• মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

  • || ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

পরচুলা তৈরি করে লেখাপড়ার খরচ চালাচ্ছে তারা 

প্রকাশিত: ১৭ এপ্রিল ২০২৪  

পঞ্চগড়ের নারী শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার পাশাপাশি পরচুলা বা নকল চুল তৈরি করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে। পড়াশোনার খরচ জোগানোর পাশাপাশি সংসারেও আনছে বাড়তি আয়। হাতে তৈরি এই চুল রপ্তানি হচ্ছে দেশে বিদেশে।

পরচুলা বা নকল চুল তৈরির শুরুটা করেছিলো সদর উপজেলার খোলাপাড়া গ্রামের মনিরা আক্তার। তিনি তখন ইডেন কলেজে পড়ছিলেন। ঢাকাতেই এক বড় ভাইয়ের হাত ধরে পরচুলা তৈরির প্রশিক্ষণ নেন তিনি। প্রথমে নিজেই কাজ শুরু করেন। ধীরে ধীরে সফলতা পান। তারপর বাড়ি ফিরে এসে এলাকার বেশ কিছু নারী শিক্ষার্থীকে পরচুলা বা নকল চুল তৈরি করার পদ্ধতি শিখিয়ে দেন। 

মনিরা আক্তার বলেন, ‘বিভিন্ন নারীর কাছ থেকে ফেরিওয়ালারা চুল সংগ্রহ করে আমাদের কাছে বিক্রি করেন। সুই আর সংগৃহিত সেই চুল একটা মাথার ডামির উপর রেখে সুচারুভাবে লাগানো হয়। তারপর এই পরচুলা আমরা ঢাকার বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বিক্রি করি।

আজ থেকে কয়েক বছর আগে একাই শুরু করেছিলাম। বর্তমানে আমার কারখানায় অন্তত ২০০ মেয়ে কাজ করে। আমি মাসে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা আয় করি। কেউ চুল আর ডামি নিজেদের বাড়িতে নিয়ে যায়। সময় মতো পরচুলা বানিয়ে কারখানায় নিয়ে আসে। এখন বিভিন্ন গ্রামে মেয়েরা এই কাজ করে তাদের লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করছে।’

মকবুলার রহমান সরকারি কলেজে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী লুবনা আক্তার বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি পরচুলা তৈরি করে মাসে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা আয় করি। এখন আর বাবা মায়ের কাছ থেকে লেখাপড়ার খরচ নিতে হয় না। 

একই কলেজের শিক্ষার্থী সদর উপজেলার আমলাহার গ্রামের মিষ্টি আক্তার জানান, পড়াশোনার খরচ জোগানোর পাশাপাশি পরিবারকেও সাহায্য করতে পারছি। অনেক মেয়েই এখন এই কাজ করে।

স্থানীয়রা বলছেন, এই এলাকার নারীরা নিজেরাই স্বাবলম্বী হওয়ার পথ বেছে নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তবে সহযোগিতা পেলে তারা আরও এগিয়ে যাবে। 

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, নারীদের সাফল্যে তারা গর্বিত। এগিয়ে যাবার জন্য যে কোন ধরনের সহযোগিতা করবেন তারা। 

জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান মনিরা পারভিন জানান, পঞ্চগড়ের নারীরা এখন আর বসে থাকতে চায় না। সবাই কর্মমুখী হচ্ছে। পরচুলা তৈরি করে মেয়েরা আয় রোজগার করে সংসারে সহযোগিতা করছে। আমাদের মহিলা সংস্থায় এই ট্রেড নাই। ট্রেডটি সংযুক্ত করা গেলে মেয়েদেরকে সহযোগিতা করা যেতো। সরকারি এব্যাপারে উদ্যোগী হলে ভালো হয়। তারপরও আমরা মেয়েদের খোঁজ খবর রাখছি। 

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –