• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি: গবেষণা উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে: রাষ্ট্রপতি

প্রকাশিত: ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে সরকার গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ বিশেষত, ২০২৪ সাল পর্যন্ত কর্পোরেট ট্যাক্স মওকুফ, সফটওয়্যার ও আইটি সেবা রফতানি আয়ে ১০ শতাংশ নগদ প্রণোদনার উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে এ আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এবং তা বাস্তবায়ন করছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে তাল মেলাতে আমাদের তরুণ সমাজকে কাজে লাগাতে হবে। কারণ তারাই আমাদের সম্পদ। আমাদের মেধাবী তরুণরা বাইরে কাজ করছে, যথাযথ সুযোগ তৈরি করতে পারলে এরা দেশেই কাজ করতে পারবে।

দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় আইসিটি এক্সপো বেসিস সফট এক্সপো উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি। ট্রান্সফর্মিং লাইফ থ্রু ইনোভেশন স্লোগান নিয়ে আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) চার দিনব্যাপী এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। প্রদর্শনী চলবে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। 

রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, স্থানীয় সফটওয়্যার অর্থাৎ মেইড ইন বাংলাদেশ ধারণাকে উৎসাহিত করতে হবে। সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোকে আত্মনির্ভরশীল করে তুলতে দাতা সংস্থার সহায়তায় বাস্তবায়িত প্রকল্পে স্থানীয় সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোকে সুযোগ দিতে হবে। একইসঙ্গে স্থানীয় কোম্পানিগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে সরকারি ছোট বড় প্রকল্পে তাদের সুযোগ দিতে হবে। এ ব্যাপারে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগসহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়েরও এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি প্রযুক্তির অপব্যবহার, সাইবার ক্রাইম বিষয়ে সবাইকে কার্যকারী পদক্ষেপ নিতে ও সচেতন হতে এই আয়োজন আমাদের সহযোগিতা করবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম।

বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সহ-সভাপতি (অর্থ) ও বেসিস সফটএক্সপোর আহ্বায়ক মুশফিকুর রহমান এবং বেসিস সফটএক্সপো ২০২০'র প্লাটিনাম স্পন্সর ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড- ডিবিবিএল’র চেয়ারম্যান সায়েম আহমেদ।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বেসিস এর জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ফারহানা এ রহমান, সহ-সভাপতি (প্রশাসন) শোয়েব আহমেদ মাসুদ, পরিচালক তামজিদ সিদ্দিক স্পন্দন ও পরিচালক দিদারুল আলম।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী বলেন, বেসিসের এ আয়োজন সরকারের জ্ঞান ভিত্তিক সমাজ তৈরির কাজে এগিয়ে যাবে। দেশে তথ্য প্রযুক্তির প্রয়োগ বাড়ছে আর চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে আমাদেকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হতে হবে। বর্তমানে দেশের ৯৬শতাংশ পরিবারে মোবাইল ব্যবহার করছে। বাঙালিরা মেধাবী, বিশ্বের দরবারে বাঙালিরা তাদের মেধার পরিচয় রেখেছে। 

তিনি আরো বলেন, সফটওয়্যার রফতানির পরিমাণ বাড়বে। আইটিতে দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরি হলে তা দিয়ে দেশের বাইরে জনশক্তি রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন সম্ভব। আমাদের ভৌগলিক সুবিধা এবং তরুণ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আউটসোর্সিংয়েও বাংলাদেশ আরো ভালো করতে পারবে।  

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম  বলেন, সরকার ২০২১ সাল নাগাদ ডিজিটাল গভর্নেন্স বাস্তবায়ন, ২০ লাখ তরুণদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা, ২০২৪ সাল নাগাদ ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি করা এবং জিডিপিতে তথ্যপ্রযুক্তি খাত থেকে ৫ শতাংশ অবদান রাখার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করছে।  

বেসিস সফটএক্সপো ২০২০ প্রসঙ্গে বেসিসের সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, দেশের সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানগুলো দেশ বিদেশে অনেক বড় বড় প্রকল্পে নিজেদের সক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে। সেজন্য দেশের সব কাজ বিদেশিদের দিয়ে করা গেলেও তা স্থানীয় কোম্পানিদের দিয়েই বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্যথায় তথ্য নিরাপত্তা ঝুঁকিসহ দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। এজন্য সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানান তিনি।

বেসিস সফটএক্সপো ২০২০ এর আহ্বায়ক এবং বেসিসের সহ-সভাপতি (অর্থ) মুশফিকুর রহমান বলেন, প্রদর্শনী এলাকাকে দশটি জোনে ভাগ করা হয়েছে। ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ জোন এবং এক্সপেরিয়েন্স জোন বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সক্ষমতা তুলে ধরবে। এছাড়া রয়েছে ভ্যাট জোন, ডিজিটাল এডুকেশন জোন, ফিনটেক জোন, উইমেন জোন এবং বরাবরের মতো রয়েছে সফটওয়্যার সেবা প্রদর্শনী জোন, উদ্ভাবনী মোবাইল সেবা জোন, ডিজিটাল কমার্স জোন, আইটিইএস ও বিপিও জোন। থাকবে ৩০টিরও বেশি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সেমিনার, যেখানে বক্তব্য রাখবেন শতাধিক দেশি-বিদেশি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ। 

ডিবিবিএল-এর চেয়ারম্যান সায়েম আহমেদ বলেন, স্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অগ্রগতি ডিজিটাল বাংলাদেশের মূল ভিত্তি। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হচ্ছে স্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি খাতের নিরলস অবদানের কারণেই।

এবারের বেসিস সফটএক্সপোতে দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীদের জন্যে থাকছে বিটুবি ম্যাচমেকিং সেশন, যার মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা নিজেদের খুব সহজেই ব্যবসার প্রসার করতে পারবেন। এ বছর সুইডেন, জাপান, নেদারল্যান্ডস থেকে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল বিটুবি ম্যাচমেকিং সেশনে অংশ নেবে।

পাশাপাশি অন্য খাত থেকে বেসিস সদস্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সফলভাবে বিটুবি সেশন সম্পন্ন করা প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে শীর্ষ ১০টি প্রতিষ্ঠানকে বেসিস টপ টেন ডিজিটাল-রেডি কোম্পানিকে সম্মাননা প্রদান করা হবে। ২০০০-এরও বেশি শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আইসিটি ক্যারিয়ার ক্যাম্প। এছাড়া রয়েছে ৪৫টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ইনোভেটিভ প্রজেক্ট শো-কেসিং, যাদের মধ্যে প্রথম তিনটি ইনোভেটিভ প্রজেক্টকে পুরষ্কৃত করা হবে। থাকছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আউটসোর্সিং কনফারেন্স। দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতাদের অংশগ্রহণে সিএক্সও লিডারশিপ মিট। পাশাপাশি থাকছে মিউজিক্যাল কনসার্ট।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –