• মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

  • || ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

গাইবান্ধায় বাবা-মায়ের ঝগড়া, মা হারা হলো দুই শিশু

প্রকাশিত: ৮ নভেম্বর ২০২১  

গাইবান্ধা সদর উপজেলার ইউপি নির্বাচনে সদস্য প্রার্থী ফজলে রাব্বীর বিরুদ্ধে স্ত্রী রতনা বেগমকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। 
সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউপির উত্তর খোলাহাটী ঢোলমারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ সোমবার সকালে নিহতের লাশ উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। 

এই ঘটনায় ফজলে রাব্বীর দ্বিতীয় স্ত্রী ফারজানা বেগমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ফজলে রাব্বি চলতি ইউপি নির্বাচনে খোলাহাটী ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য পদে মোরগ মার্কা নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

স্থানীয়রা জানায়, উত্তর খোলাহাটী ঢোলমারা গ্রামের লতিফ মিস্ত্রির ছেলে দাদন ব্যবসায়ী ফজলে রাব্বীর সঙ্গে ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউপির হোসেনপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে রতনা বেগমের সঙ্গে প্রায় সাত বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে চাপ দিয়ে আসতো ফজলে রাব্বী। রতনা বেগম দুই ছেলের জননী। ফজলে রাব্বী পরকীয়া করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রায় ৬ মাস আগে অন্যের স্ত্রী ফারজানা বেগমকে দ্বিতীয় বিয়ে করে। এ নিয়ে সংসারে প্রায় ঝগড়া-বিবাদ চলে আসছিল। প্রতিবেশীরা বিবাদ মেটাতে এগিয়ে আসলে তাদেরও মারপিট করে তাড়িয়ে দিতো।

জানা যায়, নিহতের ছেলে রনি (৬) রোববার দুপুরে পাখির বাসার জন্য গাছে উঠলে ব্যথা পায়। এই খবর জানার পর বিকেলে ফজলে রাব্বী তার ছেলে রনির দুই হাত বেঁধে বুকে ইট চাপা দিয়ে মাটিতে শুয়ে রাখে। এতে রনির বা হাত ভেঙে যায় এবং চিকিৎসা না করে বাড়িতে রেখে দেয়। এই ঘটনায় রনির মা রতনা বেগম প্রতিবাদ করলে ফজলে রাব্বী তাকে বেদম মারপিট করে। রাতে মায়ের সঙ্গে রনি ও তার ছোট ভাই হাবিব(৪) ঘুমিয়ে পড়ে। 

ফজলে রাব্বী নির্বাচনী প্রচারণা শেষে গভীর রাতে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে অন্য কক্ষে ঘুমায়। ভোরে নিহত রতনা বেগম বাড়ির আঙ্গিনা ঝাড়ু দিয়ে খড়ির ঘর ঝাড়ু দিতে যায়। তখন ফজলে রাব্বী স্ত্রী রতনা বেগমকে বেদম মারপিট করে। এতে রতনা বেগম মারা গেলে তার লাশ খড়ির ঘরের ধরনার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রাখার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে রতনার লাশ বিছানায় রেখে পালিয়ে যায় ফজলে রাব্বী। 
সকালে ঘুম থেকে দুই ভাই রনি ও ছোট ভাই হাবিব মা রতনা বেগমকে পাশে মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে কান্নাকাটি করে। পরে আশপাশের লোকজন এসে রতনা বেগমের লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে এলাকাবাসী নিহতের সতিন ফারজানা বেগমসহ ফজলে রাব্বীকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ করে। তারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের ফাঁসির দাবি জানান। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে নিহতের সুরতহাল তৈরি করে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

গাইবান্ধা সদর থানার ওসি তদন্ত মো. আব্দুর রউফ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের সতিন ফারজনা বেগমকে আটক করা হয়েছে। 

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –