• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

জোড়া-তালিতেও ফাটল ঠেকাতে পারছে না ২০ দলীয় জোট

প্রকাশিত: ৮ জানুয়ারি ২০২১  

টানাপোড়েন আর হতাশার জেরে জোড়া-তালি দিয়েও ঠেকানো যাচ্ছে না ২০ দলীয় জোটের ফাটল। শরিক দলগুলোর অভিযোগ, তাদের সঠিক মূল্যায়ন না করার কারণেই এই ভাঙন। জোট নেতারা জানান, শত চেষ্টা কিংবা প্রলোভনেও তারা আর ফিরবেন না।

জোট সূত্রে জানা গেছে, নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সম্প্রসারিত হয়ে ১৮ দলীয় জোটে রূপান্তরিত হয়। পরবর্তীতে ‘অধিক লাভের আশায়’ তা ২০ দলীয় জোটে উন্নীত হয়। কিন্তু সেই লাভের আশা নিরাশায় পরিণত হতে বেশিদিন লাগেনি। সন্দেহ ও অবিশ্বাসের দাবানলে শুরু হয় জোট ত্যাগ। যার চূড়ান্ত রূপ আজকের মেধা-নেতৃত্ব-অভিভাবক শূন্য ২০ দলীয় জোট।

২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জনের মধ্য দিয়ে ২০ দলীয় জোটের মধ্যে যে আস্থা ও বিশ্বাস সুদৃঢ় হয়েছিল তা ধীরে ধীরে নিজেদের ভুলেই ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। জনগণের আস্থা অর্জন না করতে পারায় এই জোটের সর্বশেষ শোচনীয় পরাজয় হয় একাদশ সংসদ নির্বাচনে। দেশের জনগণ জোট নেতাদের ছলচাতুরী ব্যালটের মাধ্যমে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে। মুখ থুবড়ে পড়ে তাদের সার্বিক সাংগঠনিক কার্যক্রম।

সূত্রটি আরো জানায়, ২০ দলীয় জোটের দীর্ঘদিনের মিত্র ইসলামী ঐক্যজোট, শেখ শওকত হোসেন নিলুর ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) অনেক আগেই জোট ত্যাগ করেছে। পরে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনকে কেন্দ্র করে বিএনপি ত্যাগ করেছে জেবেল রহমান গানির নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) ও খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজার নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি)। পিছিয়ে থাকেনি ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপিও)। ওই নির্বাচনের ফলাফল বর্জন করে তারা জোট ত্যাগ করে।

এমন অবস্থায় ড. অলি আহমদের নেতৃত্বে আরো ৩-৪টি দল নিয়ে তৈরি হয় জাতীয় মুক্তি মঞ্চ। এই মঞ্চ তৈরির পর প্ল্যাটফর্মটির শরীক এলডিপি, সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ও ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধানের জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপায় তুমুল ভাঙনের সৃষ্টি হয়। পরে কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান আলাদা দল না বানালেও সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমকে ত্যাগ করেন। কিন্তু এরপরও থেমে থাকেনি ভাঙনের জোয়ার। এলডিপি ও জাগপাতেও লাগে ভাঙনের অখণ্ড সুর।

আর ‘গলায়-গলায় পিরিতে’ থাকা ‘বিএনপির অক্সিজেন’ খ্যাত জামায়াতের সঙ্গেও জোটের দীর্ঘদিনের মধুচন্দ্রিমার অবসান ঘটেছে। সবমিলিয়ে ‘ভাঙনের খেলাঘর’-এ বাজছে করুণ সুর। যে সুরে তাল-লয় নেই। নেই জোট পুনঃযুক্ত হওয়ার সিকিভাগ সম্ভাবনা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপি তার পাপের ফসলই পেয়েছে। নিজেদের কর্মদোষে জোটকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলেছে। রেষারেষি, অবিশ্বাস আর দোলাচলে তাই ভেঙে গেছে তাদের নেতৃত্বাধীন ২০ দল, যা আর কখনই জোড়া লাগবার নয়।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –