• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

ঝাড়ুদার থেকে হোয়াটস্ অ্যাপের প্রতিষ্ঠাতা

প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

হোয়াটঅ্যাপের প্রতিষ্ঠাতা জান কৌম এখন শতকোটি টাকার মালিক। কেমন ছিলো তার শৈশব বা কিভাবে তিনি সফল হয়েছেন? অবশ্যই তার চলার পথ মসৃণ ছিলো না। একেবারেই শূন্য থেকে নিজেকে আজকের এই অবস্থানে নিয়ে এসেছেন। তা অবশ্যই জানতে ইচ্ছে করে সবার। চলুন জেনে নেয়া যাক তার সম্পর্কে আরো বিস্তারিত।  

জান কৌম ১৯৭৬ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউরোপের দেশ ইউকেরাইনের কাইভ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। দশজন ছেলে-মেয়ের মতো তার জীবনটা ছিলো না ছোটোবেলা থেকেই। বাবা কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে কাজ করতেন, মা ছিলেন গৃহিণী। খুব সহজ-সরল জীবনযাপন ছিলো তাদের। তবে সেই দেশে ছিলো চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা। এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে পরিবারের চলে আসেন যুক্তরাষ্ট্রে। ১৯৯২ সালে প্রথমে জান কৌম তার মা আর দাদীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। পরে তার বাবার যাওয়ার কথা থাকলেও ১৯৯৭ সালে তিনি অসুস্থ হয়ে মারা যান। এতে কৌমের পরিবারে চরম দুর্দশা নেমে আসে। তাছাড়া শরণার্থী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশে খাপ খাইয়ে নেয়াটাও ছিলো তার জন্য চ্যালেঞ্জের। 

এ সময় সংসার চালাতে তার মা একটি চাইল্ড-কেয়ার ফার্মে কাজ নেন। এতে যা পেতেন তা দিয়ে জীবনধারন প্রায় অসম্ভব ছিলো। ফলে ষোলো বছর বয়সে স্কুলে পড়ার সময় জান কৌমকে একটি স্থানীয় মুদি দোকানে ঝাড়ুদারের কাজ নিতে হয়। কিন্তু স্কুলে পড়ালেখার প্রতি চরম অনীহা ছিলো।সেসময়ে তিনি স্থানীয় দোকান থেকে কম দামে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বই কিনে পড়তেন। পড়া শেষে তিনি আবার এই দোকানেই বই বিক্রি করতেন। এভাবে তার আইটির প্রতি ঝুঁকে পড়েন তিনি। নিজেকে স্বশিক্ষিত ইঞ্জিনিয়ার ভাবতেন। সত্যি বলতে প্রকৃতপক্ষে একজন সার্টিফাইড ইঞ্জিনিয়ারের চেয়ে কোনো অংশে কম ছিলেন না তিনি।

১৮ বছর বয়সে স্কুলের পাঠ চুকিয়ে ভর্তি হন সান জ্যুসে স্টেট ইউনিভার্সিটিতে। লেখাপড়ার খরচ যোগাতে এসময় তিনি ‘গ্লোবাল একাউন্টস আর্নেস্ট অ্যান্ড ইয়ং’- এ নিরাপত্তা পর্যবেক্ষক হিসেবে চাকরি নেন। গ্লোবাল একাউন্টস আর্নেস্ট অ্যান্ড ইয়ং’ এ চাকরির সময়ে নতুন সার্চ ইঞ্জিন ইয়াহুতে তাদের বিজ্ঞাপন সেক্টরে নিরাপত্তা স্তরে কাজ করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। ইয়াহুতে কাজ করতে গিয়ে সেখানকার শুরুর দিকের এক কর্মকর্তার সঙ্গে পরিচয় হয়। তিনিই ছিলেন ব্রেইন অ্যাক্টন। ধীরে ধীরে দুজনে ভালো বন্ধু হন। কৌম আর ব্রেইন শুধু ভালো বন্ধুই ছিলেন না, দুজনের চিন্তা-ভাবনাও ছিলো অনেকটা একই। একদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করার সময় ইয়াহু থেকে জরুরি কল আসলে জান জানায় সে ক্লাসে আছে। তখন কর্তৃপক্ষ তাকে বিশ্ববিদ্যালয় অথবা ইয়াহু এর যে কোনো একটি বেছে নিতে বললে তিনি ইয়াহুকে বেছে নেন। 

জান কৌমের মতো ব্রেইন অ্যাক্টনেরও আইটি ও সামাজিক যোগাযোগের প্রযুক্তির প্রতি ছিলো প্রবল আগ্রহ। কিন্তু ইয়াহু তাদের আগ্রহ অনুযায়ী কাজ করার সুযোগ দিতে রাজি হয়নি। জান আর ব্রেইন দীর্ঘ নয়মাস একসঙ্গে কাজ করার পর ২০০৭ সালের দিকে তারা ইয়াহু থেকে বের হয়ে যান এবং পৃথিবী ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। জান কৌমের মোট সম্পদের পরিমাণ এগারো বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কিছু বেশি। বাংলাদেশি টাকায় নয় হাজার ছয়শত পঞ্চাশ কোটি টাকা। পৃথিবীর ১৫০ শীর্ষ ধনীর মধ্যে তার অবস্থান ১৩৬। 

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –