• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

বিনিয়োগের জন্য শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২  

বিদেশি বিনিয়োগের জন্য শান্তিপূর্ণ–স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখতে চান ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। পাশাপাশি শ্রমের মানোন্নয়ন ও মানবাধিকারের মতো বিষয়গুলো নিয়েও নিশ্চিত হতে চান তিনি।

ঢাকায় প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশের (আইবিএফবি) বার্ষিক সাধারণ সভায় মঙ্গলবার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কোম্পানি বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলে ব্যবসা প্রসারিত করতে চায়। কিন্তু তারা বিনিয়োগের আগে দেশে শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল পরিবেশ আছে কি না, তা জানতে চায়।

বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে হলে নীতিনির্ধারকদের এসব বিষয়কে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে বলে জানান তিনি।

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশের (আইবিএফবি) সভাপতি হুমায়ুন রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) চেয়ারম্যান জাইদী সাত্তার।

অনুষ্ঠানে পিটার হাস বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগকারী। পাশাপাশি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্যও যুক্তরাষ্ট্র।’

তাই দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বাড়ানোর মাধ্যমে দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কোম্পানি এ অঞ্চলে ব্যবসা প্রসারিত করতে চায় জানিয়ে রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে আমরা বাংলাদেশকে একটি ভালো ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরিতে সাহায্য করে যাচ্ছি। খুব শিগগির ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে বাণিজ্য বিভাগের পূর্ণকালীন অ্যাটাশে স্থাপন করা হবে। এতে দুই দেশের ব্যবসার ক্ষেত্রে সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ তৈরি হবে।’

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রশংসা করে রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘করোনার মধ্যে এদেশের অর্থনীতি এগিয়েছে। মধ্যবিত্তের সংখ্যাও বাড়ছে। ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ এখন বড় বাজার। তবে বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআই আকর্ষণে বাংলাদেশ কতটুকু প্রস্তত তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।’

তিনি মনে করেন, এফডিআই বাড়ানোর জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চলের সংখ্যা বাড়ালেই হবে না পাশাপাশি পানি, বিদ্যুৎ গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। আর এর জন্য প্রয়োজন দক্ষ মানবসম্পদ।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিষয়ে পিটার হাস বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র। যতক্ষণ পর্যন্ত মিয়ানমারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন সম্ভব না হয়, ততক্ষণ এ সমর্থন থাকবে।’

বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নে সহযোগিতা দিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র জানিয়ে পিটার বলেন, ‘এ বিষয়ে বিজনেস কাউন্সিল দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সংলাপের আয়োজন করতে পারে।’

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেন, ‘এলডিসি থেকে উত্তরণের পরও জিএসপি প্লাস কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। তবে তার জন্য দুর্নীতি প্রতিরোধ, মানবাধিকার, শ্রম অধিকারের মতো বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে হবে। আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশের এই বিষয়গুলো নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখবে ইইউ।’

প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ জন্য শুল্ক, করকাঠামো এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরও ব্যবসা সহায়ক হওয়া প্রয়োজন।’

জায়েদী সাত্তার বলেন, ‘বাণিজ্য উন্নয়নে চীনের মডেল অনুসরণ করতে পারে বাংলাদেশ।’

পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –