• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ডাকসু নির্বাচন

সাংগঠনিক দুর্বলতায় ভোটে পিছিয়ে ছাত্রদল

প্রকাশিত: ১০ মার্চ ২০১৯  

দেশের দ্বিতীয় সংসদ খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভোট রাত পোহালেই । দীর্ঘ ২৮ বছর পর হচ্ছে ঢাবির ছাত্র নেতৃত্ব তৈরির এ নির্বাচন।  এতে ছাত্রলীগের পাশাপাশি অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলসহ আরো বেশ কয়েকটি সংগঠন।

ক্ষমতাসীনদের সংগঠন ছাত্রলীগ প্রচারণার লড়াইয়ে এগিয়ে আছে। কমবেশি লড়াইয়ে আছে ছাত্রদলও। তবে হলগুলোতে এখন পর্যন্ত তেমন জমাতে পারেনি বিএনপির এই ছাত্র সংগঠন। এমনকি অনেক হলে পূর্ণাঙ্গ প্যানেলও দেয়া সম্ভব হয়নি তাদের। 

শুধু তাই নয়, একটি হলে ভিপি প্রার্থী ছাড়া আর কোনো ছাত্রী হলে ছাত্রদলের প্যানেল নেই। অন্যদিকে নেই কোনো উল্লেখযোগ্য কমিটিও। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকে মনে করছেন, সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণেই নির্বাচনে পিছিয়ে আছে বিএনপির এই ছাত্র সংগঠন।

জানা গেছে, ডাকসুতে ২৫টি পদ থাকলেও ভিপি-জিএসসহ ২১ প্রার্থী দিয়েছে ছাত্রদল। আর এসব কারণেই ছাত্রলীগের অনেকেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। কেননা ডাকসু ও সব হলে পূর্ণাঙ্গ কমিটির পাশাপাশি নির্বাচনে সর্বাত্মক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ছাত্রলীগ। 

ছাত্রদলের একটি সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান না থাকা এবং হলগুলো ছাত্রলীগের দখলে থাকায় ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগের মতো প্রস্তুতি নিতে ব্যর্থ হয়েছে ছাত্রদল। এদিকে সব পদে প্রার্থী দিতে না পারলেও পদ ভাগাভাগি নিয়ে ছাত্রদলে রয়েছে কোন্দল। এমনকি যারা প্রত্যাশিত পদ পাননি, তারা নির্বাচনে কাজ করছেন না বলে দাবি করেছেন অনেকেই।

ছাত্রদলের দাবি, ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিশাল ভূমিকা থাকে। তাই এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করে তুলতে বিশ্ববিদ্যালয় কতটুকু ভূমিকা রাখবে সেটাই দেখার বিষয়। কিন্তু এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগ বলছে, অন্যের ওপর দোষ চাপানোর সংস্কৃতি থেকে এখনো বেড়িয়ে আসতে পারেনি ছাত্রদল। 

ছাত্রদল সূত্রে জানা গেছে, ডাকসু নির্বাচন ঘিরে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা প্রচারণা ও কার্যক্রম চালালেও সবার মধ্যে ছিল আতঙ্ক। অনেকে আবার গোপনে প্রচার-প্রচারণা চালায়। কেননা তারা জনসম্মুখে আসতে নারাজ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ১০ বছর যাবত বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের কোনো কার্যক্রম নেই। তারপরও ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের ৪৭০ জন প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা ছিল। কিন্তু প্রশাসন আমাদের প্রার্থীদের ভর্তির সুযোগ না দিয়ে তড়িঘড়ি করে নির্বাচন দিয়েছে। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হলে ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল দেয়া হয়েছে। তবে ভয়-ভীতি দেখিয়ে অনেকের মনোনয়ন জমা দিতে দেয়া হয়নি। 

এদিকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় সাংগঠনিক দুর্বলতাকে দুষছেন না ছাত্রদলের এই ভিপি প্রার্থী। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন বছর আগে ছাত্রদলের কমিটি দেয়া হয়েছে। এতে ৪৭০ জন ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা রয়েছে। তাদের বয়স ৩০ বছরের নিচে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় তাদের কোনো সুযোগ দেয়নি। উল্টো হাইকোর্টের মাধ্যমে তড়িঘড়ি করে ডাকসু নির্বাচন দিয়েছে। অন্যদিকে যারা বৈধ হওয়ার যোগ্যতা রাখেন, তাদের অনেকই মনোনয়ন জমা দিতে পারেনি।

এদিকে ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের সমন্বয়ক ও বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দায়ী করে করেছেন। তিনি বলেন, সবার জন্য গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়নি। তবুও সাধারণ ছাত্রদের দাবি ও অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আমরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে বেশ কিছু দাবি জানিয়েছি। যার মধ্যে তিন মাস নির্বাচন পেছানোর দাবি ছিল। নির্বাচন যদি তিন মাস পেছানো যেত, তাহলে এ ধরনের জটিলতা হয়তো হতো না।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –