• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

হাইকোর্টের রায় অমান্য করে জমি দখল!

প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারি ২০২০  

তারা মানেন না সর্বোচ্চ আদালতের রায়। যেন জোর যার মুল্লুক তার। অর্থ আর পেশী শক্তির জোরে এক যুগ (প্রায় ১৩ বছর) আগে দেয়া হাইকোর্টের রায় অমান্য করে জমি দখল করে রেখেছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পূর্ব মহেশালী গ্রামের দাদন ব্যবসায়ীর হোতা হাসির উদ্দিন ও তার ছেলে মমিন, মহসিন ও মোজাম্মেল। এলাকায় সুদের ব্যবসার টাকার জোরে যেন মুল্লুক কিনে রেছেন তারা। অর্থ আর পেশীশক্তির জোরে আইনকানুনও মানেন না তারা। অদৃশ্য এক খুটির জোরে হাসির উদ্দিনের তান্ডবে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতির মুখে মৃত পশির উদ্দিনের পরিবার।


অভিযোগে জানা যায়, জামালপুর ইউনিয়নের পূর্ব মহেশালী গ্রামের মৃত পশির উদ্দিন ১৯৫৬ সালে ওই এলাকার খলিলুর রহমানের কাছ থেকে ৩৭৯০ দাগে ১৯ শতক আবাদী জমি ক্রয় করে। জমি ক্রয়ের পর থেকে পশির উদ্দিন ওই জমি ভোগ দখল করে আবাদ করে আসছিল। এদিকে ১৯৯৫ সালে হাসির উদ্দিন খলিলুর রহমানের অংশিদারের কাছে ৩৭৯০ দাগে ২৪ শতক জমি ক্রয় করে। ওই দলিলে জমির অবস্থান ও ম্যাপ না থাকায় হাসির উদ্দিন জোর করে পশির উদ্দিনের জমি বে-দখল করে। এ ব্যাপারে পশির উদ্দিন ঠাকুরগাঁওয়ের নি¤œ আদালতে  মামলা দায়ের করে। দীর্ঘ দিন সাক্ষ প্রমান য্চাাইয়ের পর ১৯৯৭ সালের ১৮ জানুয়ারী  নি¤œ আদালত পসির উদ্দিনের পক্ষে রায় দিয়ে আসামীর বিরুদ্ধে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেয়। কিন্তু হাসির উদ্দিন সে রায় মানতে নারাজ। হাসির উদ্দিন ঠাকুরগাঁও জজকোর্টে আপীল করলে ১৯৯৭ সালের ৪ মে আপীল না মঞ্জুর করে প্রদত্ত রায় দিয়ে ডিক্রী বহালের আদেশ দেয় আদালত। এর পর হাসির উদ্দিন উচ্চ আদালতে আপীল করেন। হাইকোর্টও আসামী পক্ষের কোন দখল স্বত্ব নাই মর্মে ২০০৭ সালের ১৮ নভেম্বর নি¤œ আদালতের রায় বহাল রেখে জমি পশির উদ্দিনের কাছে বুঝে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। হাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের দেয়া চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার রায় নি¤œ আদালত পেয়ে ২০১০ সালে ২০ সেপ্টেম্বর প্রশাসন সরজমিনে গিয়ে ওই ১৯ শতক জমিতে লাল পতাকা দিয়ে ঢোল পিটিয়ে পসির উদ্দিনের অংশিদারদের বুঝিয়ে দেয়। কিন্তু ওই এলাকা থেকে প্রশাসনের লোকজন চলে যাওয়ার পর পরেই লাল পতা তুলে দিয়ে আবারো জমি দখল করে হাসির উদ্দিন ও তার ছেলেরা। শুধু এতেই ক্ষান্ত হয়নি তারা গত ২ জানুয়ারী মৃত পশির উদ্দিনের অংশিদারা তার বাবা ক্রয় করা জমিতে ১৫০টি মেহগনি গাছ রোপন করে। এর পর বিকালে রোপন করা গাছে পশির উদ্দিনের ছেলে গোলাম মোস্তফার স্ত্রী লুৎফা ও ইসমাইলের স্ত্রী নুর নাহার বেগম পানি দিতে যায়। এ সময়  হাসির উদ্দিন, তার ছেলে আব্দুল মমিন, মহসিন, মোজাম্মেল হক, মামুন, মমতাজ আলীসহ ১২/১৩ জন লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। রোপন করা ১৫ হাজার টাকার গাছ তুলে ফেলে নষ্ট করে। রক্তাক্ত জখম করে  পশির উদ্দিনের ছেলে গোলাম মোস্তফার স্ত্রী লুৎফা ও ইসমাইলের স্ত্রী নুর নাহার বেগমকে। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় ৭ জানুয়ারী পশির উদ্দিনের ছেলে ইসমাইল হোসেন বাদি হয়ে সময়  হাসির উদ্দিন, তার ছেলে আব্দুল মমিন, মহসিন, মোজাম্মেল হক, মামুন, মমতাজ আলীসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে ঠাকুরগা্ওঁ থানায় মামলা দায়ের করে। পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযানি চালিয়ে  তিনজনকে গ্রেফতার করে। 


এ ব্যাপারে মৃত  পশির উদ্দিনের ছেলে গোলাম মোস্তফা ও ইসমাইল হোসেন বলেন, এলাকায় দাদন ব্যবসা করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনেছে হাসির উদ্দিন, তার ছেলেরা। টাকার গরম আর পেশীশক্তির জোরে এলাকার মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রভাব খাটায়। তাই সম্মান নষ্টের ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কেই কথা বলেননা। এ জন্যই তার পিতার কেনা জমিটি আদালতের রায় হওয়ার পরেও দখলে পাওয়া যাচ্ছেনা। বেদখলেই রয়ে গেছে । হাসির উদ্দিনের কবল থেকে রক্ষায়  প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা মৃত পশির উদ্দিনের পরিবার। 


এ ব্যাপারে হাসির উদ্দিনের পক্ষে তার ছেলে মহসিন মৃত পশির উদ্দিনের পরিবার উচ্চ আদালত থেকে রায় পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ৩৭৯০ দাগে জমি কম আছে। ওই দাগে তারাও ২৪ শতক জমি কিনেছেন দাবি করে বলেন, তাদের ২৪ শতক জমি বুঝে দিলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। 

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –