মদিনায় ইসলামী সমাজ গঠনের প্রথম অঙ্গীকার
প্রকাশিত: ৩০ জুন ২০২১
নবুয়তের দ্বাদশ বর্ষে হজের সময় মুসআব ইবনে উমায়ের (রা.) মদিনা থেকে মুসলিমদের বড় একটি কাফেলা নিয়ে মক্কায় আসেন। ১২ জিলহজ রাতের তৃতীয় ভাগে তারা আকাবা নামক স্থানে নবীজি (সা.)-এর সঙ্গে দেখা করেন। সংখ্যায় তারা ছিল ৭৫ জন। ৭৩ জন পুরুষ এবং দুজন নারী। সৌভাগ্যবান দুই নারী হলেন উম্মে আম্মারা নাসিবা বিনতে কাব (রা.) এবং উম্মে মানি আসমা বিনতে আমর (রা.)। এই সাক্ষাতে তারা নবীজি (সা.)-কে মদিনায় হিজরতের আমন্ত্রণ করেন এবং তাঁকে রক্ষায় জীবন ও সম্পদ উৎসর্গ করার অঙ্গীকার করে। (মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস : ১/৩৮০)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে ছিলেন তাঁর চাচা আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব (রা.)—যদিও তখনো মুসলিম হননি। তিনি মদিনাবাসীর সামনে মক্কার পরিস্থিতি ও মহানবী (সা.)-এর ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার ব্যাপারে তাঁর উদ্বেগের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘মুহাম্মদের মূল্য ও মর্যাদা সম্পর্কে তোমরা জানো। আমাদের গোত্রের মধ্যে যারা মুহাম্মদ প্রবর্তিত ধর্ম বিশ্বাস সমর্থন করে না, মুহাম্মদকে আমরা তাদের কাছ থেকে দূরে রেখেছি। নিজ শহরে স্বগোত্রীয়দের মধ্যে তিনি নিরাপদে আছেন। তিনি তোমাদের কাছে যেতে চান, তোমাদের সঙ্গে মিশতে চান। যদি তোমরা তাঁর নিরাপত্তা দিতে এবং শত্রুপক্ষের হামলা থেকে তাঁকে রক্ষা করতে পারো তবে কিছু বলার নেই। তোমরা যে দায়িত্ব নিয়েছ সে তোমরাই ভালো জানো। কিন্তু যদি তাঁকে ছেড়ে যাওয়ার চিন্তা করে থাকো, তবে এখনই চলে যাও।’ (আর-রাহিকুল মাখতুম, পৃষ্ঠা ১৬২)
আব্বাস (রা.)-এর কথা শেষ হলে কাব (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলেন, আল্লাহ আমাদের কাছে কোন বিষয়ে বাইআত বা অঙ্গীকার চান। তিনি তা বর্ণনা করেন। আব্বাস ইবনে উবাদা আনসারি (রা.) মদিনাবাসীকে এই অঙ্গীকারের ব্যাপারে সতর্ক করে বলেন, তোমরা বুঝতে পারছ তোমরা কিসের অঙ্গীকার করছ? তোমরা আরব ও অনারবের সঙ্গে যুদ্ধের অঙ্গীকার করছ। সেদিন যদি তোমরা ভয় পেয়ে পিছিয়ে আসো, তবে এখনই অঙ্গীকার ছেড়ে দাও। সাহাবিরা তখন আবারও নিজের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এবং বাইআতের জন্য অগ্রসর হন। সর্বপ্রথম বাইআত গ্রহণের সৌভাগ্য অর্জন করেন আসআদ ইবনে জুরারা (রা.)। পরবর্তী সময়ে অন্যরা শপথ গ্রহণ করে। পুরুষরা নবীজির হাতে হাত রেখে এবং নারীরা মৌখিকভাবে বাইআত গ্রহণ করেছিল। ইসলামের ইতিহাসে একে আকাবার দ্বিতীয় শপথ বলা হয়। (সিরাতে মোস্তফা : ১/৩৩২ ও ৩৩৭)
রাসুলুল্লাহ (সা.) সে রাতে সাহাবিদের থেকে পাঁচটি বিষয়ে অঙ্গীকার গ্রহণ করেন। তাহলো—
১. ভালো-মন্দ সর্বাবস্থায় আমার কথা শুনবে এবং মানবে।
২. সচ্ছলতা ও অসচ্ছলতা উভয় অবস্থায় সম্পদ ব্যয় করবে।
৩. সৎকাজের আদেশ করবে এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখবে।
৪. আল্লাহর পথে উঠে দাঁড়াবে এবং আল্লাহর ব্যাপারে কারো ভয়ভীতি প্রদর্শনে পিছিয়ে যাবে না।
৫. তোমাদের কাছে যাওয়ার পর আমাকে সাহায্য করবে এবং নিজেদের প্রাণ ও সন্তানদের রক্ষা করার মতোই আমার হেফাজত করবে। এতে তোমাদের জন্য জান্নাত রয়েছে। (আর-রাহিকুল মাখতু, পৃষ্ঠা ১৬২)
মহানবী (সা.)-এর নির্দেশে অঙ্গীকার গ্রহণকারী মুসলিমরা নিজেদের মধ্য থেকে ১২ জন নকিব বা নেতা মনোনীত করেন। তারা হলেন, ‘আসআদ ইবনে জুরারা, সাদ বিন রাবি, সাদ বিন উবাদা, উসাইদ বিন হুদায়ের, আবদুল্লাহ বিন রাওয়াহা, বারা বিন মারুর, উবাদা বিন সামিত, রাফি বিন মালিক, আবদুল্লাহ ইবনে আমর, মুনজির বিন আমর, সাদ বিন খায়সামা, আবুল হায়সাম মালিক বিন তাইয়িহান (রা.)। নির্বাচিত সাহাবিদের ৯ জন খাজরাজ থেকে এবং তিনজন আউস গোত্রের ছিলেন। তাঁরা পুনরায় রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাতে বাইআত গ্রহণ করেন। (মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস : ১/৩৮১)
আল্লামা ইদরিস কান্ধলভি (রহ.)-এর মতে আকাবার দ্বিতীয় শপথের ব্যাপারে নিম্নোক্ত আয়াত নাজিল হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদের কাছ থেকে তাদের জীবন ও সম্পদ ক্রয় করে নিয়েছেন, তাদের জন্য জান্নাত আছে—এর বিনিময়ে। তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে, নিধন করে ও নিহত হয়। তাওরাত, ইনজিল ও কোরআনে এ সম্পর্কে তাদের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি রয়েছে। নিজ প্রতিজ্ঞা পালনে আল্লাহ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠতর কে আছে? তোমরা যে সওদা করেছ সে সওদার জন্য আনন্দিত হও এবং এটাই তো মহাসাফল্য।’ (সুরা তাওবা, আয়াত : ১১১; সিরাতে মোস্তফা : ১/৩৩৪)
বাইআত শেষ হওয়ার পর রাসুলুল্লাহ (সা.) কাফেলাকে নিজ অবস্থানে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেন। সকাল হতে হতে কোরাইশরা শপথের কথা জানতে পারল এবং একটি বিরাট দল নিয়ে মদিনাবাসীদের ঘিরে ধরল। কিন্তু কাফেলার মুশরিকরা তাদের নিশ্চিন্ত করল এখানে এমন কিছু হয়নি এবং তাহলে অবশ্যই তারা জানতে পারত বলে আশ্বস্ত করল। অবশ্য কোরাইশরা অনুসন্ধান করে জানতে পারল ঘটনা সত্য। তখন তারা মদিনা থেকে আগত কাফেলার পিছু নেয়। কিন্তু ততক্ষণে তারা নিরাপদ স্থানে চলে এসেছে। শুধু সাদ ইবনে উবাদা (রা.)-কে ধরতে পারল। তারা তাঁর ওপর অকথ্য নির্যাতন করল। অবশেষে জুবায়ের ও হারিস নামক দুই ব্যক্তি যাদের সিরিয়ায় যাওয়ার পথে তিনি আশ্রয় দিয়েছিলেন তাদের সহায়তায় তিনি মুক্তি পেলেন। (সিরাতে ইবনে হিশাম, পৃষ্ঠা ১২০-১২১)
ড. আলী মুহাম্মদ সাল্লাবি ‘আকাবার দ্বিতীয় শপথ’ যা বাইআতে কুবরা বা উজমা নামেও পরিচিত তার নিম্নোক্ত প্রভাব তুলে ধরেছেন।
১. ঐতিহাসিকরা এই শপথকে ‘ফাতহুল ফুতুহ’ বিজয়গুলোর বিজয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কেননা এর মাধ্যমে মদিনার ইসলামী রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন হয়।
২. এ শপথের মাধ্যমে আগামী দিনের জন্য আত্মবিসর্জনকারী কর্মী দল ও মুসলিম নেতৃত্ব তৈরি হয়।
৩. মদিনার বিবদমান দুটি গোত্রের মধ্যে চূড়ান্ত সম্প্রীতি স্থাপিত হয়।
৪. শপথের স্থান ও সময় নির্ধারণ থেকে নবীজি (সা.)-এর বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতার প্রমাণ মেলে।
৫. এই বাইআতের মাধ্যমে মুসলিমরা একটি রাজতৈনিক শক্তি হিসেবে পথচলা শুরু করে। (আস-সিরাতুন নাবাবিয়্যা, পৃষ্ঠা ২৪৬-২৫১)
– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –- আইপিএলে পান্ডিয়াদের বিরুদ্ধে জোচ্চুরির অভিযোগ!
- শাবনূরের বিকল্প নেই: ডিপজল
- অপবিত্র জায়গায় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা, শরিয়ত কী বলে?
- টেকসই কৃষি ব্যবস্থা প্রচলনে সরকার কাজ করছে: স্পিকার
- প্রত্যেকের উচিত প্রধানমন্ত্রীকে সহায়তা করা: গণপূর্তমন্ত্রী
- সড়কে দুর্ঘটনা রোধে প্রতিদিন মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশ
- গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়েছে
- দেশে তিনদিনের হিট অ্যালার্ট জারি
- গরম আরো বাড়ার শঙ্কা
- প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন: অর্থমন্ত্রী
- নিষিদ্ধ যানে সড়কে মৃত্যুর মিছিল
- মে মাসে ৪৪ ডিগ্রি পৌঁছাবে তাপমাত্রা
- সম্মানী বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের
- প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস, আগামী দুদিন যেমন যাবে আবহাওয়া
- ‘শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন’
- ইসরায়েলের হামলাকে স্বীকার করছে না ইরান
- তীব্র তাপদাহেও যেভাবে ঘর থাকবে কনকনে ঠান্ডা
- বিএনপি পথহারা পথিক: ওবায়দুল কাদের
- আওয়ামী লীগ প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে কিছু করেনি: প্রধানমন্ত্রী
- মারা গেছেন জাতীয় পতাকার নকশাকার মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস
- আইপিএল থেকে চাইলেও যে কারণে যেতে পারেননি বাংলাদেশি এক ক্রিকেটার
- জুম্মাবার ও নামাজের গুরুত্ব
- শিল্পী সমিতির নির্বাচনে এফডিসিতে নিরাপত্তা জোরদার
- বিজিপির আরো ১৩ সদস্য আশ্রয় নিলো বাংলাদেশে
- সড়কে দুর্ঘটনা রোধে প্রতিদিন মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশ
- তীব্র গরমের মধ্যেই ধেয়ে আসছে ঝড়-শিলাবৃষ্টি
- ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু
- ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে
- দ্রুত শিক্ষকদের শূন্য পদ পূরণের সুপারিশ
- বিচ্ছিন্নভাবে দেশের স্বার্থ অর্জন করার সুযোগ নেই: সেনা প্রধান
- বৈশাখ আয়োজনে রঙ বাংলাদেশ
- আন্তর্জাতিক চাপে মুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশি নাবিকরা: নৌপ্রতিমন্ত্রী
- তাপমাত্রা ছুঁতে পারে ৪২ ডিগ্রি, ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা
- টিভি চ্যানেলের অবৈধ সম্প্রচারে আইনগত ব্যবস্থা: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
- ‘বনভূমি দখলে স্থাপিত রিসোর্টগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালবে’
- নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্তক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের
- চকবাজারে কেমিক্যাল গোডাউনের আগুন নিয়ন্ত্রণে
- ‘আশ্রয় নেয়া মিয়ানমার সামরিক সদস্যদের দ্রুত ফেরত পাঠানো হবে’
- তুলার উৎপাদন বাড়াতে ১০ কোটি টাকার প্রণোদনা
- ইসরায়েলের এই বর্বরতা মেনে নেয়া যায় না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- এনএসআইর নতুন ডিজি হোসাইন আল মোরশেদ
- মাঠে গড়ালো চতুর্থ দিনের খেলা
- লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা
- পরীক্ষামূলক জিরা চাষে কৃষকের বাজিমাত
- ত্বকের দাগ দূর করবেন যেভাবে
- ‘যাকাত বোর্ড শক্তিশালী হলে দারিদ্র্য বিমোচন ত্বরান্বিত হবে’
- এবার ঈদে ৯০ লাখ মানুষ সড়কপথে ঢাকা ছাড়বে
- দুপুরের মধ্যে ৮০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে ঝড়
- বাংলা নববর্ষ উদযাপনে মানতে হবে ১৩ নির্দেশনা
- শিশুরাই হবে স্মার্ট বাংলাদেশের মূল কারিগর