• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি: গবেষণা উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

রংপুর বিভাগের আট জেলায় ১৩ হাজার ভূমিহীন পরিবার পাচ্ছে শান্তির নীড়

প্রকাশিত: ২২ জানুয়ারি ২০২১  

মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে রংপুর বিভাগের আট জেলায় মাথা গোজার ঠাঁই পাচ্ছেন ১৩ হাজার ১১০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার। এরমধ্যে ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠির ৪২০টি এবং বিলুপ্ত ছিটমহলে বসবাসকারী পরিবার আছে ৮৭টি। এসব ঘর নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ২২৪ কোটি ১৮ লাখ ১০ হাজার টাকা। শনিবার (২৩ জানুয়ারি) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই কর্মসূচির উদ্বোধনকালে প্রথম পর্যায়ে বিভাগের ৯ হাজার ১৯৫টি পরিবারকে বাড়ির চাবিসহ প্রয়োজনীয় দলিল তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

উদ্বোধনের দিন রংপুর বিভাগের মধ্যে শুধু নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলার বাড়ি পাওয়া ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার সরাসরি স্পট থেকে অনলাইনে যুক্ত হবেন। অন্যরা স্ব স্ব উপজেলা কার্যালয়ের অনলাইনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে সম্পৃক্ত থাকবেন। ২৩ জানুয়ারি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন। এ সময় বাড়ির মালিকদের জমির দলিল, নামজারি, জমির মালিকানা কবুলিয়ত নামা এবং ঘরের চাবি দেয়া হবে।

জানা গেছে, ২ শতাংশ খাস জমির ওপর প্রতিটি টিন শেড বিল্ডিং ঘর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। ৩৯৪ বর্গফুটের ওই বাড়িতে নির্মাণ করা হচ্ছে দুটি কক্ষ, রান্নার জায়গা ও একটি টয়লেট। চারদিকে ইটের দেয়াল এবং মাথার ওপরে লাল ও সবুজ রঙের টিনের ছাদ। বাড়িগুলো নির্মাণে সহযোগিতা করছে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস ও উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের সহকারী প্রকৌশলীরা।

রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের রাজস্ব শাখা সূত্রে জানা গেছে, আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর অধীনে উদ্বোধনের দিন রংপুর জেলায় বাড়ি পাচ্ছেন ৮১৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার। এরমধ্যে ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠির পরিবার আছে ১৭টি। দিনাজপুর জেলায় বাড়ি পাচ্ছেন ৩ হাজার ২২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার। এর মধ্যে ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠির পরিবার আছে ২৪৪টি। কুড়িগ্রাম জেলায় বাড়ি পাচ্ছেন ১ হাজার ৪২৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার। এরমধ্যে বিলুপ্ত ছিটমহলের পরিবার আছে ২৪টি। গাইবান্ধা জেলায় বাড়ি পাচ্ছেন ৮৪৬টি পরিবার। এর মধ্যে ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠির পরিবার আছে ৪৬টি। নীলফামারী জেলায় বাড়ি পাচ্ছেন ৪৮১টি পরিবার। এরমধ্যে ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠির পরিবার আছে ৭৩টি। ঠাকুরগাঁও জেলায় বাড়ি পাচ্ছেন ৭৮৯টি পরিবার। এরমধ্যে ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠির পরিবার আছে ৩৫টি। পঞ্চগড় জেলায় বাড়ি পাচ্ছেন ১ হাজার ৫৭টি পরিবার। এর মধ্যে ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠির পরিবার ৫টি এবং বিলুপ্ত ছিটমহলের পরিবার আছে ৩৩টি। এছাড়া লালমনিরহাট জেলায় বাড়ি পাচ্ছেন ৭৫২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার। এরমধ্যে বিলুপ্ত ছিটমহলের পরিবার আছে ৩০টি।

রংপুর বিভাগে গৃহহীন এবং ভূমিহীন হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে প্রতিবছর নদী ভাঙনের শিকার অসংখ্য পরিবার। শুধু তিস্তা নদীর ভাঙনের ফলে প্রতি বছর অসংখ্য পরিবার নিঃস্ব হয়ে পথে বসছে। এমন পরিবারগুলোর অনেকের ভাগ্যে জুটছে মুজিববর্ষের উপহার। এদের একজন লালমিনরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের জয়নব বেগম।

অনেক আগে স্বামী মারা যাওয়ায় দুই মেয়েকে নিয়ে তার তিন সদস্যের পরিবারের সংসার খরচ চলতো অন্যের বাড়িতে কাজ করে। বর্তমানে খেয়ে পরে বেঁচে থাকায় ছিল প্রতিদিনের চিন্তা। তাই নিজের একটা বাড়ি হবে এ ধরনের ভাবনাও ছিলো তার কাছে স্বপ্নের মতো। কিন্তু যখন তিনি প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি উপহার পাওয়ার কথা প্রথম শুনলেন সেদিন আনন্দে কেঁদে ফেলেছিলেন। এখন মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে আর তাকে চিন্তা করতে হবে না।

শুরু থেকে নির্মাণ কাজে কড়া দৃষ্টি রেখেছে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন। রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, ভূমিহীন এবং গৃহহীন মানুষেরা প্রধানমন্ত্রীর উপহার নির্দিষ্ট সময়ে যাতে পেতে পারেন এজন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সকলে নিরলসভাবে কাজ করছেন। জেলায় মোট বাড়ি পাবেন ১ হাজার ২৭৩ জন। এরমধ্যে উদ্বোধনের দিন পাবেন ৮১৯ জন।

রংপুর বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আবু তাহের মো. মাসুদ রানা বলেন, বিভাগে শুধু ‘ক’ শ্রেণির পরিবার অর্থাৎ ১৩ হাজার ১১০টি ভূমিহীন এবং গৃহহীন পরিবারকে মুজিববর্ষের উপহার দেয়া হবে। তবে উদ্বোধনের দিন উপহার পাবেন ৯ হাজার ১৯৫টি পরিবার।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –