• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আত্মরক্ষার্থে কারাতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে নারী শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ৮ মার্চ ২০২২  

দিনাজপুরে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক  নারী দিবসে কারাতে প্রশিক্ষণই হোক নারী নির্যাতন প্রতিরোধের হাতিয়ার এমনটাই মনে করছে কারাতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে আসা জুবলি উচ্চ বিদ্যালয়ের একদল নারী শিক্ষার্থীরা। কারাতে প্রশিক্ষকের চিচ, দুই, আউ ইত্যাদি সংকেতের সঙ্গে সঙ্গেই হাত পা  দিয়ে প্রতিপক্ষ আঘাত করার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাচ্ছে। 

কারাতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে আসা নারী শিক্ষার্থীরা এখন বলতে পারেন ‘আমরা নারী আমরাও পারি’। এই কথাটা এখন মনে প্রাণে বিশ্বাস করে দিনাজপুরের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে স্কুলগামী ছাত্রীদেরকে নিয়ে কারাতে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।

নারীরা নিজের আত্মরক্ষার্থে কারাতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে নিজেকে নিরাপদ রাখার পাশাপাশি বখাটে ইভটিজারদের বাজে কথা বললে শায়েস্তা করতেই এই কারাতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে দিনাজপুর সদরের জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের অর্ধশতাতিক নারী শিক্ষার্থীরা । 

নারী শিক্ষার্থীদের আগ্রহ আর কারাতে প্রশিক্ষকদের আন্তরিকতা নারী শিক্ষার্থীরা কারাতে প্রশিক্ষণকে নিজেদের চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করছে ।  কঠোর পরিশ্রম করেই নারী নির্যাতন-নিপীড়ন প্রতিরোধ করতে এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করছে দিনাজপুরের জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সহযোগিতায় দুইজন কারাতে কোচের মাধ্যমে এই কারাতে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে । পুরুষ শাসিত সমাজের একজন নারীকে বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন নিপীড়ন সহ্য করতে হয়। নারী বিদ্বেষী অন্যায়ের প্রতিবাদ করতেই এই কারাতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন নারী শিক্ষার্থীরা । 

কারাতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে আসা নারী শিক্ষার্থী খুশি খাতুন বলেন, অনেকে মনে করেন নারীরা দুর্বল তাই তাদের আঘাত করে। কারাতে প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন আর তেমন দূর্বল মনে হয়। আমাকে দুইটা আঘাত করলে আমিও পাল্টা আঘাত করতে পারব। তাই বলি আমরা নারী আমরাও পারি।  

শিক্ষার্থী লাবিবা বলেন, কারাতে প্রশিক্ষণ শুধু নিজেকে আত্মরক্ষার্থেই নয় । এটি একটি আর্ন্তজাতিক মানের স্পোর্টস। তাই একদিন এই কারাতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে নিজের আত্মরক্ষার্থে পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের সুনাম অর্জনের চেষ্টা করব।

পায়েল বলেন, নারী শিক্ষার্থীরা কারাতের বিভিন্ন কলাকৌশল অনেকটাই রপ্ত করতে পেরেছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার মধ্য দিয়ে সমাজে একদিন বখাটে আর ইভটিজারদেরকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। 

কারাতে প্রশিক্ষক রাজু আহমেদ বলেন, কারাতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করলে মন মানসিকতা বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি নারী শিক্ষার্থীরা অনেকটা আত্মরক্ষার বিভিন্ন কলা কৌশল শিখানো হয়। এখানকার ছাত্রীরা কারাতে শিখতে অনেকটা আগ্রহী। তাই তারা অতি তাড়াতাড়ি রপ্ত করতে পারছে এই কারাতে । 

হেড কোচ এ, কে ,এম  মাসুদুর রহমান মাসুদ বলেন, কারাতে শিখলে অন্যায়ের প্রতিবাদ করার সাহস সঞ্চয় করা যায়। এখন ছেলেদের তুলনায় অনেক বেশি আগ্রহী মেয়েরা। আমাদের সমাজে যে ভাবে নারী নির্যাতনের সংখ্যা বেড়েছে। তার প্রতিবাদ করার একমাত্র হাতিয়ার হিসাবে কারাতের বিকল্ব নেই । 

জুবলি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন বলেন, ছাত্রীদের আগ্রহ আর তাদের অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে কারাতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আমাদের ছাত্রীরা দেশের অগ্রগতি উন্নয়নের জন্য নানামুখি কাজে অংশগ্রহণ করবে এমন প্রত্যাশা করি। 

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –