• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্ত‌ক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক

করোনা নিয়ে রাজনীতি না করে জনগণের পাশে দাঁড়ান- তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২০ মার্চ ২০২০  

করোনাভাইরাস মোকাবেলায় রাজনীতি ভুলে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে বৈশ্বিক দুর্যোগ ‘করোনা’ মোকাবেলা করতে হবে। এটি নিয়ে রাজনীতি করা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলের কাছে অনুরোধ জানাবো, রাজনীতি ভুলে জনগণের পাশে দাঁড়ানো এ মুহূর্তে সবার দায়িত্ব।

শুক্রবার (২০ মার্চ) দুপুরে বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।

বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার নিতাই কুমার ভট্টাচার্য মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন।

করোনা ভাইরাসে চট্টগ্রামেও অনেক মানুষ মারা গেছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে গুজব ছড়ানো হচ্ছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একজন ডাক্তার পরিচয় দিয়ে একটি ভয়েস রেকর্ড ছাড়া হয়েছে। এই ডাক্তার তার আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলছেন, এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেন ও কিভাবে আসবে? এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়ার অর্থই হচ্ছে জনগণের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করা।

এ ধরনের গুজবে কান না দিতে দেশবাসীকে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, কারা এসব গুজব রটাচ্ছে তাদের শনাক্ত করতে সরকারের কারিগরি টিম ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। যারা এসব করছে তাদের  বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিদিন ব্রিফিং করে করোনা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। সরকার কিছু করেনি, সরকার তথ্য গোপন করছে- এ ধরনের কথা বলা হচ্ছে। অথচ সরকারের পক্ষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রতিদিন কি করা হচ্ছে, কতজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, কতজনকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে, কতজন চিকিৎসাধীন আছে- সবকিছু বলা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত আন্তরিকতা ও দ্রুততার সঙ্গে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সরকারি নানা প্রোগ্রামসহ মুজিববর্ষের সমস্ত প্রোগ্রাম স্থগিত করা হয়েছে। আমাদের দলের নানা কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করে যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে সেটির সঙ্গে যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব রটাচ্ছে- দুটির মধ্যে যোগসূত্র আছে। আশা করবো কেউ এ ধরনের বিভ্রান্তি ছড়াবেন না। জনগণকেও অনুরোধ জানাবো, ইতোপূর্বেও ছেলেধরা আতঙ্ক ছড়িয়ে দেশে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করা হয়েছিল। এখনও আতঙ্ক সৃষ্টি করে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকার এগুলোকে কঠোর হস্তে দমন করার জন্য বদ্ধপরিকর।

বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, সরকার করোনা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে এমন প্রশ্নে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, করোনা ভাইরাস একটি বৈশ্বিক দুর্যোগ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও নিজেদেরকে এটি থেকে মুক্ত রাখতে পারেনি। ইউরোপের সমস্ত দেশ যাদের কারিগরি দক্ষতা, মেডিক্যাল সায়েন্স, আর্থিক সক্ষমতা সবকিছু আমাদের চেয়ে বেশি। এরপরও তারা এটি থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে পারেনি। সৌদি আরবের আর্থিক সক্ষমতা অনেক বেশি। সেখানে কি কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে আপনারা জানেন। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশও নানা পদক্ষেপ নিয়েছে, আমাদের দেশে এখনো পরিস্থিতি অনেক দেশের চেয়ে ভালো।

তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস বিশ্বব্যাপী যেভাবে সংক্রমিত হয়েছে তাতে আতঙ্ক তৈরি করেছে। উন্নত দেশগুলোসহ বিভিন্ন দেশ এই দুর্যোগ মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে হিমশিম খাচ্ছে। আশার কথা হলো, যেখান থেকে করোনা ভাইরাসের সূত্রপাত হয়েছে সেই চীন এটিকে ইতোমধ্যে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে এবং ভ্যাকসিন আবিষ্কার করার ক্ষেত্রে কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে বলে আমরা গণমাধ্যম সূত্রে জানতে পেরেছি। যদিওবা সেটা এখনো নিশ্চিত করা হয়নি, তবে অগ্রগতি হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা আগেও দেখেছি যখন জনগণের মধ্যে কোনো আতঙ্ক তৈরি হয়, তখন সেই আতঙ্ককে একটি মহল জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর লক্ষ্যে ও গুজব রটিয়ে  আতঙ্ক আরো বাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। আমরা অতীতে দেখেছি সেটির সঙ্গে রাজনৈতিক মদদও থাকে। এবারও এর কোন ব্যতিক্রম নয়।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রকে শিগগির টেরিস্টোরিয়াল কেন্দ্র হিসেবে উন্নীত করতে যাচ্ছি। এজন্য যন্ত্রপাতি কেনার কাজও প্রক্রিয়াধীন। সর্বোচ্চ ছয়মাস সময়ের মধ্যে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রকে একটি পূর্ণাঙ্গ টেরিস্টোরিয়াল চ্যানেল হিসেবে শুরু করতে পারবো। এখন এটি স্যাটেলাইট চ্যানেল হিসেবে চালু আছে।

তিনি বলেন, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী ও বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম। দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দরের নগরী। যে বন্দর দিয়ে ৯০ শতাংশের বেশি পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়। এসব গুরুত্ব বিবেচনা করে এই অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালের ১৯ ডিসেম্বর বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র চালু করেছিলেন। ধীরে ধীরে তিনি এটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ টেলিভিশন কেন্দ্রে রূপান্তর করেছেন।

‘বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র থেকে খুব শিগগির বাণিজ্যিক ও ইংরেজি সংবাদও আমরা চালু করতে যাচ্ছি। এজন্য কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আরেকটি স্টুডিও এবং অডিটোরিয়াম নির্মাণসহ কিছু দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। এছাড়া, ছোটোখাটো যেসব সমস্যা রয়েছে গুরুত্ব অনুযায়ী আমরা সেসব দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করবো’ বলেন তথ্যমন্ত্রী।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –