• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

‘শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে আমৃত্যু কাজ করে গেছেন নাসিম’

প্রকাশিত: ১৬ জুলাই ২০২০  

বিএনপি-জামায়াতের সাম্প্রদায়িক অপরাজনীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন মোহাম্মদ নাসিম। এছাড়া তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে আমৃত্যু কাজ করে গেছেন। গতকাল বুধবার রাত ৮টায় কেন্দ্রীয় ১৪ দলের উদ্যোগে মোহাম্মদ নাসিমের স্মরণে ভার্চুয়াল শোকসভা বক্তারা এসব কথা বলেন।

'নাসিমের চলে যাওয়ায় শেখ হাসিনা একজন বিশ্বস্ত সহযোদ্ধাকে হারিয়েছেন' এই শিরোনামে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সাবেক মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিমের স্মরণে ভার্চুয়াল শোকসভার আয়োজন করেছে কেন্দ্রীয় ১৪ দল।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে করেন কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র এবং  আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আওয়ামী লীগের ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতরা। অনুষ্ঠানটি সরাসরি প্রচারিত হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে।

কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেন,  শেখ হাসিনা বলেছিলেন নাসিমের চলে যাওয়ায় আমি আমার একজন বিশ্বস্ত সহযোদ্ধাকে হারিয়েছি। নেত্রীর এই উক্তির মধ্যে দিয়েই নাসিমের সার্বিক রাজনীতির কর্মের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব তার পিতা যেরকম একনিষ্ঠ ও অবিচল ছিল, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নাসিমও সেরকম অবিচল ও একনিষ্ঠ ছিলেন। আমরা একসাথে কাজ করতাম, প্রত্যেকটি আন্দোলন সংগ্রামে নাসিম ছিলো আমার সহযোদ্ধা। মোহাম্মাদ নাসিম ১৪ দলকে জাতীয় পর্যায়ে একটা বিরাট পরিচিতি দিয়ে গেছেন। অসুস্থ শরীর নিয়ে সংগঠন চালিয়ে গেছেন। ওর চলে যাওয়া আমার জন্য বেদনাদায়ক। করোনাকালে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা কর্মীর মৃত্যুর কথা স্বরণ করে শোক জানান আমু। 

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, মোহাম্মদ নাসিমের অকাল মৃত্যু আমাকে কাঁদিয়েছে। একজন বর্ণাঢ্য রাজনীতিবিদ ছিলেন নাসিম। আমরা একসঙ্গে আন্দোলন- সংগ্রাম করেছি, একসঙ্গে রাজপথে মার খেয়েছি, বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় একসঙ্গে নির্যাতিত হয়েছি। তিনি দেশের জন্য, দলের জন্য মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি ছিলেন একজন সফল সংগঠন ও রাজনীতিবিদ। 

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, পৃথিবীতে খুব কম দেশে দেখা গেছে পিতা-পুত্র একসঙ্গে জেলে গেছেন। আইয়ুব খানের আমলে আন্দোলন করে পাবনায় পিতা জাতীয় নেতা ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর সঙ্গে মোহাম্মাদ নাসিমও কারাবরণ করেছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নাসিম ছিলেন একজন সংগ্রামী ও প্রাণবন্ত রাজনীতিবিদ। অনেক আন্দোলন সংগ্রামে মোহাম্মাদ নাসিমকে আমার পাশে পেয়েছিলাম। ১৪ দলের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখতে নতুন সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু তার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কাজ করবেন এবং শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করবেন- এটা আশা করি। 

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আমাদের প্রাণপ্রিয় নেতা মোহাম্মাদ নাসিম রেখে গেছেন তার দীর্ঘ কর্মময় রাজনৈতিক জীবন। যা আমাদের জন্য অনুকরনীয় ও পাথেয়। তিনি দেশের যে কোনো ক্রান্তিলগ্নে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৪ দলকে সংগঠিত করেছেন, একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। বিএনপি-জামায়াতের সাম্প্রদায়িক অপরাজনীতির বিরুদ্ধে একটি অসম্প্রাদায়িক রাজনীতি প্রতিষ্ঠা ও শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে আমৃত্যু কাজ করে গেছেন। নাসিমদের মৃত্যু নেই, নাসিমরা বেঁচে থাকবেন কর্মময় জীবনের মধ্য দিয়ে।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে ১৪ দলের নব-নির্বাচিত সমন্বয়ক হিসেবে জননেতা আমির হোসেন আমু তার মেধা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে ঐক্যবদ্ধ রাখবেন সবাইকে এ আশা প্রকাশ করেন নানক। 

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলের সৃষ্টির পর থেকে মোহাম্মাদ নাসিম ১৪ দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে বলিষ্ট ভূমিকা পালন করেছেন। তার মৃত্যুতে ১৪ দল ও আওয়ামী লীগের যে ক্ষতি হয়েছে তা কখনো পূরণ হবার নয়। সংকটকালে যারা বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে এসবের বিরুদ্ধে ১৪ দল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর একাংশের নেতা শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি মোহাম্মদ নাসিমকে। আমরা তার দেখানো পথে এগিয়ে চলবো নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে। 

তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ‎সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, নাসিম ছিলেন আপোষহীন নেতা, তিনি আন্দোলন-সংগ্রামে আমাদের পাশে ছিলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন।

বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলিপ বড়ুয়া বলেন, নাসিম যে কৌশলে নেতৃত্ব জীবন্ত রাখতেন, সেটা অতুলনীয়। আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে নাসিমের দিক নির্দেশনায় আমরা সারাদেশে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি।  

বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ১৪ দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখার দৃঢ়তা দেখিয়েছেন নাসিম। আমরা দক্ষ সংগঠক ও বিশ্বস্ত সহযোদ্ধাকে হারালাম। ছাত্রজীবন থেকে আন্দোলন সংগ্রামে যুক্ত ছিলেন তিনি।  

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, নাসিমের নেতৃত্বে ১৪ দল শক্তিশালী ছিল। আমি নাসিমকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।  

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –