ঈমানের ৬ স্তম্ভের বর্ণনা...
প্রকাশিত: ১৫ অক্টোবর ২০২০
যার ঈমান আছে তাকে বলা হয় ঈমানদার বা মুমিন। মুমিন হওয়ার প্রথম শর্ত হলো কালিমা পাঠ করা, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’।
ঈমান আনার অনিবার্য অর্থ, বান্দা নিজেকে আল্লাহর কাছে সমর্পণ করবে।
ঈমান একটি আরবি শব্দ। এর সাধারণ অর্থ হলো- বিশ্বাস করা। এছাড়াও আনুগত্য করা, অবনত হওয়া, নির্ভর করা ইত্যাদি অর্থেও ঈমান শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহর পক্ষ থেকে হজরত জিবরাইল (আ.) ছদ্মবেশে এসে বিশ্ব নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসার্লামকে জিজ্ঞেস করেন, ঈমান কাকে বলে? জবাবে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ঈমানের হাকিকত বা স্বরূপ হলো, তুমি বদ্ধমূলভাবে বিশ্বাস স্থাপন করবে আল্লাহ তায়ালার প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, আসমানি কিতাবগুলোর প্রতি, আল্লাহর নবী-রাসূলদের প্রতি, কেয়ামত দিবসের প্রতি এবং তাকদিরের প্রতি- অর্থাৎ এ কথা বিশ্বাস করা, ভালো-মন্দ সব কিছুই আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত হয়।’ (বুখারি, হাদিস: ৫০)
উল্লিখিত হাদিসে ঈমানের ছয়টি স্তম্ভের কথা বলা হয়েছে। সেগুলো হলো-
(১) আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস: ঈমানের ছয়টি মৌলিক স্তম্ভের প্রথম এবং প্রধান স্তম্ভ হলো মহান আল্লাহ তায়ালার ওপর ঈমান তথা বিশ্বাস স্থাপন করা। আল্লাহর ওপর ঈমান আনার অর্থ এ কথা বিশ্বাস করা, আল্লাহ এক, অদ্বিতীয় ও অতুলনীয়। তাঁর কোনো অংশীদার নেই, তাঁর কোনো কিছুর অভাব নেই। তিনিই সবার সব অভাব পূরণকারী। তিনি কারো বাবা নন, ছেলেও নন। তাঁর সমতুল্য কেউ নেই।
একমাত্র তিনিই সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা, রক্ষাকর্তা ও পালনকর্তা, বিধানদাতা। আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই। তিনিই একমাত্র ইবাদত পাওয়ার যোগ্য। তিনি চিরঞ্জীব, তাঁর মৃত্যু নেই। তিনি ছাড়া অন্য সব কিছুই ক্ষয়শীল ও ধ্বংসপ্রাপ্ত; কিন্তু তাঁর ক্ষয়ও নেই, ধ্বংসও নেই। সব কিছুর ওপরই তাঁর ক্ষমতা চলে। কিন্তু তাঁর ওপর কারো ক্ষমতা চলে না।
(২) ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস: ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান বা বিশ্বাস স্থাপনের অর্থ হলো, ফেরেশতাদের অস্তিত্ব দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা। তারাও আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টি। আল্লাহ তাঁদের যা আদেশ করেন, তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে তা পালন করেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘...বরং ফেরেশতারা তো আল্লাহর সম্মানিত বান্দা। তারা আগ বেড়ে কথা বলতে পারে না এবং তারা তাঁর আদেশেই কাজ করে।’ (সূরা: আম্বিয়া, আয়াত: ২৬-২৭)
(৩) আসমানি কিতাবের প্রতি বিশ্বাস: আল্লাহ তায়ালা মানুষের পথপ্রদর্শনের জন্য নবী-রাসূলদের ওপর বিভিন্ন আসমানি কিতার নাজিল করেছেন। সেই কিতাবগুলোর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করাও ঈমানের মৌলিক স্তম্ভ।
এ ধরনের কিতাবগুলো হচ্ছে- কোরআন, তাওরাত, জাবুর, ইঞ্জিল। এ কিতাবগুলোর কথা আল্লাহ কোরআনে উল্লেখ করেছেন। ঈমান আনার নির্দেশ দিয়ে মহান আল্লাহ ইরশাদ করে, ‘...বলে দাও, আল্লাহ যে কিতাব নাজিল করেছেন, আমি তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছি...।’ (সূরা: শুরা, আয়াত: ১৫)
(৪) রাসূলদের প্রতি বিশ্বাস: আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে অনেক নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন। সেই রাসূলদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করাও ঈমানের মৌলিক স্তম্ভের অন্তর্ভুক্ত। দৃঢ়ভাবে এ বিশ্বাস পোষণ করা যে আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক জাতির জন্য একজনকে রাসূল বানিয়ে পাঠিয়েছেন। যিনি তাদের এক আল্লাহর ইবাদত করার এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য সব কিছুর ইবাদতকে অস্বীকার করার দাওয়াত দেন। সব রাসূল সত্যবাদী, সত্যায়নকারী, পুণ্যবান, সঠিক পথের দিশারি, তাকওয়াবান ও বিশ্বস্ত। নবী-রাসূলরা মাসুম তথা নিষ্পাপ। আল্লাহ তাঁদের যা কিছু দিয়ে পাঠিয়েছেন তাঁরা তা পরিপূর্ণভাবে পৌঁছে দিয়েছেন। কোনো অংশ গোপন বা পরিবর্তন করেননি। নিজে থেকে কোনো সংযোজন বা বিয়োজন করেননি। আল্লাহ বলেন, ‘...রাসূলদের দায়িত্ব তো শুধু সুস্পষ্ট বাণী পৌঁছে দেওয়া।’ (সূরা: নাহল, আয়াত: ৩৫)
আর এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে সর্বশেষ রাসূল হচ্ছেন আমাদের নবী মুহাম্মদ (সা.)। তাঁর পর আর কোনো নবী আসবেন না। মহান আল্লাহ বলেন, ‘মুহাম্মদ তোমাদের কোনো ব্যক্তির বাবা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী। আল্লাহ সব বিষয়ে জ্ঞাত।’ (সূরা: আহজাব, আয়াত: ৪০)
হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে প্রাণের চেয়ে বেশি ভালোবাসা এবং তাঁর নিয়ে আসা শরীয়তের আলোকে জীবন পরিচালনা করা মুমিন হওয়ার পূর্বশর্ত।
(৫) পরকালে বিশ্বাস: পরকাল বা শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাসও ঈমানের মৌলিক স্তম্ভের অন্তর্ভুক্ত। এ বিশ্বাসের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয়কে প্রাধান্য দিতে হবে-
ক. পুনরুত্থানে বিশ্বাস: মৃত ব্যক্তিদের কবর থেকে আবার জীবিত করা হবে। সব মানুষ আল্লাহ তায়ালার সামনে দণ্ডায়মান হবে। তাদের পোশাক ও জুতা এক জায়গায় একত্র করা হবে। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের এরপর মৃত্যুবরণ করতে হবে। অতঃপর নিশ্চয়ই তোমাদের কেয়ামতের দিন আবার উঠানো হবে। (সূরা: মুমিনুন, আয়াত: ১৫-১৬)
খ. হিসাব-নিকাশ ও মিজানে বিশ্বাস: সৃষ্টিজীব দুনিয়ায় যেসব কর্ম করেছে, আল্লাহ তায়ালা কেয়ামতের দিন তাদের সেসব কর্মের হিসাব নেবেন। মিজান বা পাল্লায় আমলগুলো ওজন করা হবে। যার বদ আমলের চেয়ে নেক আমলের পাল্লা ভারী হবে সে জান্নাতি হবে। যার নেক আমলের চেয়ে বদ আমলের পাল্লা ভারী হবে সে জাহান্নামি হবে। আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর যার ডান হাতে তার আমলনামা দেওয়া হবে, অচিরেই তার হিসাব-নিকাশ সহজ করা হবে। বস্তুত সে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে সন্তুষ্টচিত্তে ফিরে যাবে। কিন্তু যার আমলনামা তার পিঠের পেছনের দিক থেকে দেওয়া হবে, সে অচিরেই মৃত্যুকে ডাকবে এবং সে উত্তপ্ত জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (সূরা: ইনশিকাক, আয়াত: ৭-১২)
গ. জান্নাত ও জাহান্নামে বিশ্বাস: জান্নাত হলো চিরস্থায়ী সুখ-শান্তির স্থান। মহান আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের জন্য তা তৈরি করে রেখেছেন। আর জাহান্নাম চিরস্থায়ী দুঃখ-কষ্টের স্থান। আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের অবাধ্যদের জন্য আল্লাহ তা তৈরি করে রেখেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের ক্ষমা ও জান্নাতের জন্য দ্রুত অগ্রসর হও। যার প্রশস্ততা হলো আসমান ও জমিন সমতুল্য, যা মুত্তাকিদের জন্য তৈরি করা হয়েছে।’ (সূরা: আলে ইমরান, আয়াত: ১৩৩)
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘অতঃপর যারা হতভাগ্য তারা থাকবে দোজখে। এবং সেখানে তাদের জন্য থাকবে চিৎকার ও আর্তনাদ।’ (সূরা: হুদ, আয়াত: ১০৬)।
৬. তাকদিরে বিশ্বাস: তাকদিরে বিশ্বাস করা ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তাকদিরের শব্দমূল হচ্ছে কদর। এর অর্থ হচ্ছে পরিমাণ নির্ধারণ, পরিমাপ, পরিমিতি, মূল্যায়ন, নির্দিষ্ট সীমা, মূল্য নিরূপণ, অদৃষ্ট, নিয়তি, ভাগ্য ইত্যাদি। তাকদির হচ্ছে আল্লাহর বিশ্বজনীন নিয়মনীতি। এ নিয়মনীতি ও ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ার অধীনে বিশ্বজগৎ পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়ে আসছে।
মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা যা করেন ভালোর জন্যই করেন- এ বিশ্বাস লালন করা এবং তাঁর বিধিব্যবস্থায় সন্তুষ্ট থাকার মধ্যেই শান্তি ও মঙ্গল নিহিত রয়েছে। কোনো কল্যাণকর কিছু ঘটলে আল্লাহ তায়ালার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হবে।
আর অকল্যাণকর কিছু ঘটলে তাওবা-ইস্তেগফার এবং ধৈর্য ধারণ করতে হবে। সেই সঙ্গে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি ও নৈকট্য পাওয়ার ইচ্ছা প্রবল করতে হবে এবং তদনুযায়ী আমল বা চেষ্টা-তদবির করে যেতে হবে।
রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা আমাদের পরিপূর্ণ ঈমানদার হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –- গাইবান্ধায় যুব উন্নয়নে সরকারি উদ্যোগ নিয়ে মতবিনিময় সভা
- রংপুরে ইসতিসকার নামাজ আদায়
- দ্বিতীয় সাক্ষাতেও গুজরাটকে হারাল দিল্লি
- খুন হওয়ার ভয়ে বাড়ি ছাড়লেন সালমান খান
- সব রোগ-ব্যাধি থেকে শেফা লাভের সূরা
- জিম্মি এক ইসরায়েলি-আমেরিকানের ভিডিও প্রকাশ করেছে হামাস
- কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ
- বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
- র্যাবের নতুন মুখপাত্র আরাফাত ইসলাম
- গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন
- গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ
- মরিশাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক
- এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাজ্য
- সব ডিসি-এসপির সঙ্গে ইসির বৈঠক আজ
- হিট অ্যালার্ট আরো তিনদিন বাড়লো
- বিআরটিএর অভিযানে ৪০৪ মামলায় ৯ লাখ টাকা জরিমানা
- ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
- পঞ্চগড়ে বৃষ্টির আশায় ইসতিসকার নামাজ আদায়
- তেঁতুলিয়া তীব্র তাপপ্রবাহে নলকূপে মিলছে না পানি
- বোদায় ট্রাক-ট্রাক্টর সংঘর্ষে নিহত ২
- গ্রীষ্মকালে শীতল ত্বক
- ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী
- মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরছেন ১৭৩ বাংলাদেশি
- হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ৪ নির্দেশনা
- চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা
- উপজেলা নির্বাচনে বিজিবি মোতায়েন করা হবে
- পুলিশের প্রতি ১১ নির্দেশনা
- প্রথম ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ২৬ প্রার্থী
- চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়ন অগ্রগতি ৫০ ভাগ
- শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা, তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে
- শেষ বলে ১ রানের নাটকীয় জয় পেল কলকাতা
- কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ
- বৈশাখ আয়োজনে রঙ বাংলাদেশ
- আন্তর্জাতিক চাপে মুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশি নাবিকরা: নৌপ্রতিমন্ত্রী
- তাপমাত্রা ছুঁতে পারে ৪২ ডিগ্রি, ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা
- টিভি চ্যানেলের অবৈধ সম্প্রচারে আইনগত ব্যবস্থা: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
- ‘বনভূমি দখলে স্থাপিত রিসোর্টগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালবে’
- নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্তক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের
- শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা, তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে
- ‘আশ্রয় নেয়া মিয়ানমার সামরিক সদস্যদের দ্রুত ফেরত পাঠানো হবে’
- তুলার উৎপাদন বাড়াতে ১০ কোটি টাকার প্রণোদনা
- ইসরায়েলের এই বর্বরতা মেনে নেয়া যায় না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- এনএসআইর নতুন ডিজি হোসাইন আল মোরশেদ
- লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা
- ‘সব প্রাইভেট হাসপাতালের রোগনির্ণয় ফি নির্ধারণ করা হবে’
- পরীক্ষামূলক জিরা চাষে কৃষকের বাজিমাত
- জনপ্রিয় অভিনেতা রুমি মারা গেছেন
- ত্বকের দাগ দূর করবেন যেভাবে
- গরমকালে বাড়ি ঠান্ডা রাখার চীনা প্রাচীন কৌশল
- ‘যাকাত বোর্ড শক্তিশালী হলে দারিদ্র্য বিমোচন ত্বরান্বিত হবে’