• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

বৃষ্টিতে দিনাজপুরের পাট চাষিদের মুখে হাসি

প্রকাশিত: ৫ আগস্ট ২০২২  

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পাট চাষ হয়েছে। কিন্তু পানির অভাবে জাগ দিতে না পারায় বেশির ভাগ পাট গাছ শুকিয়ে নষ্ট হচ্ছিল কৃষকের জমিতেই।

অনেকে কৃত্রিম খাল তৈরি করে শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে সেচ দিয়ে পাট জাগ দিলেও অতিরিক্ত টাকা ব্যয়ে চিন্তিত ছিল। আশঙ্কা ছিল পাটের উৎপাদন খরচ তোলা নিয়ে। তবে গত সপ্তাহ ব্যাপী মাঝে মাঝে দিনে কিংবা রাতে হালকা ও ভারী অথবা টিপটপ বৃষ্টির ফলে খাল-বিল ও ক্ষেতে পানি জমেছে। এতে পাট জাগ দিতে পারায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে আর শ্রমিকদের বাড়ছে ব্যস্ততা।

শুক্রবার উপজেলার খামারপাড়া, ভাবকি ও গোয়ালডিহি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টি হওয়ায় অনেকে পাট কাটছে আবার কেউ পাট জমির কাছাকাছি খাল-বিল ও জমিতে জাগ দেওয়ার কাজ করছে। কেউ নিজেই কাঁধে করে পাট জলাশয়ে নিয়ে যাচ্ছে আবার অনেকে পাটের স্তুপ ভ্যানে সাজিয়ে দূরের জলাশয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর উপজেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা এক হাজার ২৭০ হেক্টর জমি হলেও তা বেড়ে এক হাজার ৮৬২ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে বেশি। তবে সময়মতো পাট জাগ দিতে না পারায় কাঙ্খিত উৎপাদন পাওয়া নিয়ে ছিল আশঙ্কা।

গোয়ালডিহি ইউনিয়নের চান্দেরদহ এলাকার পাটচাষি গোলাম রাব্বানী বলেন, বছরে ১ বিঘা জমি ২০ হাজার টাকা দিয়ে চুক্তি নিয়ে দেড় বিঘা জমিতে পাট চাষ করছি। গত ১৬ দিন আগে পাট কেটে পানির অভাবে জাগ দিতে না পারায় জমির পার্শ্বে স্তুপ করে রেখেছি। কিছুটা বৃষ্টি হওয়ায় তা জাগ দেওয়ার জন্য ভ্যানে করে পুকুরে নিয়ে যাচ্ছি। তবে পাট চাষের শুরুতে অধিক বৃষ্টি আর বর্তমানে অনাবৃষ্টির ফলে ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যদিও গত বছর বিঘা প্রতি ১২/১৩ মন করে পাট হয়েছিল এবছর ৭/৮ মন এর বেশি হবে না। এতে খরচ তোলারও সম্ভাবনা নেই। তারপর আবার চুক্তির টাকা পরিশোধ করার বিষয়টি তো আছেই।

কায়েমপুর গ্রামের কৃষক সামসুল আলম বলেন, এ বছর তিনি দুই বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করে ভালো ফলন পেয়েছেন। কিন্তু আশপাশের কোথাও জাগ দেওয়ার মতো পানি না থাকায় পাট কাটেননি। তাই বৃষ্টি হওয়ার পর বেশি করে শ্রমিক নিয়ে পাট কাটা ও জাগ দেওয়ার কাজ করছে। তবে আগের চেয়ে শ্রমিকের মজুরি খরচও অনেকটাই বেড়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি অফিসার বাসুদেব রায় বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোর তুলনায় চলতি মৌসুমে খানসামা উপজেলায় সর্বাধিক পাটের আবাদ হয়েছে। কিন্তু বর্ষার ভরা মৌসুমেও বৃষ্টি না থাকায় কৃষকেরা পাট জাগ দিতে সমস্যায় পড়েছিল। অনেক জমির পাট জমিতেই শুকিয়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তারপরও কয়েক দিন থেকে অনিয়মিত বৃষ্টি হলেও কৃষকেরা তাদের পাট জাগ দিচ্ছেন। এতে কৃষকেরা তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –