• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দৃষ্টিনন্দন মসজিদ (পর্ব-২)

প্রকাশিত: ২৯ নভেম্বর ২০১৮  

মসজিদ অতি পবিত্র স্থান। বলা হয় মসজিদ 'মহান আল্লাহর ঘর'। সে অনুসারে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা এই মসজিদের পবিত্রতা রক্ষা, মসজিদে ইবাদত বন্দেগিসহ যাবতীয় কাজে মসজিদের প্রতি নিবেদিত।

মসজিদকেন্দ্রিক সমাজব্যবস্থা ছিল মহানবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) এর আমলে। বিশ্বের এখনো বেশ কয়েকটি দেশে মসজিদভিত্তিক সমাজ উন্নয়ন ও অন্যান্য কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। বাংলাদেশে সুলতানি ও মুঘল আমলের মসজিদ নির্মাণশৈলী অত্যন্ত সুন্দর ও প্রশংসনীয়।

বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে এখনো সুলতানি আমলের মসজিদ ও মুঘল আমলের মসজিদ প্রাচীন কীর্তি হিসেবে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। প্রথম পর্ব শেষে ডেইলি বাংলাদেশের পাঠকদের জন্য ইন্টারনেট ঘেঁটে পৃথিবীর আরো পাঁচটি শ্রেষ্ঠ দৃষ্টিনন্দন মসজিদগুলো সম্পর্কে সংক্ষিপ্তকারে বর্ণনা তুলে ধরা হলো।

(৬) জহির মসজিদ, মালয়েশিয়া:

 

1.পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দৃষ্টিনন্দন মসজিদ (পর্ব-২)

এটি মালয়েশিয়ার কেদাহ রাজ্যে অবস্থিত। জহির মসজিদ মালয়েশিয়ার সবচেয়ে প্রাচীন একটি মসজিদ। ১৯১২ সালে সুলতান তাজউদ্দিন মুকাররম শাহ'র ছেলে টুংকু মাহমুদের অর্থায়নে এই মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়, যা ১৯১৫ সালে সমাপ্ত হয়। ইন্দোনেশিয়ার উত্তর সুমাত্রার আজিজি মসজিদের আদলে মূলত এই স্থাপত্য নির্মাণ করা হয়।

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের কথা মাথায় রেখে এই মসজিদটিতে পাঁচটি গম্বুজ স্থাপন করা হয়। এই মসজিদের প্রাঙ্গনে বার্ষিক কোরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়। জহির মসজিদের নকশায় লক্ষ্য করা যায় মালয়েশিয়ান, ভারতীয় ও মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাব।

(৭) ফয়সাল মসজিদ, পাকিস্তান:

 

2.পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দৃষ্টিনন্দন মসজিদ (পর্ব-২)

এটি পাকিস্তানের বৃহৎ মসজিদ, যেটি দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদে অবস্থিত। মসজিদটি ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তুর্কি স্থপতি ভেদাত ডালোকে এর নকশা করেন। তৎকালীন সৌদি বাদশাহ ফয়সাল বিন আব্দুল আজিজ পাকিস্তানে মসজিদটি নির্মাণের ইচ্ছা পোষণ ও সহযোগিতা করেন। তাই তার নামে নামকরণ করা হয় মসজিদটি। মসজিদটির আয়তন ৪৩,২৯৫ বর্গমিটার। মসজিদটির চারকোণে চারটি মিনার রয়েছে যার প্রতিটির উচ্চতা ৮০ মিটার (২৬০ ফুট)। মসজিদটি দেখতে অনেকটা মরুভূমির বেদুইনদের তাঁবুর মতো।

সারা পৃথিবীতে এটি ইসলামাবাদের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। মসজদটির প্রধান এলাকায় প্রায় ৭৪,০০০ মানুষ এবং সংযুক্ত বৃহৎ এলাকাটিতে প্রায় ২,০০,০০০ মানুষ একসঙ্গে নামাজ পড়তে সক্ষম। ১৯৮৬ সাল থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত মসজিদটি পৃথিবীর বৃহত্তম মসজিদ ছিল। পরবর্তীতে মরক্কোর হাসান-২ মসজিদ নির্মিত হলে 'ফয়সাল মসজিদ' তালিকায় নিজের প্রথম অবস্থানটি হারিয়ে ফেলে।

(৮) তাজ-উল মসজিদ, ভারত:

 

3.পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দৃষ্টিনন্দন মসজিদ (পর্ব-২)

এটি ভারতের সর্ববৃহৎ মসজিদ; একইসঙ্গে পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ এই মসজিদটি ভারতের ভোপালে অবস্থিত। মোগল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের শাসনামলে বাকি মোহাম্মদ খানের স্ত্রী নবাব শাহজাহান বেগম কর্তৃক ১৮৪৪ সালে নির্মাণকাজ শুরু হলেও আল্লামা মুহাম্মাদ ইমরান খান নদভী আজহারি ও মাওলানা সাইয়েদ হাসমত আলী সাহেব ১৯৮৫ সালে এর নির্মাণকাজ শেষ করেন। মসজিদটিতে তিনটি গম্বুজ ও দুটি সুউচ্চ মিনার রয়েছে। মসজিদটির আয়তন ৪,০০,০০০ বর্গমিটার বা ৯৮ একর। ‘তাজ উল মসজিদ’ -এ ১,৭৫,০০০ জন মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারে। অত্যন্ত কারুকার্যপূর্ণ এই মসজিদটি দেখতে বহু দূর-দূরান্ত হতে পর্যটকরা আসেন।

(৯) বাদশাহি মসজিদ, পাকিস্তান:

 

4.পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দৃষ্টিনন্দন মসজিদ (পর্ব-২)

মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেব এই মসজিদ নির্মাণ করেন। ১৬৭১-১৬৭৩ সালের মধ্যে পাকিস্তানের লাহোরে এই মসজিদ নির্মিত হয়। সে সময়ে এটি ছিল বিশ্বের সর্ববৃহৎ মসজিদ। সামনের সুবিশাল চত্বরটিসহ মসজিদের আয়তন প্রায় দুই লাখ ছিয়াত্তর হাজার বর্গফুট। মসজিদটিতে দৃষ্টিনন্দন আটটি মিনার রয়েছে যার প্রতিটির উচ্চতা ১৯৬ ফুট। আরো রয়েছে তিনটি গম্বুজ। লাল মার্বেল পাথর দিয়ে তৈরি মসজিদটি এতটাই সুদর্শন যে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটে এটি সহজেই স্থান করে নিয়েছে।

মসজিদটির রাজকীয় সিঁড়ির বাইশটি ধাপ পেরিয়ে তারপর মূল ফটকে পৌঁছতে হয়। আর মূল ফটকে ক্যালিওগ্রাফিতে মসজিদটির নাম লেখা আছে 'মসজিদ আবুল জাফর মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর বাদশাহ গাজী'। ভেতরে আর বাইরে মিলে সুবিশাল এই মসজিদটির ধারণ ক্ষমতা প্রায় এক লাখ মুসল্লি!

(১০) সুলতান মসজিদ, সিঙ্গাপুর:

 

5.পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দৃষ্টিনন্দন মসজিদ (পর্ব-২)

এটিকে সিঙ্গাপুরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মসজিদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মসজিদটি নির্মাণলগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত অপরিবর্তিত অবস্থায়ই রয়ে গেছে, অর্থাৎ যেভাবে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল, ডিজাইনে তার কোনো মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়নি। এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৮২৪ সালে এবং শেষ হয় ১৮২৬ সালে। সিঙ্গাপুরের বুগিস বাস স্টেশনে নেমে পূর্বে রাস্তা পার হলেই আরব স্ট্রিট। এই স্থান কামপোং গ্লাং নামেও পরিচিত।

দূর থেকেই দৃষ্টি কেড়ে নেবে মসজিদের সোনালী গম্বুজ,আর গম্বুজকে ঘিরে চারটি মিনার। সিঙ্গাপুরের ২০০ বছরের পুরনো মসজিদটির গঠনাকৃতি অসাধারণ।এর চাকচিক্য আর আভিজাত্য পর্যটকদের আকর্ষণ করে। তাই সিঙ্গাপুরে আসলে ২০০ বছরের পুরনো এ মসজিদ দেখতে ভোলেন না পর্যটকরা।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –