• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

এগিয়ে চলার নাম শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২  

১৯৪৭ সালে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেওয়া এক বিস্ময় বালিকা শেখ হাসিনা। তিনি দেশের চারবারের প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জ্যেষ্ঠকন্যা। আজ তার জন্মদিন, পূর্ণ হলো পচাঁত্তর। এই মহীয়সী নারীকে জানাই জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যাকে বারবার সইতে হয়েছে ঘাত-প্রতিঘাত। প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় উচ্চশিক্ষিত শেখ হাসিনা পারিবারিকভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন পরমাণু বিজ্ঞানী রংপুরের ছেলে ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে। দুই সন্তানের জননী শেখ হাসিনা ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট ইতিহাসের নির্মম ট্রাজেডির মুখোমুখি এক মেঘে ঢাকা সূর্যের নাম। তবে মেঘ যেমন সূর্যকে আড়াল করতে পারে না, তেমনি ইতিহাসের নির্মম হত্যাকাণ্ডের শোকে ভেঙে গেলেও নিঃশেষ হননি তিনি। স্বামীর সঙ্গে বিদেশে থাকায় ছোট বোন রেহানাসহ প্রাণে বেঁচে যান ভাগ্যগুণে। তবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন উজ্জ্বল সূর্যের মতোই শক্ত হয়ে। তার ঘুরে দাঁড়ানোর ইতিহাসের পথটি খুব মসৃণ ছিল না। রাষ্ট্রনায়ক বাবাকে হারিয়ে প্রায় ছয় বছর অন্যের আশ্রয়ে (বিদেশ) থেকেছেন তিনি। প্রতি মুহূর্ত স্বপ্ন বুনেছেন পিতার স্বপ্নকে বাস্তবায়নের অদম্য সাহসে। সেই সাহসিকতার হাত ধরে ১৯৮১ সালে দেশে ফেরেন শত বাধার মুখে। দেশে ফিরে হাল ধরেন বাবার গড়া রাজনৈতিক দলের।

এক যুগেরও বেশি সময় অর্থাৎ ১৫ বছরের রাজনৈতিক লড়াইয়ে ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে।

রক্তের ঋণ সুধীতে হবে, প্রধানমন্ত্রী হয়ে প্রথমেই দেশের প্রধান শত্রু বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করেন তিনি। পরে স্বাধীন বাংলার স্থপতির হত্যাকারীদের বিচার শেষ করার আগেই হোঁচট খান ক্ষমতার পালা বদলে।

স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির ঐক্যে থেমে যেতে হয় এ যাত্রায়। তবে ভয় না পেয়ে কঠিন হাতে রাজনীতির হাল ধরেন তিনি। দুর্বার গতিতে এগিয়ে যায় প্রত্যয়, তবে ৭৫ এর ঘাতকরা রূপ বদলে ষড়যন্ত্রের জাল পাতেন‌ সারাদেশে। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাসহ প্রায় ২০টির মতো হামলার মুখোমুখি হন শেখ হাসিনা। তিনি প্রায়ই বলেন ‘রাখে আল্লাহ মারে কে‌’। নানা চড়াই-উতরাই পার করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে ২০০৮ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসেন। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু করে আর থামতে হয়নি তাকে। উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ শেখ হাসিনার হাত ধরেই বিশ্বের বুকে উন্নয়নের রোল মডেল। পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেল, অ্যালিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ দশটি বড় মেগাপ্রকল্প বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলার নাম শেখ হাসিনা। স্বপ্নের সোনার বাংলা এখন আর অসহায় না, মজবুত ভিতর ওপর দাঁড় করানো হয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। মহামারি পার হয়ে আসা বিশ্বের বুকে অবাক বিস্ময়। তিনি বিশ্বের প্রভাবশালী নারীদের মাঝে স্থান করে নিয়েছেন নিজের যোগ্যতায়। ২০১৪ সালে পুনরায় ক্ষমতায় এসে আশ্রয়ণ প্রকল্প হাতে নেন, অঙ্গীকার করেন স্বাধীন বাংলাদেশে গৃহহীন থাকবে না। দেশের আপামর মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নে নিরলস কাজ করে চলছেন শেখ হাসিনা। দেশের উন্নয়নকে কেন্দ্রীভূত না করে, বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে উন্নয়নের জোয়ার। গৃহহীনের জন্য ঘর এবং একটি বাড়ি একটি খামারসহ নানা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে শেখ হাসিনা এখন স্বপ্নের চূড়ায়। ক্ষমতার ধারাবাহিকতায় তিনি পঞ্চমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, যার নেতৃত্বে দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গ্রামীণ, অর্থনীতিতে নবযুগের সূচনা হয়েছে।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –