আগের সব ভিসিকেই পালাতে হয়েছে: বিএসএমএমইউর বিদায়ী ভিসি
- ঈদযাত্রায় দুর্ভোগ কমাতে ছুটি বাড়ানোর দাবি
- স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
- কোটি হিটের পরও অবিক্রিত ট্রেনের ছয় হাজার টিকিট
- চীনের সঙ্গে রাজনৈতিক-অফিসিয়াল যোগাযোগ বাড়াতে প্রস্তুত বাংলাদেশ
- হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্টের কাছে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ
- ভারতের কাছে পাঁচটি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ চায় বাংলাদেশ
- বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি
- এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির
- অতিরিক্ত সচিবকে ওএসডি, ৫ যুগ্ম-সচিবের বদলি
- ফুরিয়ে যাচ্ছে জিম্মি জাহাজের খাবার, ভিন্ন ব্যবস্থা করছে দস্যুরা
- ঈদযাত্রা: পঞ্চম দিনের ট্রেন টিকিট বিক্রি শুরু
- ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর স্বাধীনতা ঘোষণার ইতিহাস বিকৃত করা হয়’
- বিশ্ব নাট্য দিবসে পঞ্চগড়ে সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি
- পাকা বেদানা খুঁজে কিনবেন যে কৌশলে
- ‘সংস্কারের পাশাপাশি আগামী বাজেটে কর্মসংস্থানে নজর দেওয়া হবে’
- দিল্লী হাইকমিশনে স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত
- ৫ বিভাগে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির আভাস
- যেসব অঞ্চলে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
- ‘ভ্রাম্যমাণ আদালতের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে’
- রাবি ভর্তি পরীক্ষার ‘বি’ ইউনিটের ফল প্রকাশ
- বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন
- সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে বিএনপি
- রংপুর বিভাগে মাদক বিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না
- ওয়ানডে সিরিজ নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হৃদয়
- আলোচনার মাধ্যমে ১১৭ বিজিপিকে ফেরানো হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭২.৫১ শতাংশ
- পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন করতে পুলিশকে আইজিপির নির্দেশ
- নতুন দামে সয়াবিন তেল মিলবে যেদিন থেকে
- বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্যোগ সরকারের
- এমআরটি-১ প্রকল্প বাস্তবায়নে পাতাল রেল যুগে পৌঁছাবে দেশ
- সাংবাদিকরা আমার খুবই আপনজন: ডা. দীপু মনি
- মিষ্টি না খেয়েও বাড়ছে ব্লাড সুগার? জেনে নিন কারণ
- চকবাজারে কেমিক্যাল গোডাউনের আগুন নিয়ন্ত্রণে
- এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি চট্টগ্রামের চিনির গুদামের আগুন
- শিক্ষার্থীদের ওপর অতিরিক্ত চাপ না দিতে আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
- আজ থেকে অফিস-আদালত-ব্যাংকে নতুন সময়সূচি
- পীরগঞ্জে দুই কাব্যগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন