• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

পঞ্চগড় জেলার ব্যবসা বাণিজ্য

প্রকাশিত: ২৯ নভেম্বর ২০১৮  

ব্যবসা বাণিজ্য

 

পঞ্চগড় জেলা বাংলাদেশের সর্বউত্তরের প্রান্তে জেলা হলেও এ জেলায় প্রথম বৃহৎ শিল্পের প্রসার ঘটে ১৯৬৯ সালে পঞ্চগড় সুগার মিলস লি: প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। পরবর্তীতে এ জেলায় কৃষি ভিত্তিক অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে। কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত তথ্য নিম্নরূপ :

 

পঞ্চগড় চিনিকল লিঃ:

 

পঞ্চগড় সুগার মিলস লি: ১৯৬৯ সালে পঞ্চগড় সদর উপজেলায় ১৯৮.৪৬ একর জমির উপর স্থাপিত হয়। মিলটি ১৯৬৯-৭০ সাল থেকে চিনি উতপাদন শুরু করে। মিলটির বাষির্ক চিনি উৎপাদন ক্ষমতা ১০,১৬০ মেঃটন এবং দৈনিক আখ মাড়াই ক্ষমতা ১,০১৬ মেঃটন। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের অধীন এই মিলটি ১০০% মালিকানা সরকারের। বর্তমানে মিলটিতে ৮১০ জন জনবল কর্মরত আছে। ২০০৭-০৮ অর্থ বছরে মিলটিতে ৮,১৫৮.৬০ মেঃটন এবং ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে ৪,১৫৮.৮৫ মেৰটন চিনিউৎপাদিত হয়।

 

জেমকন লিমিটেড :

 

 

পঞ্চগড় সদর উপজেলাধীন ধাক্কামারা নামক স্থানে জেমকন লিঃ এবং ভজনপুরে ক্যাসেল কনস্ট্রাকশন লিঃ এর ২ টি বৈদু্তিক খুঁটি নির্মাণ কারখানা রয়েছে। জেমকন লিঃ ১৯৯৩ সালে এ জেলায় সর্বপ্রথথম বৈদু্তিক খুঁটি নির্মাণ শুরু করে। কারখানাটি পঞ্চগড় সদর উপজেলাধীন ধাক্কামারা নামক স্থানে ৩৫.০০ একর জমির উপর স্থাপিত। পঞ্চগড়ে পাথর প্রাপ্তি সহজলভ্যতার কারণে এই অঞ্চলে বৈদু্তিক খুঁটি নির্মাণের কাচামাল স্বল্পমূল্যে সংগ্রহ করা যায়। বর্তমানে এই কারাখানাটিতে প্রতক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১,৫০০ জন লোক কর্মরত আছে। জেকমন এর ওয়েবসাইটের এই লিংকে ক্লিক করুন

 

জেমজুট লিমিটেড :

 

জেমজুট লিঃ ২০০৩ সালে পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলাধীন ময়দানদীঘি ইউনিয়নে মনিরাম জোত এলাকায় প্রায় ৬০ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়। কর্মসঙস্থানের মাধ্যমেস্থানীয় জনগনের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন এবং টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে পরিবেশ বান্ধব পণ্য উৎপাদনই হচ্ছে জেমজুটের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। জেমজুটে চটের কাপড় চটের ব্যাগ, দড়ি, সুতা, গুনচট ব্যাগ, কেনভাস ইত্যদি পণ্য উৎপাদিত হয়ে থাকে। কোম্পানিটির প্রধান অফিস ঢাকায় অবস্থিত। কোম্পানীর ওয়েব লিংক এ ক্লিক করুন 

২১ জানুয়ারী, ২০০৬ তারিখে কোম্পানিটি ISO 9001:2000 সনদ লাভ করে।

 

মার্শাল ডিস্টিলারী :

 

