• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

পঞ্চগড়ে গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু, ৫ মাস পর জানা গেলো হত্যা     

প্রকাশিত: ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে মরদেহের ময়নাতদন্তের পাঁচ মাস পর বেরিয়ে এসেছে হত্যার বিষয়টি। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী শামসুল আলমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

জানা গেছে, পাঁচ মাস আগে সুফিয়া আক্তার (২২) নামে এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে মৃত্যুর পর বমি ও পাতলা পায়খানায় (ডায়রিয়া) তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রচার চালায় নিহতের স্বামী শামসুল আলমসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এদিকে নিহতের বাবার বাড়ির লোকজনের অভিযোগে মৃত্যুটি রহস্যজনক মনে হওয়ায় মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় থানা পুলিশ।

ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে হত্যার বিষয়টি উঠে আসলে মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে অভিযান পরিচালনা করে নিহত সুফিয়ার স্বামী শামসুল আলমকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে আটোয়ারী থানা পুলিশ।

এদিকে সকল আইনি প্রক্রিয়া শেষে বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

জানা গেছে, নিহত সুফিয়া আক্তার পঞ্চগড় সদর উপজেলার মীরগড় মোমিনপাড়া এলাকার দিনমজুর জাফরুল্লাহর মেয়ে এবং গ্রেফতার শামসুল আলম আটোয়ারী উপজেলার তোড়িয়া ইউনিয়নের সুখ্যাতি সৌলাপাড়া এলাকার ছুটু মোহাম্মেদের ছেলে।

পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের (২০২৩) ৩ জুলাই শামসুল আলমের সঙ্গে সুফিয়া আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক দিনের মাথায় স্বামী-স্ত্রীর মাঝে কলহের জেরে সুফিয়া আক্তার বাবার বাড়িতে চলে যান। পরে পারিবারিক বৈঠকের পর একই বছরের ৩০ জুলাই স্বামীর বাড়ির লোকজন সুফিয়াকে বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে যান। এর পর ৬ আগস্ট গভীর রাতে সুফিয়া অসুস্থ বলে স্বামীর বাড়ির লোকজন তার বাবার বাড়ির লোকজনকে জানান। পরদিন বিয়ের ৩৪ দিনের মাথায় সকালে বাবার বাড়ির লোকজন তাকে দেখতে যাওয়ার পথে খবর পান সুফিয়া আক্তার বমি-পাতলা পায়খানায় মারা গেছেন। পরে সুফিয়ার বাবার বাড়ির লোকজন আটোয়ারী থানায় খবর দিলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে প্রাথমিক সুরতহাল করে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলাও দায়ের হয়। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।

এরপর ১৪ আগস্ট নিহত সুফিয়া আক্তারের বাবা বাদী হয়ে পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে জামাতা শামসুল আলমসহ ১১ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। পরে আদালত ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন। এদিকে চলতি মাসে (২০২৪ জানুয়ারি) ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশ পেলে সুফিয়াকে হত্যার বিষয়টি সামনে আসে। থানা পুলিশ ১৫ জানুয়ারি ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনসহ অপমৃত্যুর মামলার প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করলে আদালতের নির্দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে করা মামলাটি এজাহার হিসেবে নেওয়ার জন্য আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আদেশ দেন আদালত। আদেশে থানা পুলিশ দ্রুত অভিযান পরিচালনা করে শামসুলকে গ্রেফতার করে।

আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) সোয়েল রানা বিষটি নিশ্চিত করেন।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –