• শনিবার ১১ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৮ ১৪৩১

  • || ০২ জ্বিলকদ ১৪৪৫

৩০ টাকা কেজিতে চাল পেয়ে উত্তরাঞ্চলের মানুষের মুখে হাসি

প্রকাশিত: ২ সেপ্টেম্বর ২০২২  

৩০ টাকা কেজিতে চাল পেয়ে উত্তরাঞ্চলের মানুষের মুখে হাসি               
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় (ওএমএস) সারা দেশে খোলা বাজারে চাল ও আটা বিক্রি কার্যক্রম চলছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (০১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিভিন্ন জেলায় ৩০ টাকা কেজি দরে চাল ও ১৮ টাকা কেজিতে আটা বিক্রি করছেন ডিলাররা। কর্মসূচির আওতায় টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারীরাও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাল কিনতে পারছেন। কম দামে চাল পেয়ে নিম্নআয়ের মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে।

জানা গেছে, ৩০ টাকা কেজি দরে ১৫ দিন পরপর পাঁচ কেজি করে চাল কিনতে পারবেন নিম্নআয়ের মানুষজন। তবে যাদের টিসিবি কার্ড নেই তাদের এনআইডি কার্ডের বিপরীতে একই পরিমাণ চাল দেওয়া হবে।

হিলি:
দিনাজপুরের হিলিতে নিম্নআয়ের মানুষের সুবিধার জন্য ৩০ টাকা কেজি দরে ওএমএসের চাল বিক্রি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বাজারের চেয়ে কম দামে চাল কিনতে পেরে খুশি নিম্নআয়ের মানুষজন।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় হিলি স্থলবন্দরের চারমাথা মোড়ে হাকিমপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন উর রশীদ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূর-এ আলম আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হাকিমপুর পৌরসভার মেয়র জামিল হোসেন, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোস্তাফিজুর রহমান, হিলি খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা খলিলুর রহমান, ওএমএস ডিলার লিয়াকত আলি ও মাহমুদুল হাসান।

চাল পাওয়া আব্দুল্লাহ আল মামুন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বাজারে ৫০ টাকার নিচে কোনও চাল নেই। চাল কিনবো নাকি তরকারি কিনবো, তা নিয়ে বিপাকে ছিলাম। এ অবস্থায় সরকার আমাদের জন্য আজ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি শুরু করেছে। এতে আমরা অনেক খুশি।

হাকিমপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন উর রশীদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগে উপজেলার তিন স্থানে প্রতি দিন দুই হাজার কেজি করে চাল ৪০০ মানুষের মাঝে ওএমএস ডিলারের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে। টিসিবির কার্ডধারীসহ নিম্নআয়ের মানুষজন ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি দিয়ে মাসব্যাপী ৩০ টাকা কেজি দরে চাল কিনতে পারবেন।

পঞ্চগড়:
পঞ্চগড়ে ওএমএস, টিসিবি ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১ লাখ ২৬ হাজার মানুষের মাঝে চাল বিক্রি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় সরকারি স্টেডিয়ামের সামনে জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ৮৮ জন ডিলারের মাধ্যমে জেলার পাঁচ উপজেলা ও তিনটি পৌরসভাসহ ৪৩টি ইউনিয়নে ১ লাখ ২৬ হাজার মানুষের মাঝে স্বল্পমূল্যে চাল বিক্রি করা হচ্ছে। 

দিনাজপুর:
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় দিনাজপুর শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের মিশন রোডে চাল বিক্রির কার্যক্রম উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকি। ওএমএস ও টিসিবি কার্যক্রমে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রশাসন ও খাদ্য বিভাগ কাজ করছে। যাতে প্রত্যেক মানুষ সমন্বয়ের মাধ্যমে সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিতে পারে। সেজন্য ওএমএস ও টিসিবি কার্যক্রম সমন্বয় করা হয়েছে। ওএমএস কার্যক্রমে ৩০ টাকা কেজি দরে জনপ্রতি পাঁচ কেজি করে চাল ও ১৮ টাকা কেজি দরে জনপ্রতি তিন কেজি আটা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া টিসিবির কার্ডধারীরা পাঁচ কেজি করে মাসে দুবার ১০ কেজি চাল নিতে পারবেন।

রংপুর :
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রংপুরসহ জেলার ৪৪টি পয়েন্টে ওএমএসের চাল বিক্রি শুরু হয়েছে। দুপুর ১২টায় নগরীর রবার্টসনগঞ্জ এলাকার চাল বিক্রির উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ও রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান। প্রতিজন ডিলারকে ২ মেট্রিক টন করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকে ৩০ টাকা কেজি দরে পাঁচ কেজি চাল কিনতে পারবেন। এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নিম্নআয়ের মানুষজন। 

জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, রংপুর নগরী ছাড়া আরও দুটি পৌরসভা ও উপজেলা সদরের ৪৪টি স্থানে সপ্তাহে পাঁচ দিন পাঁচ কেজি করে চাল বিক্রি করা হবে। 

নীলফামারী:
নীলফামারীতে শুরু হয়েছে ওএমএস এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি। এতে প্রতিদিন সুবিধা পাবেন জেলার ১৫ হাজার ২০০ জন। পাশাপাশি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় এক লাখ ৩২ হাজার ৯১১ জন সুবিধা পাবেন।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় জেলা শহরের মশিউর রহমান ডিগ্রি কলেজ মাঠে একযোগে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. নাজমুল হক বলেন, ওএমএস কর্মসূচির আওতায় জেলার ছয় উপজেলায় প্রতিদিন ১৫ হাজার ২০০ জন সুবিধাভোগী ১৯টি পয়েন্ট থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে পাঁচ কেজি করে চাল কিনতে পারবেন। জেলায় মোট ৪২ জন ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন ১৯ জন করে ডিলার ১৯টি পয়েন্টে দুই মেট্রিক টন করে ৩৮ মেট্রিক টন চাল বিক্রি করবেন। ওএমএস কার্যক্রম সপ্তাহে পাঁচ দিন ও মাসে সরকারি ছুটি ছাড়া ২২ দিন চলবে।

অপরদিকে, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় জেলায় এক লাখ ৩২ হাজার ৯১১ জন সুবিধাভোগী ১৫ টাকা কেজি দরে পাঁচ কেজি করে চাল কিনতে পারবেন। এজন্য জেলার ছয় উপজেলায় ২৬৭ জন ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতিদিন টিসিবি কার্যক্রমের মাধ্যমে ভোক্তারা পাঁচ কেজি করে চাল কিনতে পারবেন।

জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, সুবিধাভোগীরা যাতে ভোগান্তির শিকার না হন, সেজন্য উপজেলা প্রসাশনকে সবসময় কড়া নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –