• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্ত‌ক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক

১৩ দিনে বাংলাদেশ-ভারত ভ্রমণ বিলাসবহুল জাহাজ!

প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০১৮  

সমুদ্রের নীল জলরাশি ও দিগন্ত বিস্তৃত আকাশের মিতালি দেখতে দেখতে হারিয়ে যেতে কার না ভালো লাগে! তাইতো মানুষ হাজার হাজার টাকা খরচ করে দিনের পর দিন কাটিয়ে দেয় প্রমোদতরীতে। সবচেয়ে ভালো উদাহরণ ইউরোপের দানিউব বা রাইন নদীর বুকে জাহাজ ভ্রমণ। সারা বিশ্বের পর্যটকদের কাছে এ যেন স্বর্গ ভ্রমণ! কী নেই প্রমোদতরীগুলোতে? আধুনিক নাগরিক সুযোগ-সুবিধাসহ রয়েছে আমোদ-প্রমোদের নানা ব্যবস্থা। এমন অনেক জাহাজ রয়েছে, যেগুলোতে একটি উন্নত শহরের সব সেবা পাওয়া যায়। প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে এসব আধুনিক জাহাজে ভ্রমণ সারাবিশ্বে জনপ্রিয়।

 

1.বিলাসবহুল জাহাজে ১৩ দিনে বাংলাদেশ-ভারত ভ্রমণ!

বাংলাদেশি পর্যটকদের এই আয়েশের জন্য যেতে হয় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। খরচ মাত্রাতিরিক্ত হবার কারনে জাহাজ ভ্রমণ অনেকের কাছে শুধুই স্বপ্ন ছিলো। কম খরচে এবার সেই স্বপ্ন বাস্তব হচ্ছে। কলকাতা থেকে সুন্দরবন হয়ে ঢাকা অভিমুখী বিলাসবহুল ‘ভিভাডা ক্রুজ’-এ পর্যটকরা উপভোগ করতে পারবেন দুই বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, নদীমাতৃক জীবন, বাঘের অভয়ারণ্য সুন্দরবন, বন্যপ্রাণী ও বনভূমি। ভাগ্যে থাকলে মিলতে পারে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সাক্ষাৎ!

কলকাতা থেকে শুরু হয়ে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের গা ঘেঁষে বরিশাল হয়ে চাঁদপুরে ইলিশের জন্য থেমে ১৩ দিনের মাথায় সোনারগাঁও ছুঁয়ে ঢাকায় নোঙর ফেলবে বিলাসবহুল এই প্রমোদতরী। আগামী মার্চ থেকেই মিলবে এই সুবিধা। ১৩ দিনের জন্য জনপ্রতি খরচ হবে বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ৬০ হাজার টাকা। তবে শর্ত একটাই, উভয় দেশের যাত্রীদের অবশ্যই পাসপোর্ট ও বৈধ ভিসা থাকতে হবে। বাংলাদেশের শ্বেতবাড়িয়া বা আংটিহারে ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করা হবে। অন্যদিকে ভারতীয় দিকে উত্তর ২৪ পরগণার হেমনগরে ইমিগ্রেশন করা হবে। এই ভ্রমণসূচিতে কি থাকছে এবার জেনে নেয়া যাক!

প্রথম দিন

কলকাতার ভিভাডা জাহাজ-ঘাটায় চেক-ইন।

দ্বিতীয় দিন

দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির, ব্রিটিশ গভর্নরের বাসস্থান ব্যারাকপুর, ডেনিশ উপনিবেশ শ্রীরামপুর, ফরাসি উপনিবেশ চিনসুরা, পর্তুগিজ শাসনামলের ডাচ বাণিজ্য বন্দর ভ্রমণ। সময় থাকলে কলকাতার ৪০ কিলোমিটার উত্তরে ইউরোপীয় ৫টি বাণিজ্যস্থল ঘুরে আসতে পারেন।

 

2.বিলাসবহুল জাহাজে ১৩ দিনে বাংলাদেশ-ভারত ভ্রমণ!

তৃতীয় দিন

খুব ভোরে উঠেই কালনা টেরাকোটা মন্দির ভ্রমণ। এরপর থাকছে কলকাতার শান্তিপুরের তাঁতিদের গ্রাম ঘুরে দেখা। সারাদিন সেখানে কাটানোর পর সন্ধ্যায় ফিরতে হবে জাহাজে।

চতুর্থ দিন

গল্প শুনতে শুনতে পায়ে হেঁটে কিংবা গাড়িতে চড়ে কলকাতা ঘুরতে পারবেন এদিন। গল্প শুনতে কোনো খরচ হবে না, জাহাজ থেকেই গল্পকথকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদি গল্প ভালো না লাগে তবে এড়িয়ে যেতে পারেন।

 

3.বিলাসবহুল জাহাজে ১৩ দিনে বাংলাদেশ-ভারত ভ্রমণ!

পঞ্চম দিন

পঞ্চম দিনটিই সবচেয়ে বেশি রোমাঞ্চকর। কারণ, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনে জীববৈচিত্র্য উপভোগ করার দিন শুরু এদিন সকাল থেকেই। সুন্দরবন গ্রামে ঢুকে কৃষি জমি, মাছভর্তি পুকুর, বাড়িঘর ও বাজার ভালোভাবে দেখার সুযোগ মিলবে পঞ্চমদিনে।

ষষ্ঠ দিন

সুন্দরবনের হেমনগরে ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে এদিনের অর্ধেক সময় পার হয়ে যাবে। বাকি সময় সুন্দরবনের বুক চিরে ঘুরে বেড়াবেন।

 

4.বিলাসবহুল জাহাজে ১৩ দিনে বাংলাদেশ-ভারত ভ্রমণ!

সপ্তম দিন

মংলা বন্দরের দিকে বাঘের অভয়ারণ্যের বাংলাদেশ অংশ ঘুরে দেখাবে এদিন। ঘন বনাঞ্চল ও প্রশস্ত নদী আর খালের সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি চাইলে বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদেও যেতে পারবেন।

অষ্টম দিন

এদিন সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বনে পায়ে হেঁটে ঘুরতে হবে। এজন্য পাড়ি দিতে হবে কাদা। তবে নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করবেন না, সঙ্গে থাকবে সশস্ত্র রক্ষী। সারাদিন সুন্দরবনের সৌন্দর্য্য উপভোগের পর সবশেষে সৈকতে বিশ্রাম।

নবম দিন

সুন্দরবন থেকে জাহাজ যেতে থাকবে বরিশালের দিকে। পথে হরিণঘাটার বাঘের অভয়ারণ্যে দেখার সুযোগ মিলবে।

 

5.বিলাসবহুল জাহাজে ১৩ দিনে বাংলাদেশ-ভারত ভ্রমণ!

দশম দিন

স্বরূপকাঠির ভাসমান হাটের কথা তো সবারই জানা। পেয়ারা, ফলমূল, সবজি ও ফুলের এই বাজারের জন্য জেলাটি সুপরিচিত। ভ্রমণ তালিকায় এটিও থাকছে।

একাদশ দিন

ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরে পৌঁছাবে জাহাজ। নাশতার পর মাছের আড়ত ঘুরে সরাসরি বেচাকেনা দেখবেন পর্যটকরা। সেদিন আপনার পাতে অবশ্যই ইলিশ থাকবে।

 

6.বিলাসবহুল জাহাজে ১৩ দিনে বাংলাদেশ-ভারত ভ্রমণ!

দ্বাদশ দিন

অবিভক্ত বাংলার প্রাচীন রাজধানী সোনারগাঁওয়ে যাবে জাহাজ। সেইসাথে পানাম সিটিও ঘুরে দেখা হবে।

ত্রয়োদশ দিন

জাহাজ থেকে চেক-আউট করতে হবে পর্যটকদের। ঢাকার হোটেলে উঠবেন পর্যটকরা। শহরের স্মৃতিস্তম্ভ, মসজিদ, মন্দির, গির্জাসহ দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখবেন পর্যটকরা। এদিনও আপনার সাথে থাকবে একজন গল্পকথক!

 

7.বিলাসবহুল জাহাজে ১৩ দিনে বাংলাদেশ-ভারত ভ্রমণ!

তারপরদিনই ঢাকা থেকে চেক-আউট। এরপর সোনারগাঁও, চাঁদপুর, স্বরূপকাঠি, বরিশাল, হরিণঘাটা, সুন্দরবন, মংলা বন্দর, বাগেরহাট, আংটিহারা, হেমনগর, সুন্দরবন গ্রাম, কলকাতা, টেরাকোটা মন্দির ও শান্তিপুর, দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির হয়ে কলকাতায় জাহাজ-ঘাটায় গিয়ে চেক-আউট করবেন পর্যটকরা।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –