• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

হেফাজতে ইসলামের নাশকতার ঘটনা ছিল পরিকল্পিত: নেতাদের জবানবন্দি   

প্রকাশিত: ৪ আগস্ট ২০২১  

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ঘিরে হেফাজতে ইসলামের নাশকতার ঘটনা ছিল পরিকল্পিত। বাস্তবায়নের এক মাস আগেই করা হয় নাশকতার ছক। বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সমন্বয় করেই এ পরিকল্পনা করা হয়। নাশকতার মাধ্যমে সরকারের পতনই ছিল তাদের লক্ষ্য।

দেশজুড়ে নাশকতার ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া হেফাজতে ইসলামের নেতাদের আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে উঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। এরই মধ্যে এ ঘটনায় দায়ের হওয়া সিংহভাগ মামলার তদন্ত শেষ করেছে পুলিশ। এতে প্রায় ৮০০ জনকে আসামি করে শিগগির দেওয়া হবে মামলার চার্জশিট।

হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা নাছির উদ্দিন মুনিরের আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর ঠেকাতে ৬ মার্চ ঢাকায় গোপন বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত এবং সমমনা ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী নেতারাসহ ঢাকা চট্টগ্রামের কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে ২৬ মার্চের আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করা হয়। ২৪ মার্চ ফের হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতারা ঢাকায় বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ২৬ মার্চের আন্দোলনে সরকার বাধা দিলে তা সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ দেওয়া হবে। 

হেফাজতে ইসলামের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন, হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের প্রতি আমাদের নির্দেশনা ছিল বিভিন্ন ইসলামী দল, বিএনপি, জামায়াতের নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার। গত ৬ মার্চ বিএনপি, জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক হয়। ২৪ মার্চ বিএনপি-জামায়াতের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করার পর ২৬ মার্চ সারা দেশে সরকারি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়।

হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরীর ব্যক্তিগত খাদেম এনামুল হক ফারুকী আদালতে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন,  হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতৃত্ব সরকার পতনের জন্য পরিকল্পনা করে। তারা বিএনপি, জামায়াতসহ বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন মাহফিল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারবিরোধী বক্তব্য দিতে থাকে। সরকারকে উৎখাত করতে পরিকল্পিতভাবে ২৬ মার্চ দেশব্যাপী নাশকতার সৃষ্টি করে। 

হেফাজতে ইসলামের সাবেক প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া নোমান ফয়েজী আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন, হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতাদের একটি ফেসবুক আইডি রয়েছে, যা একাধিক নেতা ও হেফাজতে ইসলামের আমিরের ব্যক্তিগত সহকারীরা পরিচালনা করে। ২৬ মার্চের আগে ও পরের গুজবগুলো ওই আইডি থেকে প্রচার করা হয়। ঢাকার ঘটনার গুজব নিয়ে ওই আইডি থেকে অপপ্রচার করা না হলে দেশব্যাপী নাশকতার ঘটনা এড়ানো যেত।

হেফাজতে ইসলামের সাবেক শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মুফতি হারুন ইজহার আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন, হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতাদের ইন্ধন ও নির্দেশে ২৬ মার্চ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নাশকতার ঘটনা ঘটে। হেফাজতে ইসলাম, বিএনপি এবং জামায়াত নেতাদের উদ্দেশ্য ছিল রাষ্ট্র ও সরকারকে অস্থিতিশীল করা। তারা স্বার্থ হাসিল করার জন্য মাদরাসার সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করেছে।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –