• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

বেরোবিতে ব্যাংকের নানা অব্যস্থাপনায় ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষার্থীদের

প্রকাশিত: ৩ ডিসেম্বর ২০১৯  

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষে মেঘনা ব্যাংকে নানা অব্যস্থাপনার কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ভর্তিচ্ছুরা।  

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তহীনতা ও অব্যস্থাপনাকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, বিগত বছরগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভর্তি এবং ফরম ফিলাপের সময় জনতা ব্যাংকের অস্থায়ী শাখায় টাকা জমা নেয়া হতো। কিন্তু চলতি বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেঘনা ব্যাংকের নতুন একটি শাখা খোলা হয়েছে।  ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রমের সিংহভাগ টাকা জমা নেয়া হচ্ছে মেঘনা ব্যাংকে। 

এতে করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি জায়গায় লভ্যাংশ সরকারের কাছে না গিয়ে ব্যক্তি মালিকানার কাছে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এছাড়া টাকা জমা দেয়ার সময় ভর্তি রশিদে ভুল, বেশি টাকা নেয়াসহ নানা অব্যস্থাপনা ও অসঙ্গতি দেখে ক্ষব্ধু ভর্তিচ্ছুরা।

পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হতে আসা এক শিক্ষার্থীর ভর্তি রশিদে ৬ হাজার ২৭০ টাকা লেখা থাকলেও তার কাছে ৯ হাজার টাকা নেয়া হয়। পরে ভর্তির ফরমসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে গেলো আরো একটা রশিদের কথা বলে বিভাগে দায়িত্বরত শিক্ষক-কর্মকর্তারা।  ব্যাংকে এসে  বিষয়টি জানালে বাকি টাকা ফেরত দিয়ে বলেন ভুলবশত বেশি টাকা নেয়া হয়েছে। 

এদিকে ‘ডি’ ইউনিটের রসায়ন বিভাগে ভর্তি হতে আসা মার্জিয়া জান্নাত মোহনার ভর্তি টাকা জমা দেয়ার রশিদে সি ইউনিট লেখা। আরো এক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাকে ডিপার্মেন্ট, জনতা ব্যাংক ও মেঘনা ব্যাংকে টাকা জমা দেয়া জন্য বলা হয়। কোন বিভাগে কত টাকা দিবো এ নিয়ে বিপাকে পড়েছিলাম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. গাজী মাজহারুল আনোয়ার বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ব সরকারি ব্যাংক থাকা সত্ত্বেও বেসরকারি ব্যাংক না প্রতিষ্ঠা করার জন্য এরইপূর্বে আমরা শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে ২ বার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছিলাম কিন্তু এর কোনো সদুত্তোর পাইনি। বর্তমানে ব্যাংকে অব্যস্থাপনার বিষয়গুলোর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভালো বলতে পারবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি এবং রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তরিকুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদয় খরচ বহন করে সরকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ সরকারি ব্যাংকে না রেখে বেসরকারি ব্যাংকে রাখা হয় তাহলে এর লভ্যাংশ সরকার না পেয়ে পাবে ব্যাক্তি। রাষ্ট্রের টাকা ব্যক্তির পকেটে যেতে পারে না। এখানে একটি ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে। 

তিনি আরো বলেন, এর আগে রাষ্ট্রায়ত্ব জনতা স্থায়ী কোনো জায়গা না দেয়ায় যেখানে সেখানে টাকা জমা নিয়েছে। এজন্য কিছুটা জটলা তৈরি হয়েছিল। এ বছর সেই অযুহাতে জনতা ব্যাংককে না ডেকে যমুনা ব্যাংককে টাকা জমা নেয়া হচ্ছে। এর অর্থ এর আগে ইচ্ছাকৃতভাবে জনতা ব্যাংকে জায়গা দেয়া হয়নি। আমরা রাষ্ট্রের নাগরিক আমাদের রাষ্ট্রের স্বার্থ আগে দেখতে হবে। আমাদের দায়িত্ব বটে।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড.নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, দুটি ব্যাংক থাকায় ভালো সেবা দেয়ার প্রতিযোগিতা তৈরি হবে। জনতা ব্যাংক চাইলে শিক্ষার্থীদের টাকা জমা নিতে পারবে। মেঘনা ব্যাংক সোমবার থেকে তাদের সেবা দেয়া চালু করেছে। প্রথমদিকে মেঘনা ব্যাংকে বিভাগের ফান্ডের টাকাসহ জমা নেয়া শুরু করে। পরে বিভাগগুলো জানায় তাদের ফান্ডের টাকা আলাদাভাবে জমা দেয়া হোক এই জন্য কিছু টাকা মেঘনা ব্যাংকে জমা আর বিভাগের টাকা জনতা ব্যাংকে জমা দেয়ার আদেশ দেয়া হয়।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –