কৃষক থেকে ধান গবেষক!
প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০১৮
ধৈর্য আর প্রচেষ্টা থাকলে নতুন কিছু আবিস্কার করা সম্ভব, তা-ই প্রমাণ করেছেন শেরপুরের নালিতাবাড়ীর চাটকিয়া গ্রামের কৃষক সেন্টু চন্দ্র হাজং। ধানের নতুন জাত উদ্ভাবনে পুঁথিগত বিদ্যা না থাকলেও এক যুগ ধরে একক প্রচেষ্টায় ১৯ ধরনের নতুন ধান উদ্ভাবন করেছেন তিনি। চেষ্টা চলছে আরো নতুন জাত উদ্ভাবনের।
উদ্ভাবিত নতুন ১৯ জাতের ধানের মধ্যে সাতটি ধানের নাম দিয়েছেন। এছাড়া শংকরায়নের মাধ্যমে দেশি বিলুপ্ত প্রজাতির ৩৫ প্রকার ধান একক বৈশিষ্ট্যে উন্নত করতে চাষাবাদ ও সেগুলোর বীজ তৈরি করে চলেছেন তিনি।
সেন্টুর দাবি, চিনিশাইল একরে ৩০ থেকে ৩৫ মণ ধান হয়। আর তার উদ্ভাবিত সেন্টুশাইল একরে ৫০ থেকে ৫৬ মণ ধান হয়। চিনিশাইল ধানের গাছ উচ্চতায় সাধারণত ১৬০ সেন্টিমিটার হয়। ফলে ঝড়ে বা বাতাসে ধানগাছ হেলে পড়ে। কিন্তু সেন্টুশাইল উচ্চতায় ১০০ থেকে ১২০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। তাই বাতাসে হেলে পড়ে না। এই ধান আষাঢ় থেকে ভাদ্রের ১৫ দিনের মধ্যে লাগাতে হয়। এ রকম প্রায় প্রতিটি নতুন উদ্ভাবিত ধানের সুফল রয়েছে।
সেন্টু হাজংয়ের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, অনেক কৃষক তার কাছে এসেছেন পরামর্শ নিতে। সামনে বোরো ধান চাষ করার প্রস্তুতি চলছে। তাই গ্রামের কৃষকরা সেন্টুর কাছে উন্নত জাতের বীজ নিতে এসেছেন। কেউবা চাহিদার তালিকা দিতে এসেছেন। এই বীজের বেশির ভাগই সেন্টু স্থানীয় কৃষকদের বিনামূল্যে দিয়ে সাহায্য করছেন।
সেন্টু হাজংয়ের বাড়ির উঠানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে নানা জাতের ধানের চারার মাটির টপ। সেন্টু বলেন, এই ধান গবেষণার কাজে ব্যাপক ধৈর্য্য প্রয়োজন। তবে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সহায়তা করলে আরো উন্নত জাতের ধান আবিষ্কার করতে পারবো। প্রতি বছর আমার উদ্ভাবিত ধান দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার কৃষকরা এসে নিয়ে যান। তারা চাষাবাদ করে লাভবানও হয়েছেন।
চাটকিয়া গ্রামের কৃষক সতেন্দ্র বর্মন ও রুপাকুড়া গ্রামের কৃষক খোরশেদ আলম বলেন, এ বছর আমন মৌসুমে সেন্টুশাইল ধান আড়াই একর জমিতে চাষ করেছিলেন তিনি। একরে ৪৫ মণ ধান পেয়েছেন। চিকন এই ধানের বাজারমূল্য মণপ্রতি এক হাজার ৫৫০ টাকা। তাই এই ধান চাষ করে লাভবান হওয়া সম্ভব হয়েছে।
নয়াবিলের ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুস আলী দেওয়ান বলেন, সেন্টু একজন আদর্শ কৃষক। তিনি একক প্রচেষ্টায় এক যুগ ধরে ১৯ প্রকারের নতুন ধান উদ্ভাবন করেছেন। তাকে সরকারি-বেসরকারিভাবে সহযোগিতা করতে পারলে, সে আরও ভালো করবে।
এ সম্পর্কে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আশরাফ উদ্দিন বলেন, কিছু দেশীয় ধানগুলো সিলেকশন পদ্ধতির মাধ্যমে জাত উন্নয়নের চেষ্টা করছেন সেন্টু। ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিনার গবেষকরা তার কর্মকান্ড পরিদর্শন করেছেন। ধান গবেষণায় তার অনেক আগ্রহ রয়েছে, আমরা তাকে সব প্রকার কারিগরি সহযোগিতা দেয়ার চেষ্টা করব।
২০০৫ সালে বেসরকারি সংগঠন ‘কারিতাস’ পাহাড়ি দরিদ্র কৃষকদের নিয়ে ‘জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ ও নতুন জাতের ধান উদ্ভাবন’ শীর্ষক তিনদিনের একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালার অংশ নেন তিনি। সেখানে ফিলিপাইনের একজন ধান গবেষক বিভিন্ন এলাকার ১৬ জন কৃষককে প্রশিক্ষণ দেন। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নতুন ধান সৃষ্টি করার জন্য কয়েক দফা চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। কিন্তু দমে যাননি বলে জানান তিনি।
ধান উদ্ভাবনের সামান্য অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ধৈর্য্য সহকারে নতুন ধানের জাত সৃষ্টি করার জন্য প্রতি বছর পরীক্ষামূলকভাবে মাটির টবে ধান শংকরায়ন করে তা বীজ হিসেবে সংরক্ষণ শুরু করেন। সেই বীজ পর্যায়ক্রমে চাষাবাদ করে ১৯ প্রকারের নতুন ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন।
সেন্টু হাজং বলেন, বেলা তিনটা থেকে পাঁচটার মধ্যে ধানগাছের অর্ধেক শীষ আসার সময় ব্রিডিং বা শংকরায়ন করতে হয়। প্রথমে একটা শীর্ষ ধানের মাঝখান দিয়ে আড়াআড়ি করে কাঁচি দিয়ে কাটতে হয়। প্রতিটা ধানের মাঝে ছয়টি রেণু থাকে। পরে কাটা ধান (মা ধান) থেকে সুঁচ দিয়ে যত্ন সহকারে রেণু বের করে পরের দিন সকাল ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে পরাগায়ন করার জন্য অন্য জাতের ধানের (বাবা ধান) রেণু এনে মা ধানের ওপর ঝাঁকিয়ে দিয়ে মোটা কাগজ দিয়ে বেঁধে রাখতে হয়।
উদ্ভাবিত জাতগুলো খুবই আবহাওয়া সহিষ্ণু। একেকটা জাত বিভিন্ন সময়ে পাকে। এরমধ্যে কতগুলো ১১০ দিনে, কতগুলো ১২০ দিনে, কতগুলো ১৩০ দিনে বা ১৩৫ দিনে পাকে। এ সময় শংকরায়ন করা ধানে পরিপুষ্ট চাল হয়। এই ধান বীজ হিসেবে সংরক্ষণ করেন সেন্টু। এভাবে ১২ বছর গবেষণা করে ১৯ প্রকারের নতুন ধানের জাত তৈরি করেছেন তিনি।
তখন সবচেয়ে ভালো ফসল ও ধান গাছের উচ্চতা বিবেচনা করে সেই ধানের বীজ সংরক্ষণ করেন। এইভাবে পর্যায়ক্রমে সেন্টু হাজং উদ্ভাবিত নতুন ধানের বীজ বৃদ্ধি করেছেন। একই পদ্ধতিতে বিলুপ্ত ৩৫টি দেশি জাতের ধানের বীজ পলিথিন, কৌটা ও ধানের ছড়া বেঁধে সংরক্ষণ করেছেন।
চিনিশাইল, তুলসিমালা, চাপাল, পাইজাম, বাইশমুঠি, হরি, স্বর্ণলতা ও রঞ্জিত ধানের সঙ্গে শংকরায়ন করে নতুন জাতের ধানের বীজ উদ্ভাবন করেছেন তিনি। তবে এখনও এইসব ধানের কোনো নাম দেয়া হয়নি।
সেন্টু হাজং মনে করেন, ফসলের মাটি ভালো রাখতে এবং ভালো ধান পেতে হলে জৈব পদ্ধতিতে তৈরি সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা উচিত। তাই তিনি বাজার থেকে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক কিনে ফসলে দেন না বললেই চলে। তিনি নিজের তৈরি করা জৈব সার ও কীটনাশক ব্যবহার করেন। এ জন্য কেঁচোর বিষ্ঠায় কম্পোস্ট সার ও নিমপাতা, মেহগনির বিচি, আতাফলের পাতা দিয়ে জৈব পদ্ধতিতে কীটনাশক তৈরি করেন। এই কীটনাশক ব্যবহারে ভালো ফসল যেমন পাওয়া যায়, তেমনি রাসায়নিক সার কেনার টাকাও বেচে যায়।
সেন্টু হাজংয়ের উদ্ভাবনের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৭ সালের ৬ মে ইস্টল্যান্ড ইনস্যুরেন্স কোম্পানি ঢাকা আর্মি গলফ গার্ডেনের হলরুমে তাকে ক্রেস্ট উপহার দেন এবং সন্মানীস্বরূপ এক লাখ টাকা প্রদান করে।
এছাড়াও সম্প্রতি ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিনার গবেষকরা সেন্টু হাজংয়ের কর্মকাণ্ড পরিদর্শন করে আরো উন্নত গবেষণার জন্য তার উদ্ভাবিত ধানের বীজ নিয়ে যান। গবেষকরা সেন্টুকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –- দ্বিতীয় সাক্ষাতেও গুজরাটকে হারাল দিল্লি
- খুন হওয়ার ভয়ে বাড়ি ছাড়লেন সালমান খান
- সব রোগ-ব্যাধি থেকে শেফা লাভের সূরা
- জিম্মি এক ইসরায়েলি-আমেরিকানের ভিডিও প্রকাশ করেছে হামাস
- কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ
- বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
- র্যাবের নতুন মুখপাত্র আরাফাত ইসলাম
- গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন
- গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ
- মরিশাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক
- এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাজ্য
- সব ডিসি-এসপির সঙ্গে ইসির বৈঠক আজ
- হিট অ্যালার্ট আরো তিনদিন বাড়লো
- বিআরটিএর অভিযানে ৪০৪ মামলায় ৯ লাখ টাকা জরিমানা
- ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
- পঞ্চগড়ে বৃষ্টির আশায় ইসতিসকার নামাজ আদায়
- তেঁতুলিয়া তীব্র তাপপ্রবাহে নলকূপে মিলছে না পানি
- বোদায় ট্রাক-ট্রাক্টর সংঘর্ষে নিহত ২
- গ্রীষ্মকালে শীতল ত্বক
- ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী
- মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরছেন ১৭৩ বাংলাদেশি
- হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ৪ নির্দেশনা
- চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা
- উপজেলা নির্বাচনে বিজিবি মোতায়েন করা হবে
- পুলিশের প্রতি ১১ নির্দেশনা
- প্রথম ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ২৬ প্রার্থী
- চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়ন অগ্রগতি ৫০ ভাগ
- শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা, তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে
- বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগ চেয়েছেন রাষ্ট্রপতি
- কারিগরির সনদগুলো কারা কিনেছেন বের করা হবে: ডিবিপ্রধান
- শেষ বলে ১ রানের নাটকীয় জয় পেল কলকাতা
- বৈশাখ আয়োজনে রঙ বাংলাদেশ
- আন্তর্জাতিক চাপে মুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশি নাবিকরা: নৌপ্রতিমন্ত্রী
- তাপমাত্রা ছুঁতে পারে ৪২ ডিগ্রি, ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা
- টিভি চ্যানেলের অবৈধ সম্প্রচারে আইনগত ব্যবস্থা: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
- ‘বনভূমি দখলে স্থাপিত রিসোর্টগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালবে’
- নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্তক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের
- শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা, তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে
- ‘আশ্রয় নেয়া মিয়ানমার সামরিক সদস্যদের দ্রুত ফেরত পাঠানো হবে’
- তুলার উৎপাদন বাড়াতে ১০ কোটি টাকার প্রণোদনা
- ইসরায়েলের এই বর্বরতা মেনে নেয়া যায় না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- এনএসআইর নতুন ডিজি হোসাইন আল মোরশেদ
- লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা
- ‘সব প্রাইভেট হাসপাতালের রোগনির্ণয় ফি নির্ধারণ করা হবে’
- পরীক্ষামূলক জিরা চাষে কৃষকের বাজিমাত
- জনপ্রিয় অভিনেতা রুমি মারা গেছেন
- ত্বকের দাগ দূর করবেন যেভাবে
- গরমকালে বাড়ি ঠান্ডা রাখার চীনা প্রাচীন কৌশল
- ‘যাকাত বোর্ড শক্তিশালী হলে দারিদ্র্য বিমোচন ত্বরান্বিত হবে’
- এবার ঈদে ৯০ লাখ মানুষ সড়কপথে ঢাকা ছাড়বে