বঙ্গবন্ধু ও ধর্মনিরপেক্ষতা
প্রকাশিত: ১৪ অক্টোবর ২০২০
শেখ মুজিবুর রহমান রচিত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পাঠ করে আমরা অবগত হয়েছি, মুসলিম পরিবারের সন্তান হিসেবে বঙ্গবন্ধুর প্রিয় ধর্ম ছিল ইসলাম। কিন্তু অন্য সব ধর্মের প্রতিও তাঁর শ্রদ্ধা ছিল। এ কারণেই একজন যথার্থ বাঙালি ও একজন মুসলমান হওয়ার পথে কোনো দিন তিনি কোনো বিরোধের সম্মুখীন হননি।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর আওয়ামী লীগের ঘোষণাপত্রে শাসনতন্ত্রের মৌলিক বৈশিষ্ট্য অংশে ইসলাম ও সংখ্যালঘু সম্পর্কে বলা হয় : ক) জনসংখ্যার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের প্রিয় ধর্ম হলো ইসলাম। আওয়ামী লীগ এই মর্মে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, শাসনতন্ত্রে সুস্পষ্ট গ্যারান্টি থাকবে যে পবিত্র কোরআন ও সুন্নায় সন্নিবেশিত ইসলামের নির্দেশাবলির পরিপন্থী কোনো আইন পাকিস্তানে প্রণয়ন বা বলবৎ করা চলবে না। শাসনতন্ত্রে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর পবিত্রতা রক্ষার গ্যারান্টি সন্নিবেশিত হবে। সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষা সম্প্রসারণের জন্য পর্যাপ্ত বিধিব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। খ) সংখ্যালঘুরা আইনের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ সমান অধিকার ভোগ করবে। নিজেদের ধর্ম পালন ও প্রচার, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও পরিচালনা এবং নিজ নিজ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় শিক্ষাদানের ব্যাপারে সংখ্যালঘুদের অধিকার শাসনতান্ত্রিকভাবে রক্ষা করা হবে। স্বীয় ধর্ম ছাড়া অন্য যেকোনো ধর্ম প্রচারের জন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কোনো ব্যক্তিকে কর দিতে বাধ্য করা হবে না। নিজ ধর্মের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না হলে কোনো ব্যক্তিকে ধর্ম সম্পর্কীয় কোনো নির্দেশ গ্রহণ অথবা কোনো ধর্মীয় উপাসনা বা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার ব্যাপারে জোর করা হবে না। ধর্মীয় সহিষ্ণুতার এই আদর্শ বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের অন্যতম মৌল স্তম্ভ।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল শোষণহীন রাষ্ট্র ও সমাজ গড়ে তোলা। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি ভাষণে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে। আর তার ভিত্তি কোনো ধর্মীয়ভিত্তিক হবে না। রাষ্ট্রের ভিত্তি হবে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা (পরবর্তীকালে সংযোজিত হয়েছিল জাতীয়তাবাদ)।’ ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তি ছিল অনিবার্য। ভারতবর্ষের দাঙ্গার অভিজ্ঞতা বঙ্গবন্ধুর ছিল। ধর্মের নামে হানাহানির ঘটনা দেখেছেন তিনি। পাকিস্তানি শাসনামলে ধর্মকে সামনে রেখেই পাকিস্তানিরা বাঙালিকে শাসন ও শোষণ করেছে। এ জন্য সব ধর্মকে শ্রদ্ধা করলেও বঙ্গবন্ধু ধর্মান্ধতাকে ঘৃণা করতেন। ধর্মকে মেনে নিয়ে উদারনৈতিক চিন্তাধারায় অভ্যস্ত হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। সব ধর্মের সহাবস্থান এবং বদ্ধ চিন্তার মুক্তিতেই ধর্মনিরপেক্ষতা পূর্ণতা পায়।
১৯৭২ সালের ১২ অক্টোবর খসড়া সংবিধান প্রসঙ্গে জাতীয় সংসদে বঙ্গবন্ধু যে ভাষণ দেন তাতে ছিল : ‘আর হবে ধর্মনিরপেক্ষতা। ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। হিন্দু তার ধর্ম পালন করবে; মুসলমান তার ধর্ম পালন করবে; খ্রিস্টান, বৌদ্ধ- যে যার ধর্ম পালন করবে। কেউ কারো ধর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না, বাংলার মানুষ ধর্মের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ চায় না। রাজনৈতিক কারণে ধর্মকে ব্যবহার করা যাবে না। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ধর্মকে বাংলার বুকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। যদি কেউ ব্যবহার করে, তাহলে বাংলার মানুষ যে তাকে প্রত্যাঘাত করবে, এ আমি বিশ্বাস করি।’ ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর আবার তিনি বলেন : ‘জনাব স্পিকার সাহেব, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষের ধর্মকর্ম করার অধিকার থাকবে। আমরা আইন করে ধর্মকে বন্ধ করতে চাই না এবং করবও না।… ২৫ বৎসর আমরা দেখেছি, ধর্মের নামে জুয়াচুরি, ধর্মের নামে শোষণ, ধর্মের নামে বেইমানি, ধর্মের নামে খুন, ধর্মের নামে ব্যভিচার- এই বাংলাদেশের মাটিতে চলেছে। ধর্ম অতি পবিত্র জিনিস। পবিত্র ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা চলবে না। যদি কেউ বলে যে, ধর্মীয় অধিকার খর্ব করা হয়েছে, আমি বলব, ধর্মীয় অধিকার খর্ব করা হয়নি। সাড়ে সাত কোটি মানুষের ধর্মীয় অধিকার রক্ষা করার ব্যবস্থা করেছি।’ (বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, পৃ. ৪৬)
ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসার এক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমাদের দেশে পাকিস্তান আমলে ইসলামবিরোধী বহু কাজ হয়েছে। রেসের নামে জুয়াখেলা রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত ছিল, আপনারা আলেম সমাজ কোনো দিন এর প্রতিবাদ করেননি। ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সাহায্যে প্রকাশ্যে জুয়াখেলা চলত, এগুলো বন্ধ করার কোনো আন্দোলন আপনারা করেননি; কিন্তু ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করবার কথা বারবার বলেছেন। ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনায় জুয়া ও মদকে যে হারাম ঘোষণা করতে হয়, সেটা আপনারা জানতেন; কিন্তু আপনারা এগুলোর বিরুদ্ধে কিছু বলেননি। আমি ক্ষমতায় এসে প্রথমেই ঘোড়দৌড় বন্ধ করে দিয়েছি, পুলিশকে তৎপর হতে বলেছি শহরের আনাচে-কানাচে থেকে জুয়াড়িদের আড্ডা ভেঙে দিতে। আমি ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলি, কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষতা ধর্ম বিরোধিতা নয়। আমি মুসলমান, আমি ইসলামকে ভালোবাসি। আপনারা আমাকে সাহায্য করুন, দেখবেন, এ দেশে ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড কখনোই হবে না।’ বাংলাদেশ টেলিভিশনে অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন শরিফের আওয়াজ শুনতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু, মুসলমানরা খুশি হলে মিলাদ পড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি। আর মাদ্রাসা শিক্ষার বরাদ্দ কখনো বাতিল করেননি তিনি।
মূলত বঙ্গবন্ধু হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে, জাতির জনক হিসেবে ইসলামের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বিধানে অন্য সব ধর্মের সহাবস্থান নিশ্চিত করেছিলেন। প্রথাবদ্ধ, ধর্মশাসিত সংস্কারাচ্ছন্ন জীবন তিনি পছন্দ করেননি। অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গড়ার জন্য ধর্মের গণ্ডি ভেঙে প্রগতির পথে অগ্রসর হওয়ার পক্ষে ছিল তাঁর নীতি-আদর্শ। বাঙালি সংস্কৃতির চিরায়ত রূপটিকে ধরতে চেয়েছেন তিনি তাঁর রাষ্ট্র পরিকল্পনায়, সংবিধান প্রণয়নে। আর এখানেই বঙ্গবন্ধু চিরস্মরণীয় একটি নাম।
– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –- নভেম্বরেই যমুনায় পৃথক রেলসেতুর ভিত্তি স্থাপন: রেলমন্ত্রী
- আধুনিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক বাংলাদেশের রূপকার শেখ হাসিনা
- বঙ্গবন্ধুকন্যা থেকে জননেত্রী
- রংপুরে সড়ক দূর্ঘটনায় কলেজ ছাত্রের মৃত্যু
- ‘বিভেদ ভুলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে’
- উৎসবের আমেজে ভোটগ্রহণ চলছে নীলফামারীর টুপামারী ইউপিতে
- রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মানবিকতার পরিচয় দিয়েছে: তিরিঙ্ক
- দেশে যেকোনো নির্বাচন এলেই সরব হয় বিএনপি
- আত্মরক্ষার জন্য শক্তিশালী সশস্ত্রবাহিনী গড়বে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
- মুসলিম দেশগুলোতে হস্তক্ষেপ বন্ধ করার আহ্বান রুহানির
- ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মন্তব্যে বিরক্ত বিএনপি
- ‘ক্যান্সার’ আক্রান্ত মেয়ে সাফা কবির!
- বিভিন্ন ধর্মের দেব-দেবী সম্পর্কে ইসলাম যা বলে
- নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে সরকারের উপর দোষ চাপাচ্ছে বিএনপি: কাদের
- মুজিববর্ষ উদযাপনে বাংলাদেশে আসবেন এরদোয়ান
- ৯৫ হাজার নতুন শ্রেণিকক্ষ পাবে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা
- ভবিষ্যতে আর এমন ভুল না করার প্রতিজ্ঞা করেছেন সাকিব
- আজ স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করবেন প্রধানমন্ত্রী
- নীলফামারীর টুপামারী ইউনিয়নের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ আগামীকাল
- নীলফামারী পৌরসভার উদ্যোগে জাতীয় স্যানিটেশন মাস উদযাপন
- কুড়িগ্রামে গলায় ফাঁস দিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা
- তেঁতুলিয়ায় মাটির নিচে লুকানো ৩ লক্ষ টাকার মালামাল উদ্ধার, আটক ৪
- ঠাকুরগাঁওয়ে জুট মিলে অগ্নিকাণ্ড: কোটি টাকার উৎপাদিত পণ্য ভস্মীভূত
- ঠাকুরগাঁওয়ে ১৫ হাজার পিস ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার
- কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের ৫৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন
- কুড়িগ্রামে ভষ্মিভূত করা হলো অচল ঘোষিত দেড় কোটি টাকার স্ট্যাম্প
- লালমনিরহাটে ট্রেনে কাটা পড়ে অজ্ঞাত যুবকের মৃত্যু
- প্রতি মাসেই মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা দেবে সরকার
- বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখে বিশ্বের অনেক দেশ ইমপ্রেস হয়- ভূমিমন্ত্রী
- পোল্ট্রি-ডেইরি শিল্পের সুরক্ষায় নীতিমালা তৈরি করছে সরকার
- পঞ্চগড়ে হচ্ছে দেশের তৃতীয় চায়ের নিলাম বাজার
- ট্রাম্প ও তার স্ত্রীর সুস্থতা কামনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী
- বিশ্ব মিডিয়ায় ভাইরাল ব্যাট হাতে সানজিদার হলুদের ছবি
- ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল
- এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হতে পারে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে
- নীলফামারীতে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন শুরু
- কেউ অপরাধ করলে তাকে ছাড় দেয়া হবে না- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
- ১৫ অক্টোবর পঞ্চগড়-রাজশাহী রুটে নতুন ট্রেনের উদ্বোধন
- কুড়িগ্রামে হাঁসের খামারে পাল্টে গেছে আজাদের ভাগ্য
- ‘অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণ করেছেন শেখ হাসিনা’
- গ্রামকে শহরে রূপান্তর করার জন্য সরকার কাজ করছে: পলক
- গ্রামীণ সড়ক রক্ষণাবেক্ষণসহ মজবুত করে তৈরির নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
- জলঢাকায় মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে গণগ্রন্থাগার উদ্বোধন
- নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই উপ-নির্বাচনে অংশ নিয়েছে বিএনপি
- ব্যবসার প্রসার ও উন্নতির জন্য বড় ভূমিকা রাখবে প্রযুক্তি
- পঞ্চগড় থেকে বাংলাবান্ধা পর্যন্ত হবে নতুন রেললাইন- রেলপথমন্ত্রী
- মানুষ যেন ভাল থাকে সেই কাজটুকু যেন করতে পারি- প্রধানমন্ত্রী
- সোনার বাংলা বিনির্মানে নিজেদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে: স্পিকার
- মমতাকে দুর্গাপূজার উপহার পাঠালেন শেখ হাসিনা
- জাতীয় কন্যাশিশু দিবস আজ

