ভারতীয় আফ্রিকান আদিবাসী
প্রকাশিত: ৬ ডিসেম্বর ২০১৮
কয়েক বছর পূর্বে ভারতে বসবাসরত একটি আদিবাসী জনগোষ্ঠী নিয়ে বিতর্ক ওঠে। বিশেষত যখন স্থানীয় কয়েকজন তাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ শুরু করেন। এই আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আদি নিবাস দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকায়। কিন্তু খুব কম ভারতীয় তাদের সম্পর্কে জানেন। জনসংখ্যায় তারা কমপক্ষে ২০হাজার। কোনো কোনো পরিসংখ্যানে এই সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার।এই জনগোষ্ঠীটির নাম ‘সিদ্দি। তারা আফ্রিকার বানতু আদিবাসীদের অন্তর্ভুক্ত।প্রায় বিচ্ছিন্ন এই জনগোষ্ঠীটি ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে বেশ কয়েকটি গ্রামে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে বসবাস করছে। এছাড়াও ভারতের মহারাষ্ট্র, গুজরাট ও হায়দ্রাবাদ শহরের কিছু কিছু স্থানে তাদের বসতি রয়েছে (ভারতের বাইরে পাকিস্তানে তাদের একটি বড় জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে)।
বানতু জনগোষ্ঠীর এই সদস্যরা ৭ম শতকে আরব বণিকদের দাস হিসেবে ভারতীয় উপমহাদেশে আগমন করেন। আরবদের ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে পর্তুগিজ ও ব্রিটিশ শাসকরাও বানতুদের দাস হিসেবে আফ্রিকা থেকে ভারতে নিয়ে আসে। দাস ছাড়াও স্বাধীনভাবে অনেক বানতু বিভিন্ন সময় ভারতে আসেন। পেশায় তারা ব্যবসায়ী ও সৈনিক ছিলেন।তবে পর্তুগিজদের আগমন ঘটলে বানতুদের স্বাধীনভাবে ভারত আসার পথ বন্ধ হয়ে যায়। ১৮ থেকে ১৯ শতকের মধ্যে যখন দাসপ্রথা রহিত হতে থাকে, তখন আফ্রিকা থেকে আসা এসব বানতু সদস্য বিপদে পড়ে যান। তারা দলে দলে জঙ্গলে পালাতে থাকেন। যারা জঙ্গলে পালাতে পারেননি, তাদের ধরে ধরে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়।
এসব আফ্রিকান দাসরা মূলত ‘হাবশি’নামে পরিচিত ছিল। তারা আবিসিনিয়া বা বর্তমান ইথিওপিয়া অঞ্চলে বসবাস করতেন। হাবশি কিংবা বানতু না হয়ে তাদের ‘সিদ্দি’নাম ধারণের পেছনে ইতিহাসে দু’টি কারণ পাওয়া যায়।প্রথমত, যখন উমাইয়া খেলাফতের সেনাপতি হিসেবে মোহাম্মদ বিন কাসিম ভারত বিজয় করেন, তখন তিনি আফ্রিকার একটি সৈন্যবাহিনী সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন।সেসব আফ্রিকান সৈন্য ছিল বানতু জনগোষ্ঠীর সদস্য। মোহাম্মদ বিন কাসিম ভারত বিজয় করলে তারা রাজকীয় মর্যাদা লাভ করেন। এসময় তাদেরকে ‘সাইয়্যেদ’উপাধি প্রদান করা হয়। আরবিতে সাইয়্যেদ শব্দের অর্থ ‘সম্মানিত’।এই সাইয়্যেদ শব্দ বিবর্তিত হয়ে ‘সাইয়িদ’ ও পরে ‘সিদ্দি’ নামে উপনীত হয়। সেসব সৈন্য ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করলে বিভিন্ন সময় দাস হিসেবে আসা বানতুরাও তাদের সাথে মিশে যান এবং একটি বড় জনগোষ্ঠীতে পরিনত হন।
আরেকটি ব্যাখা হলো, সিদ্দিরা দাস হিসেবে প্রথম যে আরব বণিকের সঙ্গে জাহাজে চড়ে ভারতে এসেছিলেন, সেই আরব বণিকের নামের সঙ্গে সাইয়্যেদ শব্দটি যুক্ত ছিল। মুনিবের নামানুসারে তারা নিজেদের নাম সাইয়্যেদ রাখে। পরবর্তীতে বিবর্তিত হয়ে তাদের নাম সিদ্দি হয়। সময়ের পরিবর্তনে সিদ্দিদের মধ্যে এখন আর তেমন কোনো আফ্রিকান চিহ্ন বিরাজমান নেই। পোশাক-পরিচ্ছেদে তারা আর দশজন ভারতীয় নাগরিকদের মতোই। তবে তাদের চেহারায় এখনো কিছুটা আফ্রিকান পূর্বপুরুষদের ছাপ মেলে।চেহারায় কিছুটা ভিন্নতার ছাপ থাকলেও সিদ্দিরা খুব সুন্দরভাবে ভারতীয় সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও ভাষার সঙ্গে একীভূত হয়ে গিয়েছেন। তারা বর্তমানে ভারতের নাগরিক।
সিদ্দিদের বর্তমান বা অতীত যা-ই হোক না কেন, মোঘল আমলে তারা তুলনামূলক ভালো অবস্থায় ছিল। এ সময় তাদের আবাসভূমিতে বেশ কিছু মোঘল স্থাপত্যও নির্মাণ করা হয়েছিল। বিশেষত, ১৫৭৩ সালে নির্মিত ‘সিদি সাইয়্যেদ মসজিদ’ সেই সংবাদই জানান দেয়।মোঘল আমলে সিদ্দিরা রাজনৈতিকভাবেও বেশ মর্যাদায় আসীন হন। তাদের জন্য ১৫ শতকে মুম্বাই শহরের নিকটে একটি দুর্গ নির্মাণ করা হয়েছিল। দুর্গে সিদ্দিরা নিজেদের পতাকা বহন করতেন।সিদ্দিদের এমন সব উজ্জ্বল ইতিহাস থাকা সত্ত্বেও সারা ভারতে বর্তমানে তারাই বেশ নিষ্পেষিত।অনেকে ভারতের ইতিহাস থেকে তাদের নাম মুছে দিতে চান।অনেকে তাদের ‘ছিটকে পড়া জনগোষ্ঠী’ হিসেবে আখ্যায়িত করতে চান। রাজনীতিবিদ থেকে ইতিহাসবিদ, সকলের মধ্যে এই প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়, যা একটি বহুজাতিক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র তৈরির অন্তরায়।
সিদ্দিদের বেশিরভাগ সদস্য কৃষিকাজ ও হস্তশিল্পের সঙ্গে জড়িত। তাদের স্থায়ী কাজের সুযোগ-সুবিধা নেই। দারিদ্র্যের কারণে তারা পড়ালেখাতেও পিছিয়ে পড়েছে কাজের মধ্যে একটু বিরতি পেলে সেই সময় তাদের খেলাধুলায় মেতে উঠতে দেখা যায়।খেলাধুলায়ও তারা বৈষম্যের শিকার।১৯৮০ সালে তৎকালীন ক্রীড়ামন্ত্রী মার্গারেট আলভা এখানে একটি ক্রীড়া উৎসবের আয়োজন করেন। তখন সকলের মধ্যে একটি আশার সঞ্চার হয়েছিল। সিদ্দিদের মূলধারার জনগোষ্ঠীর সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যেতে একটি বড় পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল।কথা ছিল, প্রতিবছর এ ধরণের একটি আয়োজন এখানে করা হবে।কিন্তু সেই ধারাবাহিকতা বেশিদিন রক্ষিত হয়নি। সিদ্দিরা এখন তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে প্রতিনিয়ত লড়াই করছেন।
বর্তমানে জুজি ১৪ জনের একটি ছোট অ্যাথলেট দল নিয়ে কাজ করছেন। দলের সকলেই সিদ্দি। জুজির আশা, ২০২৪ সালের অলিম্পিকে তাদের মধ্য থেকে কেউ না কেউ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার যোগ্যতা অর্জন করবেন। তিনি সেই অনুসারে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন এবং প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছেন। তার এই আশা পূর্ণ হলে প্রায় তিন দশক পূর্বের অতৃপ্তি ভুলতে পারবেন তিনি। একটি মেডেল সিদ্দিদের মাঝে আবার পুনর্জাগরণ নিয়ে আসতে পারে এমনটিই তার বিশ্বাস। জুজির এই স্বপ্ন পূরণ হোক আমাদেরও সেই প্রত্যাশা।
– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –- মারা গেছেন জাতীয় পতাকার নকশাকার মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস
- আইপিএল থেকে চাইলেও যে কারণে যেতে পারেননি বাংলাদেশি এক ক্রিকেটার
- জুম্মাবার ও নামাজের গুরুত্ব
- শিল্পী সমিতির নির্বাচনে এফডিসিতে নিরাপত্তা জোরদার
- বিজিপির আরো ১৩ সদস্য আশ্রয় নিলো বাংলাদেশে
- সড়কে দুর্ঘটনা রোধে প্রতিদিন মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশ
- তীব্র গরমের মধ্যেই ধেয়ে আসছে ঝড়-শিলাবৃষ্টি
- ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু
- ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে
- দ্রুত শিক্ষকদের শূন্য পদ পূরণের সুপারিশ
- বিচ্ছিন্নভাবে দেশের স্বার্থ অর্জন করার সুযোগ নেই: সেনা প্রধান
- মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সম্মানি বাড়বে
- ২৪ এপ্রিল ব্যাংকক যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
- দাবদাহে পুড়ছে দেশ, সুস্থ থাকতে যা করবেন
- ‘উপজেলা নির্বাচনে কেউ প্রভাব বিস্তার করতে এলে ব্যবস্থা’
- বাংলাদেশে শিশুখাদ্য নিডো-সেরেলাক নিয়ে ভয়ঙ্কর তথ্য
- ঘরে বসে আয়ের প্রলোভন, পলকেই নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ
- উপজেলা নির্বাচন: প্রথম ধাপে বৈধ এক হাজার ৭৮৬ প্রার্থী
- অপপ্রচার রোধে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নেয়া হবে
- নাশকতার মামলায় জেলা যুবদলের সভাপতি কারাগারে
- সাত বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনা
- প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
- বিরলে গ্রাম আদালত বিষয়ক দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত
- রংপুরে সংবর্ধনায় সিক্ত ব্যরিস্টার আনিকা তাসনিয়া
- যৌতুক ছাড়াই একসঙ্গে বিয়ে করলেন দুই বন্ধু
- ইরানের হামলা নিয়ে এবার ইসরায়েল-সৌদি পাল্টাপাল্টি মন্তব্য
- ‘মুস্তাফিজের শেখার কিছু নেই, আইপিএলে অন্যরাই তার থেকে শিখবে’
- বোট ক্লাব কাণ্ড: পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আবেদন
- তীব্র তাপপ্রবাহ বিষয়ে যা বলেছেন রাসূলুল্লাহ (সা.)
- বাংলাদেশে কোনো অবৈধ সশস্ত্র সংগঠন থাকবে না: র্যাব ডিজি
- বৈশাখ আয়োজনে রঙ বাংলাদেশ
- আন্তর্জাতিক চাপে মুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশি নাবিকরা: নৌপ্রতিমন্ত্রী
- ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭২.৫১ শতাংশ
- তাপমাত্রা ছুঁতে পারে ৪২ ডিগ্রি, ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা
- টিভি চ্যানেলের অবৈধ সম্প্রচারে আইনগত ব্যবস্থা: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
- ‘বনভূমি দখলে স্থাপিত রিসোর্টগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালবে’
- নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্তক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের
- চকবাজারে কেমিক্যাল গোডাউনের আগুন নিয়ন্ত্রণে
- ‘আশ্রয় নেয়া মিয়ানমার সামরিক সদস্যদের দ্রুত ফেরত পাঠানো হবে’
- তুলার উৎপাদন বাড়াতে ১০ কোটি টাকার প্রণোদনা
- ইসরায়েলের এই বর্বরতা মেনে নেয়া যায় না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- এনএসআইর নতুন ডিজি হোসাইন আল মোরশেদ
- মাঠে গড়ালো চতুর্থ দিনের খেলা
- লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা
- পরীক্ষামূলক জিরা চাষে কৃষকের বাজিমাত
- ত্বকের দাগ দূর করবেন যেভাবে
- ‘যাকাত বোর্ড শক্তিশালী হলে দারিদ্র্য বিমোচন ত্বরান্বিত হবে’
- এবার ঈদে ৯০ লাখ মানুষ সড়কপথে ঢাকা ছাড়বে
- দুপুরের মধ্যে ৮০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে ঝড়
- বাংলা নববর্ষ উদযাপনে মানতে হবে ১৩ নির্দেশনা