বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন: স্বর্ণাক্ষরে লেখা ঐতিহাসিক দিন
প্রকাশিত: ১০ জানুয়ারি ২০২১
শেখ মাজেদুল হক
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলেন। নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর হাজার ১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্ম হলো। বাঙালি স্বাধীনতা লাভ করল। কিন্তু এদেশের সাত কোটি বাঙালি কারো মনেই শান্তি এবং স্বস্তি রইল না ।কারণ তাদের নেতা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু জাতির জনক তখনও পাকিস্তান কারাগারে বন্দি দশায়।সকলের একই আকুতি, একই প্রশ্ন কবে ফিরবে নেতা? নেতা কি আসতে পারবে স্বাধীন বাংলাদেশে? আকাশ- বাতাস মাঠ -নদী গ্রহ-নক্ষত্র বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে বঙ্গবন্ধুর ফিরে আসার জন্য আকুল আহ্বান, আকুতি কবে আসবে নেতা? নেতার বন্দীদশা থেকে মুক্তির জন্য নিস নিস ধর্ম অনুযায়ী সকলেই প্রার্থনা করতে শুরু করলো ।গ্রামের আবাল বৃদ্ধ বনিতা সকলেই একই প্রশ্ন নেতা কবে আসছে ?কখন আসছে? কিভাবে আসছে নেতাকে কখন দেখবো? অবশেষে ১৯৭২সালের ৮ ই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তান সরকার মুক্তি দিতে বাধ্য হলো।
পাকিস্তান থেকে লন্ডন এবং ভারত হয়ে যখন বাংলাদেশের সীমানায় বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী বিমান তেজগাঁও বিমান বন্দরে সেই মহানায়কের প্রত্যাবর্তন তখন পাইলট নিচে বিমান নামাতে সুযোগ পেল না ,কারণ এতটাই লোকে লোকারণ্য তখন বিমানসেবিকা বলল বঙ্গবন্ধুকে আপনাকে মানুষ কতটা ভালবাসে, শুধু মাত্র আপনার অপেক্ষাতে আজ দেখুন বিমানবন্দর জনসমুদ্র হয়ে গেছে। বিমানবন্দরে নেতা নামার সঙ্গে সঙ্গে সকলেই আবেগাপ্লুত হয়ে অপরকে জড়িয়ে ধরল। নেতাকে দেখে সকলেই আনন্দ অশ্রু সিক্ত হলো। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হলো সারাদেশ আকাশ বাতাস। মাইকে প্রচারিত হলো -আমাদের প্রিয় নেতা আমাদের মাঝে এসে গেছে। স্লোগান উঠলো-আমার নেতা তোমার নেতা- শেখ মুজিব শেখ মুজিব। স্বাগতম হে জাতির পিতা ।তিনি ছিলেন আমাদের নেলসন ম্যান্ডেলা।
শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন দুর্দান্ত সংগঠক এবং পাকিস্তানি শাসনের কড়া সমালোচক।প্রতিবাদ করেছিলেন পরবর্তীকালে আইয়ুব খানের সামরিক একনায়কতন্ত্রের। তিনি পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্য ও অপরাজনীতির বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়েছিলেন। তার ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা পাকিস্তান সরকারকে আতঙ্কিত করেছিল এবং তারা বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দিয়েছিল।কিন্তু বাঙালিরা তার দেশপ্রেমের উপর প্রবল আস্থা রেখেছিল এবং তাকে অত্যন্ত ভালবাসত। প্রগতিশীল রাজনীতিবিদরাসহ সর্বদলীয় ছাত্র ইউনিয়নও তাকে আন্তরিকভাবে সমর্থন করেছিলেন।
এরপর তীব্র আন্দোলনের ফলে পাকিস্তানিরা তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।তবে এরই মধ্যে আইয়ুব খান সেনা প্রধান ইয়াহিয়া খানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিলেন।১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ১৬৭ টি আসনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলে,ফলশ্রুতিতে পুরো বিশ্ব বঙ্গবন্ধুকে অবিসংবাদিত নেতা হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু পাকিস্তানি শাসক চক্র ক্ষমতা স্থানান্তর করতে প্রস্তুত ছিল না। তাদের পিছনে ছিল ষড়যন্ত্রকারী জুলফিকার আলী ভুট্টো। একাত্তরের ২৫ শে মার্চ রাতে হাজার হাজার নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছিল। রাজনৈতিক কর্মী, ছাত্র এমনকি পথচারীকেও গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু প্রস্তুত হয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
একাত্তরের ১৬ ই ডিসেম্বর স্বাধীনতা অর্জন করি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে।এই সময় বঙ্গবন্ধু বন্দী অবস্থায় ছিলেন। কিন্তু বিশ্ব জনমত এবং তার উদার চিন্তাচেতনায় পাকিস্তানিরা তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিল।
মহান নেতা প্রথমে লন্ডনে গিয়েছিলেন যেখানে প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ তাকে স্বাগত জানান। তারপরে তিনি নয়াদিল্লিতে চলে গেলেন, যেখানে তিনি তার পাশে ইন্দিরা গান্ধীর সাথে বিমানবন্দরে বক্তৃতা দিয়েছিলেন এবং শ্রোতাদের মন্ত্রমুগ্ধ করেছিলেন।
জননন্দিত শেখ মুজিব সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দাঁড়িয়ে তার ঐতিহাসিক ধ্রুপদী বক্তৃতায় বলেন, যে মাটিকে আমি এত ভালোবাসি, যে মানুষকে আমি এত ভালোবাসি, যে জাতিকে আমি এত ভালোবাসি, আমি জানতাম না সে বাংলায় আমি যেতে পারব কিনা। আজ আমি বাংলায় ফিরে এসেছি বাংলার ভাইদের কাছে, মায়েদের কাছে, বোনদের কাছে। আমার বাঙালি আজ মানুষ। বাংলা আমার স্বাধীন, বাংলাদেশ আজ স্বাধীন।’
১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন সদ্যস্বাধীন বাঙালি জাতির কাছে ছিল একটি বড় প্রেরণা। তার এই প্রত্যাবর্তনকে আখ্যায়িত করা হয়েছিল ‘‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা হিসেবে”। দীর্ঘ সংগ্রাম, ত্যাগ-তিতিক্ষা, আন্দোলন ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নেয়ার প্রশ্নে বাঙালি জাতি যখন কঠিন এক বাস্তবতার মুখোমুখি তখন পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তিনি তাকে মুক্ত করার জন্য তাঁর লোককে ধন্যবাদ জানিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছেন যে আমরা শেষ পর্যন্ত একটি স্বাধীন জাতি। একজন ব্যক্তি, বাঙালি এবং মুসলমান কেবল একবার মারা যায়, তিনি মন্তব্য করেছিলেন। মৃত্যুর কোনও ভয় তাঁর ছিল না। এরপর তিনি তার যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির পুনর্গঠনের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা শুরু করেন।মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সর্বস্তরের মানুষেরা কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্য প্রার্থনা করেছিলেন এবং স্বাধীনতার জন্য বীরত্বপূর্ণ লড়াই করেছিল। আমরা বাঙালিরা পুরো বিশ্বকে প্রমাণ করে দিয়েছিলাম যে আমরা একজন বীরের জাতি এবং যে নেতা আমাদের আত্মবিশ্বাসী ও ঐক্যবদ্ধ জাতিতে পরিণত করেছিলেন, তিনি বঙ্গবন্ধু ছাড়া আর কেউ নন। আমাদের ক্ষয়ক্ষতি বড় হলেও আমরা একটি মুক্ত জাতি হিসেবে বিশ্বের কাছে পরিচিত হয়েছি। আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম আর উপনৈবেশিক নাগরিক হবে না।
তিনি সেই নিঃস্বার্থ নেতা, যিনি তাঁর বাঙালি ভাই-বোনদের জন্য একটি স্বাধীন দেশের জন্য পুরো জীবন লড়াই করেছিলেন।পদ্মা,যমুনা ও মেঘনা যতদিন প্রবাহমান থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধুকে সমগ্র বিশ্ব স্মরণে রাখবে। বঙ্গবন্ধু হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি উনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে অতল বিনম্র শ্রদ্ধা।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, মার্কেটিং বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।
– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –- মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর ঘর উপহার পাচ্ছে নীলফামারীর ৬৩৭ পরিবার
- ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
- শেয়ারবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে
- সর্বোচ্চ গুরুত্ব স্বাস্থ্যে, আগামী বাজেটে দশ খাতে অগ্রাধিকার
- জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে যাবে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা চিঠি
- বাইডেন কমলাকে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন
- ‘২০৩৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশ হবে বিশ্বের ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ’
- পার্বতীপুরে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
- কুড়িগ্রামে পুলিশি অভিযানে গ্রেপ্তার ৯
- শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বিশ্বে অনুকরণীয়- খালিদ
- লালমনিরহাটে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে
- ‘জয়বাংলা পল্লী’তে ঠাঁই পাচ্ছে ৪৭৬৬ পরিবার
- বৃদ্ধাকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, ভয়ঙ্কর সেই গৃহকর্মী গ্রেফতার
- এশিয়ার প্রথম মসজিদ লালমনিরহাটের ‘জামেয়-আস সাহাবা’
- লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে উত্তরবঙ্গে চা উৎপাদনে রেকর্ড
- করোনায় আরো ১৬ মৃত্যু, শনাক্ত ৪ শতাংশের নিচে
- পার্বতীপুরে করোনাকালে মাদরাসায় নির্বাচন, এলাকায় ক্ষোভ
- কুড়িগ্রামে নিখোঁজ মাকে খুঁজছে সন্তানরা
- দিনাজপুরে কৃষককে হত্যা: পরিবারকে পুড়িয়ে মারার হুমকি!
- বেরোবি ভিসিকে ক্যাম্পাসে ফেরাতে শিক্ষার্থীদের গণস্বাক্ষর কর্মসূচি
- শাহজালাল বিমানবন্দর হবে দক্ষিণ এশিয়ার কেন্দ্রবিন্দু
- বিনাশুল্কে বাংলাদেশি ৮২৫৬ পণ্য যাচ্ছে চীনের বাজারে
- ৪’শ কোটি টাকায় প্রতিবন্ধীদের জন্য ক্রীড়া কমপ্লেক্স করবে সরকার
- দেশে করোনার টিকাদান শুরু হবে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
- পীরগঞ্জে ডিএনএ পরীক্ষায় সাত বছর পর ধরা পড়ল খুনি
- শীতে উজ্জ্বল ত্বক পেতে দুধে মেশান এই উপাদান
- বাংলাদেশে পৌঁছেছে ভারতের উপহারের ২০ লাখ টিকা
- স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলে দেওয়া জরুরি
- ডিজিটাল বাংলাদেশের স্থপতি সজীব ওয়াজেদ জয়
- আওয়ামী লীগের উপকমিটির সদস্য হলেন উর্মিলা শ্রাবন্তী কর
- বিএনপিকে ইন্ধন জোগাচ্ছে জামায়াত-শিবির
- উন্নয়ন দেখতে বাংলাদেশে আসতে চান বেলজিয়ামের রাজা ফিলিপ
- বাংলাদেশ ও বাঙালির অনুপ্রেরণার উৎস বঙ্গবন্ধু- রাষ্ট্রপতি
- ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আরো পরিচ্ছন্ন-স্মার্ট হবে’
- করোনা: ৬০ হাজারের বেশি মৎস্য চাষি পাচ্ছেন আর্থিক সহায়তা
- কর্মচাঞ্চল্যতা ফিরেছে হিলি স্থলবন্দরে
- উপকারভোগীর মোবাইলে ভাতার টাকা পাঠানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
- গঙ্গাচড়ায় দুস্থদের মাঝে উইন্টার অ্যান্ড কভিড-১৯ প্যাকেজ বিতরণ
- শুরুতেই ক্যারিবীয় দুর্গে মুস্তাফিজের আঘাত
- প্রধানমন্ত্রীর উপহার ‘স্বপ্নের নীড়’ পাচ্ছে ১০৮৬ পরিবার
- আগামী মাসে আসছে প্রণোদনার দ্বিতীয় প্যাকেজ
- `বঙ্গবন্ধু` চলচ্চিত্রটি হবে ঐতিহাসিক দলিল- তথ্যমন্ত্রী
- হজ ও ওমরা ব্যবস্থাপনায় নতুন আইন করছে সরকার
- ভারতের পেঁয়াজে আগ্রহ নেই ক্রেতাদের
- দিনাজপুরে সরিষার হলুদ হাসিতে কৃষকের স্বপ্ন
- পঞ্চগড়ে ঘোড়ার মাংস বিক্রির অপরাধে আটক-২
- দিনাজপুরে বাড়ি পাচ্ছে ৪৭৬৪ ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার
- ৪২৫ টাকায় পাওয়া যাবে করোনা ভ্যাকসিন: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
- ঠাকুরগাঁওয়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও সাঁওতালদের পুষনা উৎসব
- জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ৮.৫১ শতাংশ, বৈদেশিক কর্মসংস্থান হবে ৩৫ লাখ