মার্শাল ডিস্টিলারী ১৯৯৪ সালে পঞ্চগড় সদর জেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নে স্থাপিত হয়। চিটাগুড় থেকে রেকটিফাইড স্পিরিট ও ডিনেচার্ড স্পিরিট এ কারখানায় উৰপাদিত হয়। স্পিরিট উৎপাদনের কাচামাল সংগৃহীত হয় দেশীয় চিনিকলসমূহ হতে। এ কারখানায় বর্তমানে ৯৯ জন কর্মকর্তা কর্মচারী কর্মরত আছেন। মার্শাল ডিস্টিলারীর প্রধান কার্যালয় ৬১ কাকরাইল, রমনা, ঢাকায়অবস্থিত।

 

চা শিল্প :

 

জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে চা বোর্ডের একটিসমীক্ষা দল চা চাষের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য ১৯৯৯ সালের অক্টোবর মাসেপঞ্চগড় জেলায় আসেন এবং মাটি পরীক্ষা করতঃ অন্যান্য তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহকরেন। তাঁরা জানান পঞ্চগড় জেলায় প্রায় ৪০,০০০ একর জমি চা চাষের উপযোগীআছে। সে মোতাবেক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ইসি ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকেরযৌথ অর্থায়নে ৩.৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭৪১ একর জমিতে চা চাষের লক্ষ্যমাত্রানিয়ে জানুয়ারি/২০০১-ডিসেম্বর/২০০৬ মেয়াদে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েরঅনুমোদনক্রমে বাংলাদেশ চা বোর্ড দেশের উত্তরাঞ্চলে ’’ক্ষুদ্রায়তন চা চাষপ্রকল্প’’ শিরোনামে ১টি প্রকল্প গ্রহণ করে। পঞ্চগড় জেলার চা চাষ একটুভিন্ন প্রকৃতির অর্থাৎ শ্রীমঙ্গল, সিলেট ও চট্টগ্রামের মত খাস জমি পঞ্চগড়েনা থাকায় সমতল ভূমিতে অন্যান্য ফসলের মত যার যতটুকু চা চাষের জমি আছে, সেটুকু জমিতে চা চাষ করবে এবং প্রতি সপ্তাহে সবুজ চা পাতা ফ্যাক্টরীতেবিক্রী করবে। ২০০৬ সালের শেষে পঞ্চগড় জেলায় মোট চা আবাদ হয় ১,৬৮৯.৪৮ একরজমিতে।এরইধারাবাহিকতায় পঞ্চগড়ের সাথে ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী ও লালমনিরহাটজেলাকে যুক্ত করে ১০.৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ডিসেম্বর ২০০৯ পর্যন্ত প্রকল্পটিবর্ধিত করে। পরবর্তীতে ২য় পর্যায়ে প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৪ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। পঞ্চগড়জেলায় যে সব জমিতে চা আবাদ হচ্ছে সেগুলোর অধিকাংশই পূর্বে অনাবাদি ছিল।পঞ্চগড়ে চা চাষের ফলে ৩,০০০-৪,০০০ জন লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। বর্তমানে পঞ্চগড় জেলায় মোট চা চাষের আওতাধীন জমির পরিমাণ ২২৫৫.৫৪ একর। ২০০৯ সালে পঞ্চগড় জেলায় মোট ৬৫৬০২৪ কেজি মেড টি উৎপাদিত হয়েছে। চা চাষে উৎসাহিত করার জন্য ক্ষুদ্র চাষীদের (০-৫ একর) চারা প্রতি ১ টাকা হিসেবে ২০০৯ সাল পর্যন্ত মোট ৯,৪৯,০০০/- টাকা ভর্তুকি প্রদান করা হয়েছে। চা চাষ সম্প্রসারণের জন্য ২০০৯ সাল পর্যন্ত পঞ্চগড় চা বোর্ডের সুপারিশক্রমে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক চা চাষীদের মাঝে ১ কোটি ২৫ লক্ষ ৫ হাজার টাকা ঋণ বিতরণ করেছে।

 

পঞ্চগড় জেলায় ৩ ক্যাটাগরীর চা চাষী আছেঃ-
ক) স্মল গ্রোয়ার= ০-৫ একর পর্যন্ত
খ) স্মল হোল্ডার= ৫-২০ একর পর্যন্ত
গ) টি এষ্টেট = ২০ একরের উর্দ্ধে।

 

পঞ্চগড়ে এ যাবৎ রেজিষ্ট্রেশন দেয়া হয়েছেঃ-
ক) স্মল গ্রোয়ার= ২৫৭ জন
খ) স্মল হোল্ডার= ১৫ জন
গ) টি এষ্টেট   = ০৮টি।

 

বর্তমানে চা বাগানের সংখ্যা :
ক) স্মল গ্রোয়ার = ১৭০ টি
খ) স্মল হোল্ডার = ১৯ টি
গ) টি এষ্টেট = ১৯ টি।

মোট = ২০০টি

 

চা চাষের আওতাধীন জমির পরিমাণ-

ক) স্মল গ্রোয়ার= ৩৭২.২৬ একর
খ) স্মল হোল্ডার= ১০৮.৭৫ একর
গ) টি এষ্টেট = ১৭৭৪.৫০ একর

মোট = ২২৫৫.৪৫ একর

 

 

চা প্রসেসি ইউনিটের সংখ্যা ০৩ টি।

 

ক) কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেটের অর্গানিক কারখানা, তেঁতুলিয়া

খ) তেঁতুলিয়া টি কোম্পানী লি:

গ) করতোয়া চা বাগানের কারখানা

 

 

পঞ্চগড় জেলায়উল্লেখযোগ্য কয়েকটি চা বাগানের নাম :

· আগা টি এস্টেট, তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড়।

· করতোয়া চা বাগান, জগদল সাতমেরা, পঞ্চগড়।

· কাজী এন্ড কাজী চা বাগান, প্রযত্নে খালেক কোচ কাউন্টার, পঞ্চগড়।

· গ্রীন কেয়ার চা বাগান, বুড়াবুড়ি, পঞ্চগড়।

· ডাহুক চা বাগান, বুড়াবুড়ি, পঞ্চগড়।

· ময়নাগুড়ি চা বাগান, তেঁতুলিয়া রোড, পঞ্চগড়।

· পঞ্চগড় চা কোম্পানী, বুড়াবুড়ি, পঞ্চগড়।

· কাজী ফার্মস লিঃ বুড়াবুড়ি, তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড়।

· স্যালিলেন টি এস্টেট, প্রযত্নে খালেক কোচ কাউন্টার, পঞ্চগড়।

· এম এম টি এস্টেট, হাড়িভাসা, পঞ্চগড় সদর, পঞ্চগড়।

· আর ডি আর এস চা বাগান, জগদল, পঞ্চগড়।

· গ্রীন গোল্ড চা বাগান লিঃ দশমাইল, সাতমেরা, পঞ্চগড়।

· হক টি এস্টেট, লোহা কাচি, তেতুলিয়া, পঞ্চগড়।

 নাহিদটি এস্টেট, ভদ্রেশ্বর, ভজনপুর, তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড়।

· আরিব টি এস্টেট, জিয়াবাড়ী, পঞ্চগড় সদর, পঞ্চগড়।

· জেসমিন টি এস্টেট, কালান্দিগঞ্জ মাঝি পাড়া, তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড়।

· কুসুম টি এস্টেট, শালবাহান রোড, মাঝিপাড়া, তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড়।

· জেড এন্ড জেল টি এস্টেট, অমরখানা, পঞ্চগড় সদর, পঞ্চগড়।

এ ছাড়াও স্মল হোল্ডিং এবং স্মল গোয়ার্স এর আওতায় বিভিন্ন ব্যক্তি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে শুরু হয়েছে ব্যাপক চা চাষ।

 

ছবি

panchagarhsugarmills

 

সংযুক্তি

tea2

 

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –