• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

‘শেখ হাসিনার মধ্যে কোনো অহমিকা নেই, এখনো সে আমার ছাত্রী’

প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০  

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের কাছে এখন অনুপ্রেরণার নাম। নারীর ক্ষমতায়ন থেকে শুরু করে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল করতে গিয়ে কোনো দিন কারো কাছে মাথানত করেননি। শেখ হাসিনার হাতেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সবচে নিরাপদ। শেখ হাসিনা যতদিন আছেন, ততদিন আমরা নিরাপদ।

নিয়োমিত আয়োজিত এক সংলাপে এমনটাই দাবি করেছেন বক্তারা।

সংলাপে জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি প্রথমে শেখ হাসিনার সাথে আমার সম্পর্কের কথা বলতে চাই। শেখ হাসিনা তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্রী। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা চলাকালীন সময়ে শেখ হাসিনা ভর্তি হবার জন্য বাংলা বিভাগের সামনে এসেছিল। তখন আমাদের বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী। যিনি একাত্তরের শহীদ বুদ্ধিজীবী। তিনি আমাকে এবং অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে বললেন, ওই যে শেখ সাহেবের মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সে আমাদের বিভাগে ভর্তি হবে কিনা, সেটা জানার জন্য। এরপর আমরা গিয়ে তার কাছে জানতে চাইলাম, সে বাংলা বিভাগে ভর্তি হবে সম্মত কিনা। তিনি সম্মতি জানালেন, আমাদের বাংলা বিভাগে ভর্তি হতে। সেই থেকে আমার সঙ্গে সম্পর্ক শুরু। এখনো সেই সম্পর্ক নিরবচ্ছিন্ন রয়েছে। একদিন শেখ হাসিনা তার স্বামী ওয়াজেদ মিঞাকে নিয়ে আমার বাসায় এসে বলেছিল, ‘স্যার, আমি আর রেহানা বিদেশ যাবো ওয়াজেদের সাথে।’ আমি বলেছিলাম, সামনে তো তোমার এম এ পরীক্ষা। শেখ হাসিনা বলেছিল, বিদেশ থেকে ফিরে ভালোমতো পড়াশোনা করে পরীক্ষা দিবেন। কিন্তু এরপর তো তিনি ফিরলেন ১৯৮১ সালে। মাঝখানে অনেক কিছুই ঘটে গেল। একটি স্বাধীন দেশকে পরাধীনতার নামান্তর করা হয়েছিল। একজন সামরিক শাসক, একজন বিচারপতি আসতে শুরু করলেন ক্ষমতায়। শেখ হাসিনা ফিরলেন পরে ১৯৮১ সালের ১৭ মে। সেদিন আমিও তেজগাঁও বিমানবন্দরে গিয়েছিলাম। সেদিন প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। আমিও সেদিন সেখানে গিয়েছিলাম। এরপর তিনি ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িটিতে একটি ঘরে বসে অফিস করতেন। তখন আমি সেখানে গিয়ে তাকে বলেছিলাম, তোমার এখানে নিরাপত্তার অভাব। অনেক কিছুই ঘটে ঘটতে পারে। তখন শেখ হাসিনা আমাকে বলেছিল, স্যার আর কি হবে? সবই তো ঘটে গেছে। সেদিন আমি তার জন্য বাংলাদেশের সব জেলার মানচিত্র নিয়ে গিয়েছিলাম তাকে দেয়ার জন্য। যেহেতু সে তখন দ্বিধাবিভক্ত আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করছিল। এরপর ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি অর্জন করিয়ে দিলেন। আমরা গর্বিত হয়েছিলাম, আমাদের বিভাগের ছাত্রী তখন দেশের প্রধানমন্ত্রী। এরপর আবারো ষড়যন্ত্র করে তাকে নির্বাচনে হারিয়ে দেয়া হলো। এরপর একবিংশ শতাব্দীতে এসে ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনি বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করে যাচ্ছে। বারবার তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। এই করোনাকালে তিনি বন্যা, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করে যাচ্ছেন। আমি বিশ্বাস করি, শেখ হাসিনা যতদিন আছেন, ততদিন আমরা নিরাপদ। আমি আজকে তার জন্মদিনের আগেই অগ্রিম শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। তার দীর্ঘায়ু কামনা করছি। শেখ হাসিনার এখনো দেখা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় যে ব্যবহার করতেন, আজো সেই ব্যবহারই দেখি। তার মধ্যে কোনো অহমিকা দেখি না। বঙ্গবন্ধুর শতবর্ষ বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতিও তিনি আমাকে করেছিলেন। আমরা যেসব পরিকল্পনা করেছিলাম, সেগুলো জনসম্মুখে কিছু করতে না পারলেও অনলাইনে কাজ করছি। আমরা বঙ্গবন্ধুর ওপর প্রকাশনার কাজ করছি। আমি একথা বলতে পারি, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে যেভাবে পরিচালনা করার স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতেই কাজ করে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা।

নিয়মিত আয়োজনের শততম পর্বে আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউটের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষক এবং জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –