• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

ভিডিও গেমের আদ্যোপান্ত

প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০১৮  

অলস সময় পার করতে বা কাজের মধ্যে ক্লান্তি দূর করতে ভিডিও গেম অনেকের জন্য আশীর্বাদস্বরুপ! ভিডিও গেম অনেকের একটি প্রাত্যহিক অনুষঙ্গ। এটি মূলত ইলেক্ট্রনিক গেম। একটি ভিডিও ডিভাইসের মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার জন্য ভিডিও গেমের ইন্টারফেস বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়। আর্কেড, কনসোল, কম্পিউটার, স্মার্ট ফোন ও অন্যান্য যাবতীয় ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের জন্য ভিডিও গেম বিবর্তিত হয়ে আসছে। আধুনিক যুগে ভিডিও গেমের জয়জয়কার সকল স্থানেই। কিন্তু সর্বপ্রথম ভিডিও গেম কেন এবং কোথায় তৈরি হয়েছিলো জানেন? বিজ্ঞান গবেষণাগারে, বিজ্ঞানীদের গবেষণা কাজে সহয়তার জন্য! সর্বপ্রথম পেটেন্টকৃত আমেরিকান ভিডিও গেমটির নাম শুনলেই হয়তো বুঝতে পারবেন, ১৯৪৮ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বানানো গেমটির নাম দেয়া হয়েছিলা-‘ক্যাথোড রে টিউব অ্যামিউজমেন্ট ডিভাইস’!

 

1.ভিডিও গেমের আদ্যোপান্ত

ভিডিও গেমের আধুনিক সূচনা

আবিষ্কারের শুরুর দিকে দ্য নিমরড কম্পিউটার, অক্সা, টেনিস ফর টু, স্পেসওয়ার সহ বেশ কয়েকটি গেম বানানা হয়। কিন্তু এগুলোর কোনোটিই জনসাধারণের কাছে বিক্রর জন্য বাজারে ছাড়া সম্ভব হয় নি। কারণ সেগুলোর সাইজ এত বড় এবং নিয়ন্ত্রণ খরচ এত বেশি ছিলো যে, ল্যাবোরেটরির বাইরে সাধারণ জীবনে সেগুলো খেলা ছিলো দুঃসাধ্য। এ পরিস্থিতির পরিবর্তন আসে যখন ‘রাল্ফ বেয়ার’ নামক ব্যক্তি তার টেলিভিশন স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে ভাবলেন, এই স্ক্রিনকে অন্য কি উপায়ে কাজে লাগানো যায়! বেশ কয়েকবছর ভাবার পর অবশেষে তিনি পেয়ে যান ভিডিও গেমের আধুনিক সূচনা। ১৯৭২ সালে রাল্ফের আইডিয়াতে পৃথিবীর সর্বপ্রথম সহজলভ্য গেমিং ডিভাইস ‘অডিসি’-এর সূচনা হয়। এটি ছিলো মূলত একটি গেম কনসোল। এটি ভিডিও গেমের জন্য বিশেষভাবে নির্মিত একটি আউটপুট ডিভাইস। অডিসির উদ্ভাবণ মানুষকে টিভিতে গেম খেলার সুযোগ করে দেয়। ভিডিও গেমের ইতিহাসে এটি ছিলো একটি বৈপ্লবিক পদক্ষেপ। এজন্যই রাল্ফ বেয়ারকে ভিডিও গেমের জনক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

 

2.ভিডিও গেমের আদ্যোপান্ত

ভিডিও গেমের বানিজ্যিক যুগ

একই সময়ে নোলান বুশনেল ও টেড ড্যাবনি নামের দুই ভদ্রলোক তাদের নিজেদের ছোট কোম্পানি ‘আটারি’-তে রাল্ফের মতোই একটি পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছিলেন। আটারি’র সর্বপ্রথম গেম ছিলো আর্কেড গেম ‘পং’। এটি ছিলো বাণিজ্যিকভাবে সফল প্রথম ভিডিও গেম। ১৯৭৮ সালে এসে মিডওয়ে নামক অন্য একটি গেম কোম্পানির সঙ্গে আটারির প্রতিযোগিতা চরমে পৌঁছায়। জাপানি কোম্পানি তাইতোর জন্য মিডওয়ে একটি আর্কেড গেম রিলিজ করে, যেটির নাম ছিলো স্পেস ইনভেডারস। এখন পর্যন্ত স্পেস ইনভেডারস ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবসাসফল আর্কেড গেমের রেকর্ড দখল করে আছে। এ গেমটির মাধ্যমিই আর্কেড গেমের সোনালি যুগের সূচনা হয়।

 

3.ভিডিও গেমের আদ্যোপান্ত

মিডওয়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে আটারি তখন বাজারে আনন ‘অ্যাস্টেরয়েডস’ নামের গেমটি। তবে এই গেমটি স্পেস ইনভেডারসের জনপ্রিয়তার ছুঁতে পারে নি। সর্বকালের সেরা ব্যবসা সফল আর্কেড গেমের তালিকায় অ্যাসটেরয়েডস আছে ৬ নম্বরে। ১৯৮০ সালে প্রথম রঙিন আর্কেড গেম বাজারে আসে। ওই বছরই জাপানি ভিডিও গেম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ন্যামকোর ‘প্যাকম্যান’ নামের একটি গেম যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে নিয়ে আসে। ভিডিও গেমের বাণিজ্যিকীকরণে যেটি ছিলো একটি বিপ্লব। মাত্র ৩মাসে গেমটি ব্যবসা করে এক বিলিয়ন ডলার!

 

4.ভিডিও গেমের আদ্যোপান্ত

১৯৮১ সালে ‘ডাংকি কং’ নামের একটি ভিডিও গেম নিয়ে বাজারে আসে নিন্টেন্ডো। এটি ছিলো প্রথম কোনো স্টোরি লাইনযুক্ত ভিডিও গেম, সাম্প্রতিক সময়ে জনপ্রিয় অ্যালান ওয়েক, হেভি রেইন, গন হোম গেমগুলোর মতো। ডাংকি কং-এর স্টোরিলাইনটি ছিলো এমন-ডাংকি কং হচ্ছে জাম্পম্যান নামের এক ছুতোরের পোষা প্রাণী। জাম্পম্যান ডাংকি কং এর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করায় সে জাম্পম্যানের বান্ধবীকে চুরি করে নিয়ে পালায়। গেমের প্লেয়ারকে জাম্পম্যানের ভূমিকায় খেলতে হয়, টার্গেট থাকে বান্ধবীকে উদ্ধার করার। ঘটনাক্রমে পরবর্তীতে জাম্পম্যানের নামকরণ করা হয় ‘মারিও’। আশির দশকে আর্কেড গেমের সোনালী যুগের অন্যান্য গেমগুলো হলো ফ্রগার, ড্রাগনস্ লেয়ার, ও মারিও ব্রাদার্স এবং সর্বশেষে ডাবল ড্রাগনস। নব্বই এর দশকে আর্কেড গেমের জনপ্রিয়তা পড়তির দিকে চলে যায়, যদিও ভিডিও গেমের বৈপ্লবিক জনপ্রিয়তা শুরু হতে তখনও অনেক দেরি!

ভিডিও গেমের ইতিহাসের দ্বিতীয় পর্বে জানাবো সেসব কথা। আজ এ পর্যন্ত।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –