আপন ভুবনে রাজাধিরাজ শেখ রাসেল
প্রকাশিত: ১৯ অক্টোবর ২০২২
আপন ভুবনে রাজাধিরাজ শেখ রাসেল
রূপকথার গল্প নয়, মায়াবি মুখের এক দেবশিশুর গল্প শোনাই। তার দুই চোখজুড়ে ছিল অপার বিস্ময়। ছিল অন্যকে আকর্ষণ করার ক্ষমতা। সহজাত সারল্য ছিল তার। মা-বাবার মমতা, ভাই-বোনের ভালবাসার ভেলায় ভেসে দিন যাচ্ছিল তার। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন, ‘বয়স তখন ছিল কাঁচা, হাল্কা দেহখানা/ ছিল পাখির মতো, শুধু ছিল না তার ডানা।’ কাঁচা বয়সই ছিল তার। ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কের ৬৭৭ নম্বর বাড়িটির সামনেই লেক। বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে সামনে অনেকটা দূর চলে যাওয়া যায়। ধানমণ্ডি লেকের পার আর এই রাস্তা দিয়ে তিন চাকার সাইকেল চালাতে চালাতে একটু একটু করে নিজের চেনা জগতের পরিধি বাড়িয়ে নেয়ার ভেতর দিয়েই তো দিন কাটত তার। বাড়িতে সর্বকনিষ্ঠ হওয়ায় সবার আদর আদায় করা তো ছিলই। পরিবারের কনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে সবার আদরকাড়া শিশুটির কি কোন স্বপ্ন ছিল? সকালের সূর্যোদয় কি কোন বার্তা পাঠাত তাকে? সন্ধ্যার পশ্চিমাকাশ কেন আবির মাখে, এমন প্রশ্ন কি কোন দিন উঁকি দিয়েছে তার মনে? এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার আগেই তো ঘাতকের নির্মম বুলেট কেড়ে নিয়েছে তাকে।
কী দোষ ছিল তার? একরত্তি শিশু, জাগতিক কোন বোধ যাকে ছুঁয়ে যায়নি, তাকে কেন ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হলো? এমন তো হওয়ার কথা ছিল না। যে বয়সে আপন ভুবনে রাজা হয়ে থাকার কথা তার, সেই বয়সে তাকে পরপারে পাড়ি জমাতে হলো। স্বপ্ন পূরণের বয়স ছোঁয়ার আগেই পাড়ি জমাতে হয়েছে পরপারে। ষড়যন্ত্রকারীদের নির্মম বুলেট বিদ্ধ করেছিল তাকে। নিষ্পাপ শিশুটি কি বাঁচতে চেয়েছিল? চেয়েছিল নিশ্চয়ই। পার্থিব পাপ তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। রাজনীতির দাবার চাল বুঝে ওঠার আগেই নির্মমতার শিকার হতে হয়েছে তাকে। মায়ের কাছে যেতে চেয়েছিল শিশুটি। তার মা, সর্বংসহা বঙ্গমাতা আমাদের, ততক্ষণে বুলেটের শিকার হয়েছেন। শিশুটিকেও বাঁচতে দেয়া হয়নি। কবি লিখেছেন, ‘ঘাতক বোঝেনি অবুঝ শিশুর মন/ঘাতক বোঝেনি বোনদের ভালবাসা/ ঘাতক কেবল ট্রিগার চালাতে জানে/ ঘাতক বোঝে না জাতির ভবিষ্যত।/ বর্তমানের মিথ্যা হিসাব নিয়ে ঘাতকরা মাতে হত্যার উল্লাসে/ অবুঝ শিশুও টার্গেট হয় তার। তাতে যে দীর্ঘ হয়েছে দীর্ঘশ্বাস/ সেই কথা ঢের লেখা আছে ইতিহাসে।/ শুধু লেখা নেই আড়ালে কাদের বুকে/ শোকের সাগর বয়ে চলে অবিরাম।’
আকাশের কাছ থেকে উদারতা শিক্ষা নেয়ার কথা ছিল তার। বিস্ময়ভরা চোখ নিয়ে সে হয়ত দেখত সকালের সূর্যোদয়। পূর্ণিমা রাতের ভরা চাঁদ তার মনে কোন প্রশ্নের জন্ম দিত কি না, তা আমাদের জানা হয়নি। কিন্তু কল্পনা করতে পারি, সেই শিশুটি নিজের জগতে ছিল রাজা। বাবার ব্যস্ততা, মায়ের গৃহকর্ম, ভাই-বোনদের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া দেখে তার শিশুমনেও হয়ত আগামী দিনের স্বপ্ন সঞ্চারিত হচ্ছিল একটু একটু করে।
মায়াবি মুখের এই দেবশিশুর জন্ম এক মধ্যবিত্ত বাঙালী পরিবারে। মা-বাবা আর দুই ভাই ও দুই বোনের আদরের এই চপল শিশুটিকে যেন চোখে চোখে রাখত সবাই। পরিবারের কনিষ্ঠ সদস্যটি ছিল সবার আদরের, ভালবাসার। তাকে নিয়ে স্বপ্ন ছিল বাড়ির সবার। বাঙালী মধ্যবিত্ত পরিবারের সব অভিভাবকই সন্তানদের নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। দেখেছিলেন এই শিশুর অভিভাবকরাও। এই শিশুর ছিল দুই ভাই, দুই বোন। দুই ভাইয়ের সদ্য বিবাহিত স্ত্রী অর্থাৎ তার দুই ভাবি। ‘ছেলেবেলা’ গ্রন্থের ভূমিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বালক নামে একটি কবিতায় লিখেছেন, ‘জুটেছি বউদদির কাছে ইংরেজী পাঠ ছেড়ে,/মুখখানিতে ঘের দেয়া তার শাড়িটি লালপেড়ে/ চুরি করে চাবির গোছা লুকিয়ে ফুলের টবে/ স্নেহের রাগে রাগিয়ে দিতেম নানা উপদ্রবে।’ এই শিশুও হয়ত শৈশবের চপলতায় তার ভাবিদের এভাবে স্নেহের রাগে রাগিয়ে দিতে পারঙ্গম ছিল।
রাজনৈতিক পরিবারটি ছিল দেশের রাজনীতির কেন্দ্র। কাজেই দিনরাত সেখানে মানুষের আনাগোনা লেগেই থাকত। সবার আদর পেত শিশুটি। সহজাত সারল্যে অন্যকে আকর্ষণ করার অসামান্য মায়াবি ক্ষমতাও ছিল তার। আপন ভুবনে শিশুরা রাজাধিরাজ। এই শিশুও শিশুরাজ্যের রাজা ছিল। ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের ছাত্র হিসেবে সমবয়সী কিছু বন্ধুও ছিল তার। সবার সঙ্গেই ছিল সদ্ভাব। মানুষকে আকর্ষণ করার অসাধারণ ক্ষমতা তখনই অর্জন করেছিল সে। স্কুলের শিক্ষক থেকে শুরু করে গৃহশিক্ষক, সবারই পছন্দের শীর্ষে ছিল সে।
আমরা ধারণা করতে পারি, রাজনৈতিক উত্তরাধিকার বহন করে আজকের বাংলাদেশে কিছু না কিছু ভূমিকা রাখার সুযোগ হয়ত তৈরি হতো তার জন্য। কিন্তু অকালেই তো হারিয়ে গেছে সে। মা, বাবা, ভাই-ভাবিদের হারিয়েছে। নিজেও হারিয়ে গেছে কোন দূরলোকে! সেই অনন্তলোক থেকে কেউ কোন দিন ফেরে না। শুধু কিছু স্মৃতি রয়ে গেছে তার দুই বোনের মনের গহীন কোণে, যে স্মৃতি তাঁরা বয়ে বেড়াবেন আজীবন। তাঁদের হৃদয়ের সেই গভীর ক্ষত কোন দিন দেখবে না কেউ।
কেউ জানবে না ছোট ভাইটির জন্য দুই বোনের গোপন অশ্রু বিসর্জনের কথা। ছোট ভাইয়ের জন্য দুই বোনের মনে স্নেহ ও ভালবাসার যে ফল্গুধারা, তা বাইরের কেউ বুঝতে পারে না। হয়ত এখনও ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে গেলে দুই বোনের চোখে ভাসে সেই মায়াভরা মুখ, সেই দুষ্টুমিভরা চাহনি। কিন্তু বোনের বাড়িয়ে দেয়া হাতে ধরা দেয় না আদরের ছোট ভাইটি আর। তাকে আর বুকে তুলে নেয়া হয় না। শুধু বুকের ভেতরে জমে থাকা কষ্টগুলো ঝরে পড়ে দুই চোখ বেয়ে অশ্রুর ঝরনা হয়ে।
লেখক : এম নজরুল ইসলাম
সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং
অস্ট্রিয়া প্রবাসী মানবাধিকারকর্মী, লেখক ও সাংবাদিক
- আমার ওপর বিশ্বাস রাখুন, আর হামলা হবে না : ড. ইউনূস
- অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা শপথ নিলেন
- পশুশক্তির বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি: উপদেষ্টা আসিফ নজরুল
- জোবরা থেকে দেশের অভিভাবক
- অন্তর্বর্তী সরকারে যারা আছেন
- অরাজকতা-অগ্নিসংযোগ বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে সেনাবাহিনী
- মুহাম্মদ ইউনূসকে শুভকামনা জানালেন মোদী
- অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান হিসেবে শপথ নিলেন ড. ইউনূস
- জুনাইদ আহমেদ পলক আটক হয়েছেন
- ভুলবেন না ‘অহংকার পতনের মূল’
- ছাত্র আন্দোলনে আটকদের মুক্তি দেওয়া শুরু
- জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা
- বিশ্ববিদ্যালয়-সরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রস্তাবিত পেনশন স্কিম বাতিল
- আ.লীগের ২ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা
- আন্দোলনকারীরা চাইলে এখনই বসতে রাজি: প্রধানমন্ত্রী
- হানিয়ার হত্যা নিয়ে যা বললেন বাইডেন
- নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের ওপর আইনের প্রয়োগ নয়: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
- প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের প্রতি জোরালো সমর্থন আইসিসি’র
- জামায়াত-শিবিরের বক্তব্য-বিবৃতি প্রকাশ করা যাবে না
- ৬ সমন্বয়কের করা অভিযোগগুলো সঠিক নয়: ডিবি প্রধান
- কেমন থাকবে আজকের আবহাওয়া
- কাতারে ইসমাইল হানিয়ার দাফন সম্পন্ন
- তরুণ প্রজন্মের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা পলকের
- ৭ ঘণ্টা পর ফেসবুক-মেসেঞ্জার সচল
- রাজধানীতে বিজিবির টহল জোরদার
- শিক্ষার্থীরা সরকারের প্রতিপক্ষ নয়: ওবায়দুল কাদের
- আন্দোলনে গ্রেফতারকৃত ৪২ শিক্ষার্থী জামিনে মুক্ত
- ইসরায়েলে বিমান চলাচল বাতিল ৭ এয়ারলাইন্সের
- জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ, প্রজ্ঞাপন জারি
- আন্তর্জাতিক তদন্তে বের করা হবে, কারা এসবে জড়িত: প্রধানমন্ত্রী
- দেবীগঞ্জে ক্লাইমেট স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন
- গাইবান্ধা জেলা ছাত্রদল সভাপতি গ্রেফতার
- প্রশ্নফাঁস প্রমাণ হলে পরীক্ষা বাতিল: পিএসসি চেয়ারম্যান
- ‘অন্ধ হতে চাই না, সহযোগিতা করুন’, দু’চোখ হারানো ইয়াসিনের আর্তনাদ
- প্রশ্নফাঁস নিয়ে যা বললেন পিএসসি চেয়ারম্যান
- ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মুখে কলেজছাত্র মিলন
- হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা আর্জেন্টিনার
- রাতের আঁধারে পাচার হচ্ছিল ২০ লাখ টাকার চা!
- বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে: শিল্পমন্ত্রী
- দেশের মানুষ চিকিৎসা নিতে বিদেশে যায় কেন, জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
- উদ্যোক্তা তৈরিতে জয়িতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে: স্পিকার
- গার্লস স্কুলের ছাত্রী মিতা মারা যাওয়ার সংবাদটি মিথ্যা
- কোটা এখন রাজনৈতিক আন্দোলন হয়ে গেছে: জনপ্রশাসনমন্ত্রী
- ২৫ জুলাই পর্যন্ত এইচএসসির সব পরীক্ষা স্থগিত
- দুঃসংবাদ দিল আবহাওয়া অফিস
- তরুণ প্রজন্মের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা পলকের
- দেশে ফিরলেন ৫৯ হাজার ৩৩০ হাজি
- গাজায় বাস্তুচ্যুতদের ক্যাম্পে ইসরায়েলের বর্বর হামলা, নিহত ২৯
- ৬ সমন্বয়কের করা অভিযোগগুলো সঠিক নয়: ডিবি প্রধান
- সফর সংক্ষিপ্ত করে আজ দেশে ফিরছেন প্রধানমন্ত্রী

