• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি: গবেষণা উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

যে ছবি বদলে দিল মা ও ছেলেকে

প্রকাশিত: ২ ডিসেম্বর ২০১৮  

ঘটনা ২১ সেপ্টেম্বরের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার দিন ছেলে হৃদয়কে কোলে করে পরীক্ষার হলে নিয়ে যান সীমা সরকার। ছবিটি তোলেন মামুন নামের ঢাবি’র এক শিক্ষার্থী। শখের বশে প্রায়ই নানা রকমের ছবি তোলেন মামুন। মুহুর্তেই ছবিটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। একটি ছবিই বদলে দিল দুটি জীবন। সুযোগ হলো স্বপ্ন ছোঁয়ার। এরপর সবার নজরে আসেন এই মা। ২০১৮ সালে বিশ্বে বিবিসি’র অনুপ্রেরণাদায়ী ও প্রভাবশালী এক’শ নারীর তালিকায় ৮১তম স্থানে আছেন সীমা সরকার।

সব কৃতিত্ব আলোকচিত্রী আল মামুনের। শেষ পর্যন্ত সাক্ষাৎ হলো মা সীমা সরকার ও তার সন্তান হৃদয় সরকারের। ঢাবি’র কলা ভবনে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সীমা সরকার ও হৃদয় সরকারের সঙ্গে দেখা হয় আল মামুনের। এ সময় মা-ছেলে দুজনের চোখেমুখেই কৃতজ্ঞতা ফুটে উঠছিল মামুনের প্রতি। কারণ ওই একটি ছবিই যে বদলে দিয়েছে তাদের জীবন! তাই মা-ছেলের সমস্ত ধন্যবাদ মামুনকে ঘিরেই।

আল মামুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞানে ৪র্থ বর্ষে পড়ছেন। গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ে। মামুন বলেন, সে দিন আমার কাজিনও ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসেছিল। ওর সঙ্গে কথা বলতে বলতেই হঠাৎ চোখে পড়ে হৃদয়কে কোলে করে নিয়ে যাচ্ছে তার মা। আমার কাছে অবাক লাগে। এরপর ছবিটি তুলি। সামাজিক মাধ্যমে ছবিটি পোস্ট করার পরই ভাইরাল হয়ে যায়।

 

1.যে ছবি বদলে দিল তাদের

হৃদয়ের মা বলেন, মামুন আমার আরেকটা সন্তানের মতোই, ও আমার জন্য যা করেছে, আমি ওর জন্য প্রাণখুলে দোয়া করি ও যাতে অনেক বড় হয়। একহাতে হৃদয় আর অন্যহাতে মামুনকে জড়িয়ে কথাগুলো বলছিলেন এই মা।

নেত্রকোনা পৌর শহরের কুরপাড় এলাকার বাসিন্দা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সীমা সরকার। তার দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী হৃদয় সরকার। শিশুকালে সকলের আদরযত্নে বড় হতে থাকলেও শৈশব থেকেই কোলে-পিঠে করে বহন করে নিয়ে যান প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। শুধু তাই নয়, ছেলেকে কোলে নিয়ে তিন-চার তলা সিঁড়ি বেয়েছেন সীমা সরকার। প্রতিবন্ধী ছেলেকে পড়াশোনা করানোয় নিগৃহের শিকারও হয়েছেন। স্বল্প আয়ের পরিবারে প্রতিবন্ধী শিশুকে পড়াশোনা করাতে গিয়ে আর্থিক অনটনেও পড়েছেন তিনি।

তবে হাল ছাড়েননি। উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কলেজ, কলেজ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থান করে নিয়েছেন হৃদয়। অদম্য ইচ্ছা শক্তি আর দৃঢ় মনোবল থাকলেই যেকোন অসাধ্যকে সাধন করা যায় তারই প্রমাণ করলেন মা ও ছেলে।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –