বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রচিন্তা বা মুজিববাদ
প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০২৩
অমিত গোস্বামী
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাষ্ট্রচিন্তাকে অনেকে ‘মুজিববাদ’ বলে উল্লেখ করেন। কিন্তু রাষ্ট্র নিয়ে বঙ্গবন্ধুর চিন্তাভাবনা সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়েছে, উন্নীত হয়েছে এবং বেশ কিছু অভিনব চিন্তাসূত্রের জন্ম দিয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক চিন্তা নিয়ে আলোচনা করতে হলে বা তার রাষ্ট্রচিন্তা বুঝতে হলে প্রথমেই একটা কথা মাথায় রাখতে হবে যে তার রাজনৈতিক শিক্ষা ও উন্মেষ হয়েছিল অবিভক্ত ভারতে ও কলকাতায়। কাজেই শুরু থেকেই তার রাষ্ট্র সম্পর্কিত চিন্তাক্ষেত্র ছিল সুদূর বালুচিস্তান থেকে পূর্ব বাংলা পর্যন্ত। বঙ্গবন্ধু জীবনের শুরুতেই প্রত্যক্ষ করেছিলেন পুঁজিবাদী, ভোগবাদী, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক দাসত্ত্বযুক্ত সমাজব্যবস্থা। তিনি ছিলেন তীব্র স্বদেশপ্রেমী এবং পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির চাপে তিনি পাকিস্তান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন।
পাকিস্তানের প্রতারণাটি তিনি ধরে ফেলতে পেরেছিলেন স্বাধীনতার আগেই যখন মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ পাকিস্তান প্রস্তাবে শের এ বাংলা এ কে ফজলুল হক প্রস্তাবিত ‘স্টেটস’ শব্দটিকে ‘স্টেট’ বলে সংশোধন করেন। কিন্তু তখন ‘পাকিস্তান’-এর দাবি এত তীব্র হয়ে উঠেছিল যে তিনি মুসলিম লীগের মূল স্রোতে থেকে শুধু পাকিস্তান প্রাপ্তিকেই মূল লক্ষ্য হিসেবে রাখেন। কিন্তু তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে পশ্চিম ভারতের মুসলমানেরা পূর্বে ও পশ্চিমে দুই পাকিস্তান হতে দেবেন না যা মূল পাকিস্তান প্রস্তাবে ছিল। তার আগে তিনি গভীরভাবে প্রভাবান্বিত ছিলেন নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর রাষ্ট্রচিন্তার দ্বারা। নেতাজী সুভাষের বিদেশি শাসকমুক্ত ধর্মনিরপেক্ষ কঠোর অনুশাসনে চলা সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের চিন্তা তার মধ্যে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। সে কারণে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ মূল চারটি নীতির ওপরে গঠিত হয়েছিল— জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র। ১৯৭২ সালের ৭ জুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তিনি বলেন, আগে স্লোগান ছিল ৬ দফা, এখন ৪টা স্তম্ভ। বাংলাদেশ রাষ্ট্র পরিচালনার চার মূলনীতি হিসেবে গৃহীত হয় এই চারটি নীতি। কিন্তু সে তো অনেক পরের কথা। বরং গোড়া থেকে বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রচিন্তার কাহিনী বলা যাক।
শেখ মুজিব বাল্যকাল থেকে হিন্দুদের মুসলমানদের প্রতি অশ্রদ্ধা ও অবদমিত রাখার চিত্র দেখে বড় হয়েছিলেন। পিতা লুৎফর রহমানও পূর্ববঙ্গীয় মুসলমানদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক দুরবস্থা দেখে মুসলিম লীগের সমর্থক ছিলেন। স্বাভাবিক নিয়মে বঙ্গবন্ধু মুসলিম লিগের সাথে সংপৃক্ত হয়েছিলেন। তবে নেতাজী সম্পর্কে জিন্নাহ’র যেমন শ্রদ্ধা ও ভরসা ছিল বঙ্গবন্ধুর নিজস্ব চিন্তাভাবনাতে একই ধারণা ছিল সুভাষের প্রতি। কিন্তু নেতাজী সম্পর্কে কংগ্রেস নেতাদের বিদ্বেষ তাকে তথাকথিত কংগ্রেস জাতীয়তাবাদের ভাবনা থেকে বিযুক্ত করেছিল। একইভাবে জিন্নাহ’র এক পাকিস্তান নীতিও তাকে ব্যথিত করেছিল। কিন্তু তখন তার কিছু করার ছিল না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত প্রতিবাদী মুজিবকে সংযত করেছিলেন তার রাজনৈতিক শিক্ষাগুরু হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দী। তিনি শিখিয়েছিলেন যে তিন পা এগোতে হলে দু’পা পিছোতে হয়। সে কারণে জিন্নাহ বাহিনীর ছলনাকে তিনি সহ্য করতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি পাকিস্তান গঠনের পরে কি দেখলেন? ’৪৮ সালে যখন বাঙালির ভাষার ওপর আঘাত এলো, তখন থেকেই বিষয়টি তার চেতনাকে আলোড়িত করতে শুরু করেছিল। হাজার মাইলের ব্যবধানে অবস্থিত পাকিস্তান রাষ্ট্রটির পূর্ব-পশ্চিমের মধ্যে বৈষম্যের পাহাড় গড়ে বাংলাকে কার্যত উপনিবেশে পরিণত করে ফেলা, ’৫৪-এর বিপুল ভোটে নির্বাচিত যুক্তফ্রন্টের প্রতি পাকিস্তানি শাসকচক্রের অগণতান্ত্রিক আচরণ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার পাকিস্তানি অপপ্রয়াস, ’৫৮-এর সামরিক স্বৈরাচারের রাষ্ট্রীয় মঞ্চে অবতরণ। এই সব দেখে শুনে শেখ মুজিব বাঙালির স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকেই তার রাজনৈতিক সংগ্রামের লক্ষ্যবিন্দুরূপে নির্ধারিত করে ফেলেছিলেন। তার সেই লক্ষ্যের কথাটি বোধ হয় সর্বপ্রথম স্পষ্ট ভাষায় ব্যক্ত করেছিলেন ’৬১ সালের নভেম্বরে। অবশ্য একটি গোপন বৈঠকে। বৈঠকটি ছিল সে সময়কার গোপন কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে। আইয়ুবের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনের নীতি ও কর্মপদ্ধতি স্থির করার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত সেই বৈঠকে কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মণি সিংহ ও খোকা রায় এবং আওয়ামী লীগের পক্ষে শেখ মুজিবুর রহমান ও তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া।
কমরেড খোকা রায় সামরিক শাসন প্রত্যাহার ও রাজবন্দিদের মুক্তিসহ মোট চারটি জনপ্রিয় দাবির ভিত্তিতে আন্দোলন গড়ে তোলার অভিমত ব্যক্ত করলে শেখ মুজিব বলেন, 'এসব দাবি-দাওয়া কর্মসূচিতে রাখুন, কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু দাদা, একটা কথা আমি খোলাখুলি বলতে চাই। আমার বিশ্বাস, গণতন্ত্র, স্বায়ত্তশাসন— এসব কোনো দাবিই পাঞ্জাবিরা মানবে না। কাজেই স্বাধীনতা ছাড়া বাঙালির মুক্তি নেই। স্বাধীনতার দাবিটা আন্দোলনের কর্মসূচিতে রাখা দরকার।’
কমিউনিস্ট পার্টি নীতিগতভাবে স্বাধীনতার প্রস্তাব সমর্থন করলেও তাদের মতে তখনো সে রকম দাবি উত্থাপনের সময় হয়নি। বঙ্গবন্ধু আর কী করবেন! ভেতরে ভেতরে তিনি সেই চূড়ান্ত লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হওয়ারই প্রস্তুতি নিতে থাকেন। তারই প্রমাণ পাই ছেষট্টির ছয় দফা ঘোষণায়, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে ও একাত্তরের সেই দুনিয়া কাঁপানো দিনগুলোতে এবং ১৬ ডিসেম্বর যুদ্ধজয়ের মধ্য দিয়ে স্বাধীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায়।
বাংলাদেশই হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ায় একমাত্র ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র যার জন্ম হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে। এই নতুন জন্ম নেওয়া রাষ্ট্রটির জন্য নীতিমালা ও তার প্রয়োগ পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর যে রাষ্ট্রচিন্তা থেকে তার উৎস কী? এর দ্ব্যর্থহীন জবাব- ‘স্বদেশপ্রেম’।সেই স্বদেশপ্রেম থেকেই তার রাষ্ট্রচিন্তার উন্মেষ ও বিকাশ ঘটেছে। ১৯৭১ সালের ৫ এপ্রিল তারিখে মার্কিন পত্রিক নিউজ উইকের সংবাদ ভাষ্যকারের বয়ান— “মুজিব মৌলিক চিন্তার অধিকারী বলে ভান করেন না। তিনি একজন রাজনীতির কবি; প্রকৌশলী নন। শিল্পকৌশলের প্রতি উৎসাহের পরিবর্তে শিল্পকলার প্রতি ঝোঁক বাঙালিদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক। কাজেই সব শ্রেণি ও আদর্শের অনুসারীদের একতাবদ্ধ করার জন্য তার ‘স্টাইল’ (পদ্ধতি) সবচেয়ে বেশি উপযোগী ছিল।” ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা নভেম্বর তারিখে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে সংবিধান গৃহীত হয় এবং একই বছরের ১৬ই ডিসেম্বর অর্থাৎ বাংলাদেশের বিজয় দিবসের প্রথম বার্ষিকী থেকে এটি কার্যকর হয়।
– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –- চোখের নিচের ত্বকে সব প্রসাধনী নয়
- শান্তর মান-ইজ্জত বাঁচালেন উগান্ডার অধিনায়ক
- হজ কাদের ওপর ফরজ, কাদের ওপর নয়?
- গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাইডেন
- টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বত্ব রক্ষায় ভারতে আইনজীবী নিয়োগ
- ১৫০ উপজেলায় ৩ দিন মোটরসাইকেল চলাচল নিষেধ
- দেশি-বিদেশি টিভি চ্যানেলের অবৈধ প্রদর্শন বন্ধে কার্যক্রম শুরু
- জলবায়ুর অভিঘাতের জন্য বাংলাদেশ দায়ী নয়: পরিবেশমন্ত্রী
- ইয়াবা সেবন করে শিশু-বৃদ্ধদের পেটাতেন মিল্টন: ডিবি হারুন
- দেশে বেকার ২৫ লাখ ৯০ হাজার, পুরুষ বেকার বেশি
- চাকরিতে বয়সসীমা বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত নেই: জনপ্রশাসনমন্ত্রী
- টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু আজ
- দুপুরের মধ্যে ১৫ জেলায় ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস
- উপজেলা নির্বাচনে ৪১৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
- সৌন্দর্য ধরে রাখতে নজর দিন সঠিক খাদ্যাভ্যাসে
- ১৪৯১ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধারসহ ৩ মাদককারবারী গ্রেফতার
- স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির দাবি বেরোবি ছাত্রলীগের
- রাফাহতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ২১ ফিলিস্তিনি নিহত
- দ্রব্যমূল্য নিয়ে চাপের মধ্যে আছি: ওবায়দুল কাদের
- প্রয়োজনে শুক্রবারও ক্লাস: শিক্ষামন্ত্রী
- জনগণের কথা চিন্তা করে আইন তৈরি করতে হবে: আইনমন্ত্রী
- তৃণমূল মানুষের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার
- হাওরের ৯৭ শতাংশ বোরো ধান কাটা শেষ
- ৩০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার আবাসন সুবিধা পাবে
- চাকরিতে প্রবেশে বয়সের বিষয়ে যা জানালেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
- ‘অভিবাসন নিয়ে অপতথ্য রোধে কাজ করবে বাংলাদেশ-ইতালি’
- ঢাকায় আসছেন ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব
- অবৈধ জাল ব্যবহার বন্ধ করা হবে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
- ১৪ দিনে হিটস্ট্রোকে ১৫ মৃত্যু: স্বাস্থ্য অধিদফতর
- উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে তীব্র ঝড়
- অবশেষে আজ তাপমাত্রা কমার পূর্বাভাস
- শেষ বলে ১ রানের নাটকীয় জয় পেল কলকাতা
- কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ
- পরিবেশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিষয় পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে
- আন্তর্জাতিক চাপে মুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশি নাবিকরা: নৌপ্রতিমন্ত্রী
- হজ পালনে অনুমতি বাধ্যতামূলক করল সৌদি
- যে কারণে বিশ্বকাপ দল ঘোষণা করেনি বাংলাদেশ
- নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্তক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের
- শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা, তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে
- সত্যি কী আমিরাতের গোল্ডেন ভিসা পাচ্ছেন শাকিব খান?
- লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা
- ২ মে থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা, হতে পারে কালবৈশাখীও
- ‘সব প্রাইভেট হাসপাতালের রোগনির্ণয় ফি নির্ধারণ করা হবে’
- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ হোক মানুষের কল্যাণে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- জনপ্রিয় অভিনেতা রুমি মারা গেছেন
- ত্বকের দাগ দূর করবেন যেভাবে
- গরমকালে বাড়ি ঠান্ডা রাখার চীনা প্রাচীন কৌশল
- কোরবানির নিয়তের পর পশু বিক্রি করার বিধান
- পরচুলা তৈরি করে লেখাপড়ার খরচ চালাচ্ছে তারা
- শাকিবের তৃতীয় বিয়ে নিয়ে যা বললেন অপু বিশ্বাস