মুক্ত ভাবনা
করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার ও আমাদের করণীয়
প্রকাশিত: ৩০ মার্চ ২০২০
সারাবিশ্বে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ অনেক আগেই মহামারী আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিন নতুন নতুন নাম যোগ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিলে। এই ভয়ঙ্কর অবস্থা থেকে উত্তরণের আপাতত কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
আমাদের দেশও এই ভাইরাসের ভয়াল থাবা থেকে রক্ষা পায়নি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত- আমাদের দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৮ জন, মারা গেছেন ৫ জন এবং এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ১৫ জন।
খুব সম্ভবত ভৌগোলিক কারণে আমরা বাড়তি একটি সুবিধা পেয়েছিলাম। সেটা হল, পৃথিবীতে করোনাভাইরাসে আমাদের দেশ আক্রান্ত হওয়ার সিরিয়ালে ছিল সবার শেষে। অর্থাৎ প্রস্তুতি নেয়ার জন্য, অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে আমরা সব চাইতে বেশি সময় পেয়েছিলাম। কিন্তু স্পষ্টতই আমরা এই সুযোগটার সদ্ব্যবহার করতে পারিনি। অনেকগুলো সিদ্ধান্ত আগে-পরে নেয়া হয়ে গেছে। অনেকগুলো সিদ্ধান্ত নেয়াও হয়েছে অনেক দেরিতে। যে কারণে বিদেশ ফেরতদের ব্যাপারে হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা যায়নি। এছাড়াও মানুষের মধ্যে শুরু থেকে উপযুক্ত জনসচেতনতা তৈরি করা যায়নি।
বিপুলসংখ্যক জনগণের মধ্যে তীব্র অসচেতনতা এবং অবহেলা তৈরি হলো যে কারণেঃ
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে এই ভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পরে, বাংলাদেশের একশ্রেণীর ইউটিউবার এবং ফেসবুকার, হাজার হাজার চ্যানেল খুলে বিপুল উদ্যমে প্রচার করা শুরু করল, এটি আল্লাহর গজব। বাংলাদেশের মানুষদের কিছুই হবেনা অথবা যারা প্রকৃত মুমিন-মুসলিম, তাদের কিছুই হবে না। এই ভাইরাসে শুধু নাস্তিক এবং কাফেররা ধ্বংস হবে। তারা এটাও বলে বেড়াতে শুরু করলো, যে ছোঁয়াচে রোগ এবং মহামারী বলতে আসলে কিছু নেই। শুধু যে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্যবহার করলো তাই না, বরং তারা কাগজের লিফলেট ছাপিয়ে সেগুলো বিতরণ করার ব্যবস্থা করল। যার ফলশ্রুতিতে পরবর্তীতে বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে, বক্তারা এইসব ফেসবুক-ইউটিউবে প্রচারিত বক্তব্যের অনুরূপে বক্তব্য দেয়া শুরু করলেন। আর নিমেষে সেটা বাংলাদেশের বিপুল পরিমাণ স্বল্পশিক্ষিত মানুষের কাছে পৌঁছে গেল। সাধারণ মানুষ মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতে শুরু করলেন। অসচেতনতার শুরুটা এখান থেকেই।
ওয়াজ মাহফিলের বক্তাদের সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে, তারা যদি সত্যি কথাটা বলতেন এবং মানুষজনকে সচেতন করার চেষ্টা করতেন, তাহলে পরিস্থিতি এখন অনেকটাই ভালো হতো। এর সাথে এটাও বলা যায়, সরকার যদি পরিপূর্ণভাবে এবং কঠোরহাতে গুজব নিয়ন্ত্রণ করতে পারত, তাহলে হয়তো দেশের মানুষের অসচেতনতার এই জায়গাটি তৈরি হওয়ার সুযোগই হত না । দেরিতে হলেও সরকারের কিছু উদ্যোগ এবং মাঠে সেনাবাহিনীর ব্যাপক তৎপরতার কারণে পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তবে দেশের উদ্ভূত এই জরুরি অবস্থা নিরসনকল্পে, সরকার আরো কিছু পদক্ষেপ নিতে পারে। যেমনঃ
১) এই সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা এবং লকডাউন এর কারণে সবচাইতে বেশী অসুবিধায় পড়েছেন নিম্নআয়ের এবং শ্রমজীবী মানুষেরা। মূলত যারা দিন আনে দিন খায়, তাদের এই মুহূর্তে উপার্জনের কোন ব্যবস্থা নেই। সে ক্ষেত্রে সরকার রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে, দেশের সকল সরকারি কর্মকর্তাদের একদিনের বেতন, এসব নিম্ন আয়ের মানুষদের মাঝে বন্টন করার সুব্যবস্থা করতে পারে। সে ক্ষেত্রে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হিসেবের বাইরে থাকবে।
২) টিসিবির মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য প্রত্যেকটি পাড়ায়-মহল্লায় ট্রাকে করে, অস্থায়ী পয়েন্টের মাধ্যমে সুলভ মূল্যে বিক্রি করার ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কেনার ব্যাপারটা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে মানুষজনকে অন্তত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষের জন্য বাজার পর্যন্ত যেতে হবে না।
৩) এই মহামারী কে অনেকেই একটা যুদ্ধের সাথে তুলনা করছেন। এটা আসলেই একটা যুদ্ধ, ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। বরং এই যুদ্ধ আরো বেশি মারাত্মক কারণ এখানে শত্রুরা দৃশ্যমান নয়। এই যুদ্ধে সবার আগে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাঁরা হচ্ছেন ডাক্তাররা। ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসেছে, তারা কর্ম ক্ষেত্রে যাওয়ার ব্যাপারে, লকডাউন এর কারণে পুলিশের এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে তাঁরা নিজেদের পরিচয় দেওয়ার পরেও তাদেরকে নাজেহাল হতে হয়েছে। এই ব্যাপারে প্রশাসনের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ। এই দুর্দিনে যারা জীবন বাঁচানোর কাজ করছেন তাঁরা তাঁদের কর্ম ক্ষেত্রে যাওয়ার ব্যাপারে যেন কোনরকম বাধা বিঘ্নের সম্মুখীন না হন। বরং প্রশাসনের পক্ষ থেকে উচিৎ, তাঁদেরকে নিরাপদে তাঁদের কর্মস্থলে নিয়ে যাওয়া এবং সেখান থেকে নিরাপদে আবার তাঁদের বাসায় ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করা।
৪) চিকিৎসকদের যেহেতু একেবারে সামনের সারি থেকে এই যুদ্ধ চালিয়ে নিতে হচ্ছে, সেহেতু তাঁদের নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রতি সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া উচিৎ। তাঁদের যাবতীয় মেডিকেল সরঞ্জাম এবং পার্সোনাল প্রটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট (PPE) এর পর্যাপ্ত সাপ্লাই অত্যন্ত দ্রুতগতিতে নিশ্চিত করা উচিৎ।
৫) ইতোমধ্যেই সংবাদমাধ্যমে এসেছে, বিভাগীয় পর্যায়ে বিভিন্ন জেলাগুলোতে সরকারি উদ্যোগে পিসিআর মেশিন (যেটা দিয়ে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ভাইরাস শনাক্ত করা যায়) পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এটি অবশ্যই সরকারের একটি অসাধারণ উদ্যোগ- কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, যে বেশিরভাগ হসপিটালে এই মেশিন চালানোর মত অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান নেই। যেখানে টেকনিশিয়ান অনুপস্থিত, সেখানে এই মেশিন বাস্তবক্ষেত্রে কোন কাজে আসবে না। কাজেই এই ব্যাপারে অন্তত একজন করে হলেও, পিসিআর মেশিনের সাথে একজন অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান হসপিটালগুলোতে নিয়োগ দেয়া প্রয়োজন।
৬) ইতোমধ্যে অনেক জায়গাতেই দেখা গেছে কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ এবং স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী, এই দুর্দিনে চরম অমানবিক এবং স্বার্থপর আচরণ করছে। তারা হসপিটাল তৈরিতে বাধা দিচ্ছে, অসুস্থ ব্যক্তির সেবার জন্য কোন সহযোগিতা করছে না, এমনকি মৃত ব্যক্তির দাফন কাফনের কাজেও তারা বাধা দিচ্ছে। সরকারের উচিৎ, এই ব্যাপারটি কঠোরভাবে নজরদারির আওতায় নিয়ে আসা এবং কোনো স্বার্থান্বেষী মহল বা ব্যক্তি যেন এ ধরনের কোন অমানবিক কাজে লিপ্ত থাকতে না পারে, সেই ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।
সবচেয়ে বড় কথা, এই যুদ্ধে জয়লাভ করার জন্য শুধু সরকার বা রাষ্ট্রযন্ত্রের দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না, আমাদের সবার সম্মিলিত অংশগ্রহণ প্রয়োজন। অনেক দেরিতে হলেও, বাংলাদেশের বেশ কিছু বড় বড় কোম্পানি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা তাদের সাধ্যমতো সরকারের সাথে সহযোগিতা করার চেষ্টা করছে। এটি অবশ্যই একটি আশার সংবাদ। তবে এটি শুধু কর্পোরেট লেভেলে বা সরকারের ঊর্ধ্বতন লেভেলে না থেকে, ছড়িয়ে দিতে হবে ব্যক্তি পর্যায় পর্যন্ত। অর্থাৎ আমাদের সেই মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের মতো, যার যা কিছু আছে, সেটা নিয়েই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। একমাত্র এভাবেই সম্ভব এই মহামারীর হাত থেকে বেঁচে যাওয়া। সবশেষে আল্লাহ সবাইকে ভালো রাখুন সুস্থ রাখুন এই প্রার্থনা
– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –- জলবায়ু সহনশীল দেশ গড়তে নারীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ
- বাংলা নববর্ষ উদযাপনে মানতে হবে ১৩ নির্দেশনা
- দায়িত্বহীনতার কারণে ঈশ্বরদীতে ট্রেন দুর্ঘটনা: রেলমন্ত্রী
- ‘সোনার বাংলা বিনির্মাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে’
- শিশুরাই হবে স্মার্ট বাংলাদেশের মূল কারিগর
- বিক্ষোভরত ইসরায়েলি জিম্মিদের স্বজনদের আটক করেছে পুলিশ
- বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত অস্ট্রেলিয়া
- জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে: পরিবেশমন্ত্রী
- ঈদ: সাড়ে ৮ ঘণ্টায় ট্রেনের ৩৫ হাজার টিকিট বিক্রি
- ‘বিএনপি ইসরায়েলের বিপক্ষে একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি’
- আগের সব ভিসিকেই পালাতে হয়েছে: বিএসএমএমইউর বিদায়ী ভিসি
- ঈদযাত্রায় দুর্ভোগ কমাতে ছুটি বাড়ানোর দাবি
- স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
- কোটি হিটের পরও অবিক্রিত ট্রেনের ছয় হাজার টিকিট
- চীনের সঙ্গে রাজনৈতিক-অফিসিয়াল যোগাযোগ বাড়াতে প্রস্তুত বাংলাদেশ
- হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্টের কাছে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ
- ভারতের কাছে পাঁচটি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ চায় বাংলাদেশ
- বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি
- এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির
- অতিরিক্ত সচিবকে ওএসডি, ৫ যুগ্ম-সচিবের বদলি
- ফুরিয়ে যাচ্ছে জিম্মি জাহাজের খাবার, ভিন্ন ব্যবস্থা করছে দস্যুরা
- ঈদযাত্রা: পঞ্চম দিনের ট্রেন টিকিট বিক্রি শুরু
- ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর স্বাধীনতা ঘোষণার ইতিহাস বিকৃত করা হয়’
- বিশ্ব নাট্য দিবসে পঞ্চগড়ে সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি
- পাকা বেদানা খুঁজে কিনবেন যে কৌশলে
- ‘সংস্কারের পাশাপাশি আগামী বাজেটে কর্মসংস্থানে নজর দেওয়া হবে’
- দিল্লী হাইকমিশনে স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত
- ৫ বিভাগে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির আভাস
- ‘গাড়ি কোথায়’ অ্যাপে ওঠে সড়কের চাঁদা, মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য
- গ্রামে দারিদ্র্যের হার কমলেও বেড়েছে শহরে
- যেসব অঞ্চলে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
- ‘ভ্রাম্যমাণ আদালতের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে’
- রাবি ভর্তি পরীক্ষার ‘বি’ ইউনিটের ফল প্রকাশ
- বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন
- সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে বিএনপি
- রংপুর বিভাগে মাদক বিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না
- ওয়ানডে সিরিজ নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হৃদয়
- আলোচনার মাধ্যমে ১১৭ বিজিপিকে ফেরানো হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭২.৫১ শতাংশ
- পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন করতে পুলিশকে আইজিপির নির্দেশ
- নতুন দামে সয়াবিন তেল মিলবে যেদিন থেকে
- বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্যোগ সরকারের
- এমআরটি-১ প্রকল্প বাস্তবায়নে পাতাল রেল যুগে পৌঁছাবে দেশ
- সাংবাদিকরা আমার খুবই আপনজন: ডা. দীপু মনি
- মিষ্টি না খেয়েও বাড়ছে ব্লাড সুগার? জেনে নিন কারণ
- চকবাজারে কেমিক্যাল গোডাউনের আগুন নিয়ন্ত্রণে
- এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি চট্টগ্রামের চিনির গুদামের আগুন
- শিক্ষার্থীদের ওপর অতিরিক্ত চাপ না দিতে আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
- আজ থেকে অফিস-আদালত-ব্যাংকে নতুন সময়সূচি
- পীরগঞ্জে দুই কাব্যগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন